সরকার ব্যর্থতার এক বিশাল স্তুপের ওপর বসে আছে: ফখরুল
যে রিজার্ভ আছে তাতে ৯ মাসের খাবার কিনতে পারব: শেখ হাসিনা
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের এখন যে রিজার্ভ আছে তাতে ৩ মাস কেন, ৬ মাস, ৯ মাসের খাবারও আমরা কিনে আনতে পারব। আপৎকালে ৩ মাসের খাদ্যশস্য বা আমদানি করার মতো অর্থটা আমাদের হাতে থাকে।
বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ২৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ (বুধবার) দুপুরে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
ওদিকে, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার ব্যর্থতার এক বিশাল স্তুপের ওপর বসে আছে। রাষ্ট্রীয় অর্থনীতি লোপাটে দেশে এখন চলছে ভয়ঙ্কর এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি।
আজ গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশে জ্বালানি সংকট এখন চরমে। ডলারের নজীরবিহীন দাম বৃদ্ধিতে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য অচল হয়ে পড়েছে। তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। অসহনীয় লোডশেডিংয়ের কারণে শহর থেকে গ্রাম সর্বত্রই মানুষ সীমাহীন কষ্টে নিপতিত হয়েছে। এই দুঃসহ পরিস্থিতি থেকে জনগণের দৃষ্টিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্যই বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে সরকার অসত্য ও বানোয়াট মামলা দিয়ে কারান্তরীণ করছে।
এদিকে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ আপাতত প্রয়োজন নেই- অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল গত সপ্তাহে এমন মন্তব্য করার পর জানা গেল ঋণ চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে আইএমএফের কাছে।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল আজ দুপুরে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বীকার করেছেন, আইএমএফের কাছে আমরা অর্থ চেয়েছি। কিন্তু কত লাগবে আমরা সেটি বলিনি। তারা কী শর্তে ঋণ দিতে চাচ্ছে, যদি পজিটিভলি দেখি তাহলে আমরা হয়তো বিবেচনা করতে পারি।
অর্থমন্ত্রী বলেছেন, আমরা বিশ্বব্যাংকের কাছে যাব, জাইকায় যাব, সব জায়গায় সব সময় চেষ্টা করি আমাদের যে ঋণ প্রয়োজন তা ভালো ইন্টারেস্টে ও ভালো শর্তে নিতে। আইএমএফ টিম এখানে এসেছিল, তারা প্রতিবছরই আসে। তারা অ্যানুয়াল কনসালটেশন করে, সেজন্য তারা এসেছে। সে সময় যদি বলি আমাদের টাকা দরকার, তখন তারা টাকা দিলেও ইন্টারেস্ট রেট বাড়ানোর সম্ভাবনা থাকে।
তাছাড়া, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন-বিপিসি চেয়ারম্যান এ বি এম আজাদ আজ এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, দেশে কোনো ধরনের জ্বালানি সংকট নেই।
তিনি জানিয়েছেন, দেশে বর্তমানে পেট্রল মজুদ আছে ২১ হাজার ৮৮৩ মেট্রিক টন। ইতোমধ্যে ৬ মাসের তেল আমদানি নিশ্চিত করা আছে। দেশে ৪৪ দিনের জেট ফুয়েল। এর পরিমাণ ৬২ হাজার ৮৯১ মেট্রিক টন। আর ৩২ দিনের ফার্নেস অয়েল মজুদ রয়েছে। যার পরিমাণ ৮৫ হাজার ৪১ মেট্রিক টন। আর অকটেন মজুদ আছে ১২ হাজার ২৩৮ মেট্রিক টন। আগামী কয়েক দিন এগুলো আমদানি না করলেও চলবে।
বিপিসি চেয়ারম্যান বলেন, দেশে ৪ লাখ ৩১ হাজার ৮৩৫ মেট্রিক টন ডিজেল রয়েছে। আগামী ৩০ জুলাই আরও ৩০ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল এখানে পৌঁছবে।
তিনি বলেন, স্বাভাবিক সময়েও মজুদের পরিমাণ এর চেয়ে খুব বেশি থাকে না। সবমিলিয়ে জ্বালানি তেলের সরবরাহ স্বাভাবিক আছে। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। এ অবস্থায় কোনো পেট্রল পাম্প প্রয়োজনের চেয়ে কম দিতে চাইলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিপিসি চেয়ারম্যান।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/২৭