ডাকসুর বিবৃতি: গুম-খুনে জড়িতরা যেন ‘সেফ এক্সিট’ না পায়
https://parstoday.ir/bn/news/event-i152876-ডাকসুর_বিবৃতি_গুম_খুনে_জড়িতরা_যেন_সেফ_এক্সিট’_না_পায়
বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ আমলে গুম-খুনে যারা জড়িত ছিলেন, তারা যেন বিচার এড়াতে কোনোভাবে দেশ ছাড়ার সুযোগ না পান, তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)।
(last modified 2025-11-11T14:44:42+00:00 )
অক্টোবর ১১, ২০২৫ ২০:০৪ Asia/Dhaka
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)
    ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)

বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ আমলে গুম-খুনে যারা জড়িত ছিলেন, তারা যেন বিচার এড়াতে কোনোভাবে দেশ ছাড়ার সুযোগ না পান, তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)।

গুমে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর কারও কারও দেশ ছাড়ার গুঞ্জনের প্রেক্ষাপটে  আজ (শনিবার) এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানানো হয়। সেই সঙ্গে গুম–খুন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের নির্দেশদাতা হিসেবে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার প্রশাসনের সব সদস্যের দ্রুত বিচার নিশ্চিতের দাবিও জানানো হয়।

আওয়ামী লীগ আমলে গুমের অভিযোগ আমলে নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গত মঙ্গলবার শেখ হাসিনাসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন। যাঁদের বিরুদ্ধ পরোয়ানা জারি হয়েছে, তাঁদের মধ্যে সাবেক সেনা কর্মকর্তার পাশাপাশি বর্তমান সেনা কর্মকর্তাও রয়েছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, সম্প্রতি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং ডিজিএফআইয়ের সাবেক প্রধানসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। এই পদক্ষেপ গুম ও রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের দীর্ঘ দিনের বেদনা-বিক্ষোভে কিছুটা আশার আলো জাগিয়েছে। কিন্তু এটি যথেষ্ট নয়।

গুম–খুনে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘চিহ্নিত অপরাধীদের ‘সেফ এক্সিট’ বা দায়মুক্তি দেওয়ার যেকোনো ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজ সোচ্চার থাকবে।

গুম কমিশনের তদন্তকে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসারে পরিচালনার মাধ্যমে ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর ন্যায়বিচার পাওয়া নিশ্চিতের আহ্বান জানান ডাকসু নেতারা।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে অন্ধকার সময় ছিল বিগত আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শাসনামল। সেই সময়ে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সংঘটিত গুম, খুন, নির্যাতন, মিথ্যা মামলা ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এক ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করেছিল। গুম কমিশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী ইতিমধ্যেই ১৮০০-এর অধিক গুমের অভিযোগ জমা পড়েছে। যার শিকার হয়েছেন সাধারণ নাগরিক, শিক্ষার্থী, নারী, শ্রমজীবী মানুষ থেকে শুরু করে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা–কর্মীরা। এমনকি শিশুরাও এই নৃশংসতার হাত থেকে রেহাই পায়নি।

দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অসংখ্য শিক্ষার্থীরও গুম–খুনের শিকার হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে ডাকসু নেতারা বলেন, তাঁদের অনেককে রাজনৈতিক ভিন্নমতের কারণে আটক, নির্যাতন ও গুম করা হয়েছে। এখনো অনেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রনেতার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। তাঁদের ভাগ্যে কী ঘটেছে, তা–ও জানা যায়নি।

বিবৃতিতে বলা হয়, এই গুম-খুন ও মানবতাবিরোধী অপরাধ কেবল ‘স্বৈরাচার’ শেখ হাসিনা ও তাঁর রাজনৈতিক মহলই দায়ী নয়। বরং প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই), র‍্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক সংস্থা ও সংস্থাগুলোর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলেন।

'দেশে সত্যিকার ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা না হলে সেনাবাহিনী, র‍্যাব, পুলিশসহ রাষ্ট্রের কোনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জনগণের আস্থা ফিরে পাবে না। অপরাধীদের বিচার সেনাবাহিনী, র‍্যাব, পুলিশসহ সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মর্যাদা ক্ষুণ্ন করবে না বরং তা তাকে আরও বিশ্বাসযোগ্য ও গণমুখী প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করবে,’ বলা হয় বিবৃতিতে।

গুম কমিশনের প্রতিবেদন উদ্ধৃত করে ডাকসু নেতারা আরও বলেন, এতে উদ্বেগজনকভাবে উঠে এসেছে যে গুম-খুন ও মানবতাবিরোধী অপরাধে একটি পার্শ্ববর্তী দেশের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সম্পৃক্ততা ছিল। এই বিষয়টি বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি এক গভীর হুমকি।#

পার্সটুডে/জিএআর/১১