ফেনীতে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণে আওয়ামী লীগের বাধার অভিযোগ বিএনপির
(last modified Sat, 02 Jul 2022 14:08:30 GMT )
জুলাই ০২, ২০২২ ২০:০৮ Asia/Dhaka
  • রাস্তায় ব্যারিকেড বসায় যুবলীগ ও ছাত্রলীগ
    রাস্তায় ব্যারিকেড বসায় যুবলীগ ও ছাত্রলীগ

বাংলাদেশের ফেনীতে ফুলগাজী উপজেলার দৌলতপুর গ্রামে বন্যার্তদের মাঝে দলীয় উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচিতে বাধা দেবার অভিযোগ করেছে বিএনপি। এদিকে, দৌলতপুরসহ ফুলগাজীর প্রতিটি গ্রামে বিএনপি নেতাদের বাড়িতে শুক্রবার রাতে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ-ছাত্রলীগ কর্মীরা অভিযান চালায় বলে অভিযোগ উঠেছে।

বিএনপি নেতারা অভিযোগ, শনিবার সকাল থেকে ফুলগাজী যাওবার পথে কয়েক স্থানে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ ব্যারিকেড বসানোর কারণে দৌলতপুর পৌঁছতে পারেনি বিএনপি নেতা-কর্মীরা। পরে ফেনীতে সংবাদ সম্মেলন করে স্থানীয় নেতাদের হাতে ত্রাণ সামগ্রী তুলে দিয়ে নেতারা ঢাকায় ফিরে যান।

এর আগে আজ সকাল ১০টার দিকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি নেতারা দলের আহবায়ক আবদুস সালামের নেতৃত্বে ফেনী পৌঁছান। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম মজনু জানান, ফেনীর মহিপাল ফ্লাইওভারের কাছে তাদের বহর থামায় পুলিশ। পরে পুলিশ তাদেরকে  ফুলগাজীতে ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে জানিয়ে ঢাকায় ফেরত যেতে বলে। এরপর ফেনী জেলা বিএনপি কার্যালয়ে একান্ত বৈঠকে মিলিত হয়ে উদ্ভূত’ত পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতারা ফেনী বিএনপির সাথে আলোচনায় বসেন। পরে বিএনপি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ফুলগাজী না যাওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয় এবং ত্রাণ সামগ্রী জেলা বিএনপির হাতে হস্তান্তর করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে আবদুস সালাম বলেন, সরকার বানভাষী মানুষদের সহায়তা করেনি। এখন বিএনপিকেও সহায়তা করার ক্ষেত্রে বাধার সৃষ্টি করছে।

এর আগে, গতকাল (শুক্রবার) বিকেল ৪টায় ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে উভয় দলের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়েছে। এতে বিএনপির প্রায় ১৫ নেতাকর্মী আহত হন। এ অবস্থায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আরো অবনতির আশঙ্কায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শনিবার (২ জুলাই) ভোর থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ফুলগাজী উপজেলায় ১৪৪ ধারা  জারি করা হয়।

এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শুক্রবার এক বিবৃতিতে তিনি অবিলম্বে আওয়ামী লীগের ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নামধারী সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ ফরিদ বাহার অভিযোগ করেছেন, ঘটনাস্থলের পাশেই ফুলগাজী থানা। পুলিশ সময়মতো হস্তক্ষেপ করলে এমন ঘটনা ঘটা সম্ভব ছিল না। ফেনী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল জানান, সভায় জেলা বিএনপি'র আহ্বায়কসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এসময় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলা চাল।

এ ব্যাপারে ফুলগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল আলিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, সংঘর্ষের আগে ফুলগাজী সদর উপজেলা যুবলীগ সভাপতি মিজান কোম্পানীর ওপর হামলা করে বিএনপি কর্মীরা। এতে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। যুবলীগ উদ্দেশ্যমূলকভাবে কারও সভা পণ্ড করতে হামলা করেনি বলে তিনি দাবি করেন।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, শক্রবার বিকেলে  হামলা শুরু হলে ফুলগাজী বাজারে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। বাজারে আসা ক্রেতারা এদিক-সেদিক ছোটাছুটি করতে থাকেন। প্রায় এক ঘণ্টা পর পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।#

পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/২

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ