বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় শতাধিক গ্রামে ঈদ পালিত
https://parstoday.ir/bn/news/bangladesh-i107412-বাংলাদেশের_বিভিন্ন_জেলায়_শতাধিক_গ্রামে_ঈদ_পালিত
বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় শতাধিক গ্রামে আজ পালিত হয়েছে ঈদ-উল-ফিতর। বিভিন্ন পীরের অনুসারী এসব ধর্ম-প্রাণ মানুষ তাদের প্রথা অনুযায়ী সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোজা এবং ঈদ উৎসব পালন করে আসছেন।
(last modified 2025-10-11T13:22:26+00:00 )
মে ০২, ২০২২ ১৫:৩৯ Asia/Dhaka
  • বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় শতাধিক গ্রামে ঈদ পালিত

বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় শতাধিক গ্রামে আজ পালিত হয়েছে ঈদ-উল-ফিতর। বিভিন্ন পীরের অনুসারী এসব ধর্ম-প্রাণ মানুষ তাদের প্রথা অনুযায়ী সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোজা এবং ঈদ উৎসব পালন করে আসছেন।

চাঁদপুর

বিশ্বের যে কোনো দেশে চাঁদ দেখার উপর ভিত্তি করে সাদ্রা দরবার শরিফের অনুসারীরা গত ৯৩ বছর ধরেই প্রথম চাঁদ দেখার ভিত্তিতে রোজা পালন ও ঈদ উদযাপনের প্রথা অনুসরণ করে আসছেন। সাদ্রা হামিদিয়া ফাজিল মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ আল্লামা মোহাম্মদ ইসহাক ১৯২৮ সাল থেকে প্রথম চাঁদ দেখার ভিত্তিতে ইসলামের সব ধর্মীয় রীতিনীতি প্রচলন শুরু করেন। মাওলানা ইছহাকের মৃত্যুর পর থেকে তার ৬ ছেলে এ মতবাদের প্রচার চালিয়ে আসছেন।

সে অনুযায়ী, চাঁদপুররে ৪০ গ্রামের মুসল্লিগন  হাজীগঞ্জের সাদ্রা হামিদিয়া ফাজিল মাদ্রাসা মাঠে আজ সকাল সাড়ে ৯টায় ঈদের জামাতে  অংশ নেন। ঈদের জামাতে ইমামতি করেন সাদ্রা দরবারের পীর মাওলানা আরিফ বিল্লাহ চৌধুরী। 

এর আগে  গতকাল রবিবার (১ মে) সাদ্রা দরবার শরীফের অনুসারীদের একাংশ পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন। প্রথম চাঁদ দেখার ওপর ভিত্তি করে এবং ভোররাতে ঘোষণা দিয়ে রবিবার (১ মে) হাজীগঞ্জের সাদ্রা হামীদিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদারাসা মাঠে সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

গত কালের  ঈদের জামাতে ইমামতি করেন সাদ্রার মরহুম পীরের ছেলে মুফতি জাকারিয়া আল মাদানী। তিনি বলেন, শনিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে আফ্রিকার দেশ নাইজার, মালি ও এশিয়ার দেশ আফগানিস্তানে চাঁদ দেখার খবর পাই। এরপর তা যাচাই-বাছাই করে ভোররাতে আমরা ঈদ উদযাপনের ঘোষণা দিয়েছি ও ঈদ পালন করেছি।

জামালপুর

জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের সাথে মিল রেখে ১৩ গ্রামের প্রায় ৩ শতাধিক নারী-পুরুষ ঈদুল ফিতর নামাজ আদায় করেন। আজ সোমবার (২ মে) সকালে পৌরসভার বলার দিয়ার মধ্যপাড়া মাস্টার বাড়ি জামে মসজিদ মাঠে এ ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এসব গ্রামের অধিকাংশ মুসল্লি আগামীকাল ঈদ পালন করবেন।  

বলারদিয়ার জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আজিম উদ্দিন ঈদুর ফিতরের নামাজে ইমাম হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জানান, আমরা সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের সাথে মিল রেখে রমযানের রোজা শুরু এবং ঈদুল ফিতরের নামাজ ও ঈদ আনন্দ উদযাপন করে থাকি । মধ্যপ্রাচ্যের সাথে বাংলাদেশের সময়ের পার্থক্য মাত্র ৩ ঘণ্টা। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যের চন্দ্র উদয়ের পুরো একদিন পর বাংলাদেশে ঈদ পালন করা হয়, যা সঠিক নয়। তাই আমরা একদিন আগে রোজা শুরু করি করি এবং একদিন আগে ঈদ উদযাপন করে থাকি।  

বলারদিয়ার  ছাড়াও  মুলবাড়ী, সাতপোয়া, সাঞ্চারপাড়, পঞ্চপীর, পাখাডুবি, বনগ্রাম, বালিয়া, বাউসী, হোসনাবাদ, পাটাবুগা, পুঠিয়ারপাড় ও বগারপাড় গ্রামে আজ ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।  

দিনাজপুর

এ প্রথা অনুযায়ী, দিনাজপুর জেলার ৫ উপজেলায় প্রায় দেড় হাজার পরিবার আজ পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করছে। দিনাজপুরের সদর, চিরিরবন্দর, বিরল, কাহারোল, বিরামপুর উপজেলাসহ বেশ কিছু এলাকায় পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করছে এসব পরিবার। 
সোমবার সকাল সাড়ে ৮টায় দিনাজপুর শহরের পার্টি সেন্টার নামে একটি কমিউনিটি সেন্টারে নারী-পুরুষসহ ২শতাধিক মুসল্লি ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেন। জামাতে ইমামতি করেন মাওলানা মো. মোখলেছুর রহমান।

মৌলভীবাজার

একই ভাবে  আজ সোমবার (২ মে) সকাল ৭টায় মৌলভীবাজার শহরের টিবি হাসপাতাল রোডস্থ আহমেদ শাবিস্তা নামক একটি বাসায়  ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। ঈদের জামাতে ইমামতি করেন, আব্দুল মাওফিক চৌধুরী (পীর সাহেব উজান্ডি)।

বরিশাল

বরিশাল মহানগরসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় প্রায় ৫ হাজার পরিবার সোমবার ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন। জেলার অর্ধশতাধিক মসজিদে ঈদুল ফিতরের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সবগুলো মসজিদে সোমবার সকাল ৯টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

আজকে  ঈদ উদযাপনকারীরা  মূলতঃ  চট্টগ্রামের চন্দনাইশের জাহাগীরিয়া শাহ্সুফি মমতাজিয়া দরবার শরীফের অনুসারী। এরা পৃথিবীর কোনো প্রান্তে চাঁদ দেখা গেলে তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে রোজা, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহাসহ যাবতীয় ধর্মীয় আচার পালন করেন। নগরীর ২২ নম্বর ওয়ার্ড ও দপদপিয়া এলাকারও দুই শতাধিক পরিবার সোমবার ঈদের নামাজ পড়ে ঈদ উদযাপন করছেন।

বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার চন্দনাইশ দরবার শরীফের অনুশারি খানপুরা গ্রামের আব্দুর রশীদ শিকদার স্নৃতি জামে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, বাবুগঞ্জের খানপুরা, কেদারপুর, মাধবপাশাসহ ৫-৬টি গ্রামের এক হাজারের বেশি পরিবারে সোমবার ঈদ উদযাপিত হচ্ছে। খানপুরা,কেদারপুর ও মাধবপাশায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। বরিশালের মুলাদী,হিজলা, মেহেন্দীগন্জ উপজেলায় এবং সদর উপজেলার চন্দ্রমোহন,পতাং, লাহারহাট গ্রামের চন্দনাইশ দরবারের প্রায় ২ হাজার অনুসারী রয়েছেন। তারাও আজ ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন।

লক্ষীপুর 

লক্ষ্মীপুরে ১১টি গ্রামে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়েছে আজ সোমবার। এসব গ্রামের মুসল্লিরা গত ৪৩ বছর যাবত সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে ঈদ উদযাপন করেন ।

ভোলা

ভোলার ৫ উপজেলার ১৪ টি গ্রামের প্রায় ৩ হাজার পরিবার একদিন আগে ঈদ উদযাপন করছে।  সোমবার (২ মে) সকাল সাড়ে ৮ টায় বোরহানউদ্দিন উপজেলা টবগী গ্রামে খলিফা মজনু মিয়ার নিজ বাড়ির আঙিনায় ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

শরিয়তপুর

সুরেশ্বর পীরের অনুসারীরা শরীয়তপুর জেলার ৪ উপজেলার ১৫ টি গ্রামে আজ সোমবার ঈদুল ফিতর উদযাপন করছে। সুরেশ্বর পীরের দরবার শরীফ সূত্র জানায়, সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে প্রায় ১ শ' বছরেরও বেশি সময় ধরে সুরেশ্বর পীরের সকল ভক্ত ও তাদের মুরিদানেরা একই নিয়মে ঈদ উৎসব উদযাপন করে আসছেন। আজ সকাল সাড়ে ৯ টায় সুরেশ্বর দরবার শরীফে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

সুরেশ্বর দরবার শরীফের গদিনীশীন মুত্তাওয়ালী সৈয়দ কামাল নুরী বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ আমরা সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে ঈদের উৎসব উদযাপন করে আসছি। এই ধারাবাহিকতায় শরীয়তপুর জেলার ১৫টি গ্রামের অন্তত ১০ হাজার মুরিদ আমাদের সাথে ঈদুল ফিতর উদযাপন করছে। #

পার্সটুডে/ আব্দুর রহমান খান/এমবিএ/২

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।