অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বিশেষজ্ঞ পরামর্শ
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে বিনিয়োগের সাথে বাড়াতে হবে কর্মসংস্থান; ঠেকাতে হবে অর্থপাচার
বাংলাদেশের অর্থনীতি ২০২৩ সালে যে খুব ভালো যাবে না তার আভাস আগে ভাগেই বিভিন্ন মহল থেকে বলা হচ্ছিল। কারন মুদ্রাস্ফীতির ধাক্কায় সারা বিশ্বেই টানাপোড়েন চলছে।
করোনা মহামারিতে বিপর্যস্ত অর্থনীতি যখন আশার আলো দেখছিল ঠিক তখন যুদ্ধ বাঁধে হাজার মাইল দূরের দুই দেশের মধ্যে। বিশ্ববাজারে নিত্যপণ্যের দামের সঙ্গে তখনই পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে আমদানি ব্যয়। টান লাগে দেশের রিজার্ভে। হুন্ডির থাবায় কমে যায় রেমিটেন্স প্রবাহ। তীব্র হয় দেশের ডলার সংকট। কমতে থাকে রপ্তানি আয়। ইতিহাসের রেকর্ড গড়ে মূল্যস্ফীতি। শুধু বাংলাদেশই নয়, সমগ্র বিশ্বে এখনও সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি দাবড়ে বেড়াচ্ছে। তবে গত বছরের শেষভাগে এসে দেশের অর্থনীতিতে আশার আলো জ্বালায় রেমিটেন্স ও রপ্তানি আয়। রেমিটেন্সের পালে হাওয়া লেগে গেল ডিসেম্বরে বাংলাদেশের আয় হয় ১৭০ কোটি ডলার। বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের কথা মাথায় রেখে ব্যয় সংকোচনে রিজার্ভে রীতিমতো খুঁটি লাগানো হয়। তবে এত কিছুর পরেও কি অর্থনীতির চ্যালেঞ্জকে কোন লাল কাপড়ে আটকানো গেল ? মোটেও না, বলছেন অর্থনীতির বিশ্লেষকরা।
অর্থনীতিবীদ অধ্যাপক ড. কাজী খলিকুজ্জামান রেডিও তেহরানকে বলেছেন, অর্থপাচার, হুন্ডি বন্ধ ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে নজরদারি বাড়াতে হবে। খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণ করে ঋণ আদায় বাড়াতে হবে। এতে বৈদেশিক মুদ্রা ও তারল্য সংকট হবে না। একই সঙ্গে মূল্যস্ফীতির হারও নিয়ন্ত্রণ করা যাবে বলে মনে করেন এ অর্থনীতিবীদ।
তবে বৈশ্বিক অর্থনীতির এসব চ্যালেঞ্জ যত দ্রুত দক্ষতার সঙ্গে মোকাবিলা করা যাবে, তত দ্রুত ঘুরে দাঁড়াতে পারে দেশের অর্থনীতি এমনটা মনে করছেন বিআইবিএম এর সাবেক মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী।
গত নভেম্বরে আইএমএফের পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল, ২০২৩ সালে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি হবে ২.৭ শতাংশ। এর আগে বলা হয়েছিল ২ দশমিক ৯ শতাংশ। এখন আইএমএফ বলছে, বিশ্বজুড়ে রেকর্ড মূল্যস্ফীতির কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো মুদ্রানীতি কঠোর করছে, চীনে প্রবৃদ্ধির গতি শ্লথ হচ্ছে এবং রাশিয়ার ইউক্রেন হামলার কারণে সরবরাহ বিপর্যয় ও খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবিলায় জ্বালানি ব্যবস্থা নিশ্চিতে উদ্যোগী ভূমিকা নেয়া দরকার বলে রেডিও তেহরানকে জানান এফবিসিসিআইর সহসভাপতি মো: সিদ্দিকুর রহমান।
বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সাধারণত বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সব সময়ই একটা ঊর্ধ্বমুখী ধারা দেখা যায়, তার একটা প্রভাব থাকবে নতুন বছরের অর্থনীতিতেও।#
পার্সটুডে/নিলয় রহমান/রেজওয়ান হোসেন/২
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।