কারামুক্ত বিএনপি নেতা ফখরুল-আব্বাস যা বললেন
(last modified Mon, 09 Jan 2023 14:03:28 GMT )
জানুয়ারি ০৯, ২০২৩ ২০:০৩ Asia/Dhaka
  • মুক্তি পেলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম
    মুক্তি পেলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম

সদ্য কারামুক্ত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমাদের পার্টি অফিস থেকে চারশর ওপর নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে নিয়ে তারা (সরকার) মনে করেছিল, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন বন্ধ করে দিতে পারবে। কিন্তু পারেনি। আপনারা সফলভাবে কর্মসূচি পালন করেছেন। আজকে গোটা বাংলাদেশ প্রতিবাদের জড়ে প্রকম্পিত হয়েছে।’

কারাগার থেকে মুক্তির পর আজ (সোমবার) সন্ধ্যায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অপেক্ষমান নেতাকর্মীদের উদ্দেশে এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গ্রেফতার নির্যাতন করে মামলা দিয়ে আমাদের দমন করতে পারবে না। আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারকে পরাজিত করব ইনশাল্লাহ। যত বেশি নির্যাতন করবে তত বেশি নেতাকর্মীরা জেগে উঠবে।’

নয়াপল্টনে বক্তব্য রাখছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের পিছু হঠার সুযোগ নেই। আমাদের শুধু সামনে এগিয়ে চলা। আন্দোলনের মাধ্যমেই আমাদের দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্তি করবো। আমাদের যারা কারাগারে আছে তাদের মুক্ত করতে হবে। আন্দোলন আরও তীব্র করে তুলতে হবে। ১১ তারিখ আমাদের গণঅবস্থান আছে। আন্দোলন সফল করার জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে। এই সরকারকে পরাজিত করাই হচ্ছে আমাদের লক্ষ্য। জেল থেকে বের হয়ে আমাদের আবার নতুন অঙ্গীকার, বিজয় না হওয়া হওয়া পর্যন্ত চলতেই থাকব।’

এসময় মির্জা ফখরুলের সঙ্গে কারামুক্ত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, 'খালেদা জিয়ার মুক্তি সময়ের ব্যাপার। আপনাদের আন্দোলনে চাপের মুখে সরকার খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিবে বাধ্য হবে।’

মির্জা আব্বাস আরও বলেন, ‘আমরা বৃহত্তর সংগ্রামের মধ্যে আছি। এই দেশের মাটি, মানুষকে রক্ষা করতে হবে। মানুষের ভোটের অধিকার রক্ষা করতে হবে।

নয়াপল্টনে বক্তব্য রাখছেন মির্জা আব্বাস

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘১০ তারিখে মিটিং হবে। আমাদের জায়গা দেওয়া হলো বাংলা কলেজ। আমরা ওখানে সমাবেশে রাজি হয়নি। আমাদের কমলাপুরে স্টেডিয়ামে করতে বলা হলো। আমরা একটা বিভাগীয় সমাবেশে করতে চেয়েছিলাম। তারা মনে করেছিল আমরা নাকি বসে পড়বো। কালশি, মিরপুর করে সময় নেওয়া হলো। আমরা বললাম সোহরাওয়ার্দীতে ও বাংলা কলেজে একটা মাত্র গেইট। পরে প্রস্তাব দিলাম গোলাপবাগ মাঠ। সরকার চেয়েছিল আমরা যেন পল্টনেই সমাবেশ করি। তারা ভেবেছিল মারামারি করে আমাদের উঠিয়ে দিবে। আমাদের অপরাধ সরকারকে সংঘর্ষ করার সুযোগ দিলাম না।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘জেল থেকে দেখেছি আপনারা বিশাল সমাবেশ করেছেন। আমরা কোথায় থাকলাম এটা বিষয় নয়। বিএনপির কর্মীরাই বিএনপিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে আমরা কর্মসূচি পালন করতে চাই। বিএনপি গণতান্ত্রিক দল। আমরা কোনো সংঘাত চাই না। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করতে চাই। খালেদা জিয়ার মুক্তি সময়ের ব্যাপার। আপনাদের আন্দোলনে চাপের মুখে সরকার খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিবে বাধ্য হবে।’

এক মাস কারাবন্দি থাকার পর উচ্চ আদালতের জামিনে মুক্ত হয়ে আজ বিকাল ৫টা ৫৫মিনিটে কেরানীগঞ্জে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। রাজধানীর নয়াপল্টনে গত ৭ ডিসেম্বর পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় করা মামলায় গত ৮ ডিসেম্বর গভীর রাতে তাদের নিজ বাসা থেকে আটক করে পুলিশ।

রোববার পল্টন থানার মামলায় ফখরুল ও আব্বাসের জামিন বহাল রেখে আদেশ দেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে মামলায় ফখরুল-আব্বাসের জামিননামা দাখিল না করতে চেম্বার আদালত যে নির্দেশ দিয়েছিলেন, তা তুলে নেন আপিল বিভাগ।

ফখরুল-আব্বাসের জামিন প্রশ্নে রুল ৩০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হাইকোর্টকে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।

মামলায় ফখরুল ও আব্বাসের জামিন আবেদন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে তিনবার নাকচ হয়। সবশেষ ২১ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে তাদের জামিন আবেদন নাকচ হয়। এ অবস্থায় তারা হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেছিলেন।#

পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/৯

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ