বিএনপির গণসমাবেশ ঘিরে অচল হয়ে পড়েছে খুলনা বিভাগ
(last modified Fri, 21 Oct 2022 12:18:27 GMT )
অক্টোবর ২১, ২০২২ ১৮:১৮ Asia/Dhaka

গণসমাবেশের একদিন আগে আজ (শুক্রবার) সকালে দুই দিনের পরিবহন ধর্মঘট শুরু করেছে জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ, মাইক্রোবাস মালিক সমিতি। বাস ধর্মঘটের পাশাপাশি খুলনায় শুরু হয়েছে যাত্রীবাহী লঞ্চ ধর্মঘট। আজ সকালে ১০ দফা দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার ওই ধর্মঘট শুরু করেছে লঞ্চ শ্রমিক ইউনিয়ন। এর ফলে খুলনার দক্ষিনাঞ্চলীয় উপজেলা দাকোপ, কয়রা, সাতক্ষীরায় যাতায়াতকারী সব লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। বিএনপি বলছে, তাদের গণসমাবেশ বাধাগ্রস্ত করতেই সড়ক পরিবহন ও লঞ্চ ধর্মঘট ডাকা হয়েছে।

এদিকে বাসের পাশাপাশি লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।

বিএনপির সমাবেশের আগে লঞ্চ ধর্মঘটের বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ লঞ্চ শ্রমিক ইউনিয়ন খুলনা জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, অনেক আগেই ওই দাবিগুলো মেনে নেওয়ার জন্য মালিক ও নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষকে আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছিল। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা বাস্তবায়ন না করায় ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট শুরু করেছেন শ্রমিকেরা। এর সঙ্গে বিএনপির সমাবেশের কোনো সম্পর্ক নেই।

পথের বাধা ঠেলে আজ সকাল থেকে বিভাগের পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে বিএনপি নেতা-কর্মীরা দলে দলে ভাগ হয়ে ব্যাটারীচালিত গাড়ী, মটর সাইকেল, ভ্যান গাড়ী , ট্রলার  এমনকী  পায়ে হেঁটেই খুলনা অভিমুখে যাত্রা শুরু করেছেন। তবে খুলনার প্রবেশ মুখগুলোতে চেকপোস্ট বসিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সরকারদলীয় লোকজনও বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে বাধা দিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তারা।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

সরকার পরিস্থিতি সংঘাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে: মির্জা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার জনভীতি রোগে ভুগছে। সরকার জনগণকে ভয় পায় বলেই বিএনপির সমাবেশে বাধা সৃষ্টি করছে। খুলনায় বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশে বাধা দিয়ে সরকার পরিস্থিতি সংঘাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

আজ সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আগামীকাল খুলনায় আমাদের বিভাগীয় সমাবেশ আছে। এই সমাবেশকে কেন্দ্রে করে সরকার ইতোমধ্যে একটা সন্ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে খুলনায়। তারা পথে পথে নেতাকর্মীদের, সাধারণ মানুষকে গ্রেপ্তার করছে। খুলনার সমাবেশে যেন বাধা সৃষ্টি করা না হয়, তার জন্য আমি আহ্বান জানাচ্ছি।

মির্জা ফখরুল হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, খুলনার সমাবেশকে কেন্দ্র করে যদি কোনো রকম অঘটন হয়, তার সকল দায়-দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবে সরকারকে নিতে হবে।’

মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, গতকাল থেকে সরকারি দলের লোকজন রামদা, লাঠিসোঠা, অস্ত্র নিয়ে খুলনায় শোডাউন করেছে; মোটরসাইকেল নিয়ে বিভিন্নভাবে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা সন্ত্রাস সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। গতকাল রাতে বিএনপি’র  স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় খুনার যে বাসায় অবস্থান করছেন, সেখানে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। সরকার নির্দেশ দিয়েছে পথে পথে যাকে যেখানে পাওয়া যাবে, তাকে সেখানে গ্রেপ্তার করার জন্য। আমি এই গ্রেপ্তার এবং সন্ত্রাস সৃষ্টি করার যে প্রচেষ্টা তার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি, প্রতিবাদ করছি এবং অবিলম্বে গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তি দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’

এর আগে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আমাদের সমাবেশ পণ্ড করতে আওয়ামী লীগ রাস্তায় যানবাহন বন্ধ করে দিচ্ছে, পথে পথে বাধা দিচ্ছে। হামলা করছে; মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করছ। তারপরও বিএনপির গণসমাবেশমুখী কাফেলা দিন দিন বেড়েই চলেছে। দিন রাত হেঁটে কিংবা ভ্যানে-ট্রলারে করে এসে সমাবেশে জড়ো হচ্ছেন হাজারো মানুষ। হামলা-মামলা-গ্রেপ্তার করে এই জনস্রোত ঠেকানো যাবে না।#

পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/gআশরাফুর রহমান/২১

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

ট্যাগ