'নয়াপল্টনে সংঘর্ষের মামলায় ফখরুল-আব্বাসকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে'
(last modified Fri, 09 Dec 2022 08:28:00 GMT )
ডিসেম্বর ০৯, ২০২২ ১৪:২৮ Asia/Dhaka
  • মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মির্জা আব্বাস
    মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মির্জা আব্বাস

বাংলাদেশের রাজধানীর নয়াপল্টনে সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

আজ (শুক্রবার) দুপুর সোয়া দুইটার দিকে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) প্রধান হারুন অর রশিদ। ডিবি কার্যালয়ের সামনে তিনি বলেন, 'বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে ডিবি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গ্রেফতার দেখিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। গত বুধবার নয়াপল্টনে পুলিশের ওপর হামলার পরিকল্পনা ও উসকানি দেওয়ার অভিযোগে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।' আজকেই তাদের আদালতে পাঠানো হবে বলে জানান ডিবি প্রধান।

এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ডিবি অফিসের সাংবাদিকদের তিনি বলেন, 'গত ৭ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে প্রায় অর্ধশতাধিক পুলিশ আহতের ঘটনা ও ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়েছে।'

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) প্রধান হারুন অর রশিদ

কী অভিযোগে তাদের ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়েছে এবং কোন বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে জানতে চাইলে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘বিএনপির সমাবেশ নিয়ে দুদিন আগে একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের ৫০ জনের বেশি পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন। এসব বিষয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।‘

দুই বিএনপি নেতাকে কোনো মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে কি-না এই প্রশ্নে হারুন বলেছিলেন, জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হলে আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।

বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান জানান, বৃহস্পতিবার দিনগত রাত ৩টার দিকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে তার উত্তরার বাসা থেকে এবং মির্জা আব্বাসকে তার শাহজাহানপুরের বাসা থেকে তুলে নিয়ে গেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

বিএনপির শনিবারের গণসমাবেশের ভেন্যু নির্ধারণের জন্য বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে কমলাপুর স্টেডিয়াম ও মিরপুর বাঙলা কলেজের মাঠ পরিদর্শন শেষে বাসায় ফেরেন মির্জা আব্বাস।

নয়টি বিভাগীয় সমাবেশ শেষে আগামীকাল শনিবার (১০ ডিসেম্বর) ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশ করার কথা রয়েছে। বিএনপি নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এই সমাবেশ করতে চেয়েছিল। তাদেরকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি দেয় পুলিশ। তবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নয়, নয়াপল্টনেই সমাবেশ করার বিষয়ে অনড় অবস্থান জানান বিএনপির নেতারা।

এই সমাবেশ কোথায় হবে, তা নিয়ে বিতর্ক-আলোচনার মধ্যে বুধবার বিকেলে নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে মকবুল আহমেদ নামে বিএনপির এক কর্মী নিহত হন, আহত হন অর্ধশতাধিক ব্যক্তি। এ সময় গ্রেপ্তার করা হয় বিএনপির চার শতাধিক নেতা-কর্মীকে।

বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত বিএনপির নয়াপল্টনের কার্যালয়ে তল্লাশি চালায় পুলিশ। বিকেল ৪টার দিকে তল্লাশি শেষ হওয়ার পর ওই কার্যালয়ের সামনের সড়ক যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। তবে সে সময় ওই এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

এ পরিস্থিতিতে সন্ধ্যার পর বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের সঙ্গে বৈঠক করতে যান। দুই ঘণ্টার বেশি সময়ের বৈঠক শেষে বের হয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা (বুলু) সাংবাদিকদের বলেন, গণসমাবেশের জন্য কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহি মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়াম ও মিরপুর বাঙলা কলেজ মাঠ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।  আলোচনায় ডিএমপি কমিশনার গ্রেপ্তার নেতা-কর্মীদের মুক্তির বিষয়ে ইতিবাচক ভূমিকা নেওয়ার আশ্বাস দেন বলেও জানিয়েছিলেন বিএনপি নেতা বরকতউল্লা। বিএনপির এ নেতা পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে বৈঠকে এই আশ্বাস বাণী শুনে আসার কথা জানানোর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মহাসচিব মির্জা ফখরুলসহ দলটির জ্যেষ্ঠ দুই নেতাকে আটক করার খবর এল।#

পার্সটুডে/নিলয় রহমান/আশরাফুর রহমান/৯

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ