হজ যাত্রীদের হয়রানি কমাতে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার
হজে'র সময় সৌদি আইন মেনে চলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
-
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ (শুক্রবার) সকালে রাজধানীর আশেকোনায় হজক্যাম্পে চলতি বছরের হজ কার্যক্রম উদ্বোধন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে হজ কার্যক্রম শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী হজ যাত্রীদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা দেশের জন্য, মানুষের জন্য দোয়া করবেন। হজে গিয়ে সৌদি আরবের নিয়ম ও আইন মেনে চলবেন। নিজের সুস্থতা নিশ্চিত করে যাবতীয় কার্যক্রম করবেন। ই-হজ ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে, এতে করে হাজিদের কষ্ট লাঘব হয়েছে। সবাই যেন সুষ্ঠুভাবে হজ করে আসতে পারেন এই প্রত্যাশা করি।
হজ ক্যাম্পে অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ধর্ম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, ধর্ম বিষয়ক সচিব কাজী এনামুল হাসান, বিমান সচিব মোকাম্মেল হোসেন, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান, হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম প্রমুখ।
চলতি মৌসুমে বাংলাদেশ থেকে হজযাত্রী পরিবহনের জন্য ৩১ মে হজ ফ্লাইট শুরু করার কথা ছিল। তবে সৌদি আরবের ইমিগ্রেশন টিম ঢাকায় এসে পৌঁছাতে দেরি হওয়ায় পিছিয়ে ৫ জুন নির্ধারণ করা হয়। রুট টু মক্কা ইনিশিয়েটিভের আওতায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সৌদি আরবগামী শতভাগ হজযাত্রীর সৌদি আরবের ইমগ্রেশন ঢাকায় সম্পন্ন হবে। এজন্য সৌদি আরবের ইমিগ্রেশনের একটি দল ঢাকায় অবস্থান করছে।
বাংলাদেশে থেকে এবার হজে যেতে ১২৮টি ফ্লাইট পরিচালিত হবে। এবার সৌদি আরবের সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন ছাড়াও দেশটির আরেকটি এয়ারলাইন ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্স হজযাত্রী পরিবহন করবে। বাংলাদেশ থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন ফ্লাইট পরিচালনা করবে। বিমান ৬৫টি, সাউদিয়া ৫১টি, ফ্লাইনাস ১২টি ফ্লাইটে হজ যাত্রী নিয়ে যাবে। ঢাকা থেকে শেষ হজ ফ্লাইট ছেড়ে যাবে ৪ জুলাই।
এবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স নিজস্ব উড়োজাহাজ দিয়ে হজ ফ্লাইট পরিচালনা করবে। যাওয়া-আসা মিলিয়ে ৬৫টি করে মোট ১৩০টি ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে।
উল্লেখ্য, করোনা মহামারির কারণে বিগত দু’ বছর বাংলাদেশে থেকে কেউ হজে অংশ নিতে পারেননি। এবার হজে সারা বিশ্বের ১০ লাখ মুসল্লি অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৮ জুলাই (৯ জিলহজ) সৌদি আরবে পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে।
এ বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪ হাজার জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫৩ হাজার ৫৮৫ জনসহ সর্বমোট ৫৭ হাজার ৫৮৫ জন হজযাত্রী পবিত্র হজ পালনের জন্য সৌদি আরব গমনের সুযোগ পাচ্ছেন।
এবার হজের ব্যয়ও বেড়েছে বিগত বছরের চেয়ে অনেক বেশি। এ বছর সরকারিভাবে দুটি হজ প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়। সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাওয়ার সর্বনিম্ন প্যাকেজ ৪ লাখ ৬২ হাজার ১৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। অন্য প্যাকেজে সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যেতে ৫ লাখ ২৭ হাজার ৩৪০ টাকা খরচ হবে।
বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের জন্য সাধারণ প্যাকেজ মূল্য ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৭৪৪ টাকা নির্ধারণ করে হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)। পরে আবারও হজের উভয় প্যাকেজের জন্য ব্যয় ৫৯ হাজার টাকা করে বাড়ানো হয়।
সরকারি ব্যবস্থাপনার প্যাকেজ-১ এর হজযাত্রীরা পবিত্র মসজিদুল হারাম চত্বরের সীমানা থেকে সর্বোচ্চ ১ হাজার মিটারের মধ্যের হোটেলে এবং প্যাকেজ-২ এর হজযাত্রীরা সর্বোচ্চ ১ হাজার ৫০০ মিটারের মধ্যে কোনও হোটেলে অবস্থান করবেন।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/গাজী আবদুর রশীদ/৩