আল-জাজিরার অনুসন্ধান
আমিরাতে আরও ৩০০ বাড়ির সন্ধান বাংলাদেশের সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের
-
সাইফুজ্জামান চৌধুরী
বাংলাদেশের সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সংযুক্ত আরব আমিরাতে নতুন করে আরও ৩০০টি বাড়ির সন্ধান পাওয়া গেছে। বর্তমানে তিনি লন্ডনে ১ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলারের (প্রায় ১৬৮ কোটি টাকা) বাড়িতে বসবাস করছেন।
বাংলাদেশের একটি আদালত সাইফুজ্জামান ও তাঁর স্ত্রী রুকমিলা জামানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারির দুই সপ্তাহ পর এসব তথ্য প্রকাশিত হয়েছে কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার ইনভেস্টিগেশন ইউনিটের (আই-ইউনিট) প্রতিবেদনে। আল–জাজিরার অনুসন্ধান ইউনিটের সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের খান ও উইল থর্ন এই প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন যা গতকাল (সোমবার) প্রকাশিত হয়।
নতুন তথ্যে দেখা গেছে, সাবেক এই মন্ত্রী ও তাঁর স্ত্রী সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৩০০টির বেশি উচ্চমূল্যের অভিজাত অ্যাপার্টমেন্ট কিনতে প্রায় ১৭ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয় করেছেন। আর সামগ্রিকভাবে এই দম্পতি বিশ্বজুড়ে ৬০০টির বেশি সম্পত্তির তালিকাভুক্ত মালিক।
সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের লন্ডনের একটি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকের পাশ দিয়ে সাইফুজ্জামানের হেঁটে যাওয়ার দৃশ্য আল-জাজিরার আই-ইউনিটের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। লন্ডনে ৯০ লাখ মার্কিন ডলারের বেশি মূল্যের ছয়টি সম্পত্তির মালিক তিনি। যুক্তরাজ্যে তাঁর যে সম্পত্তির সাম্রাজ্য রয়েছে, এটি তার একটি ছোট অংশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) ও যুক্তরাষ্ট্রে সাইফুজ্জামানের আরও কয়েক শ অ্যাপার্টমেন্ট আছে। সাইফুজ্জামান ও তাঁর স্ত্রীর সম্পদ জব্দের বিষয়ে দুদক ইতিমধ্যে আদালত থেকে আদেশ পেয়েছে। এর ফলে এই দম্পতির মালিকানাধীন অ্যাপার্টমেন্টগুলো আদালতের আদেশের আওতায় পড়েছে।
এর আগে, দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর গত ১৮ সেপ্টেম্বর আল জাজিরার প্রকাশিত দ্য মিনিস্টারস মিলিয়নস শিরোনামের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সাইফুজ্জামান চৌধুরী যুক্তরাজ্যে ২৫০ মিলিয়ন ডলার খরচ করে ৩৬০টি বিলাসবহুল বাড়ি কিনেছেন। যা বাংলাদেশি অর্থে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার সমান। ব্রিটেন ছাড়াও নিজের রিয়েল স্টেট ব্যবসাকে সম্প্রসারণ করেছেন মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই, নিউইয়র্ক, সিঙ্গাপুর এবং মালয়েশিয়া পর্যন্ত। সবমিলিয়ে তিনি সাত শতাধিক বাড়ি কিনেছেন। যেগুলোর মূল্য ৮৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি। যা বাংলাদেশি ১০ হাজার কোটি টাকারও বেশি।
বাংলাদেশে কয়েক সপ্তাহের দুর্নীতিবিরোধী বিক্ষোভের পর গত আগস্টে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। বিক্ষোভকালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে কয়েক শ বিক্ষোভকারী নিহত হন। এ পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে যান। তাঁর অন্যতম একজন ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি ছিলেন সাইফুজ্জামান চৌধুরী।#
পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/২২
