নিজস্ব অর্থনৈতিক সক্ষমতা বাড়ানোর পরামর্শ
আইএমএফ-এর প্রথম কিস্তির ঋণ পেল বাংলাদেশ: বিশ্লেষকদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া
যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে গত ৩০ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্বাহী ও পরিচালনা পর্ষদে চুড়ান্তভাবে পাস হয়েছে বাংলাদেশের ঋণ প্রস্তাব। সবমিলিয়ে বাংলাদেশ পাচ্ছে সাড়ে তিন বছরের জন্য মাত্র ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলার; যা মোট জিডিপির তুলনায় অনেকটাই কম। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার মোট সাত কিস্তিতে প্রতিশ্রুত অর্থের প্রথম কিস্তি ৪৮ কোটি ২৩ লাখ ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। বাকি অর্থ ২০২৬ সাল নাগাদ বাকি ৬ কিস্তিতে পাওয়ার কথা রয়েছে।
দেশের অর্থনীতির ক্রান্তিকালে আইএমএফ-এর এই ঋণে একধরনের স্বস্তি পাচ্ছে বাংলাদেশ। তবে প্রশ্ন হচ্ছে, এ ঋণে সংকট কতটা কাটবে। দ্বিতীয় কিস্তি যোগ করলে আগামী এক বছরে আইএমএফ থেকে পাওয়া যাবে মোট ১০০ কোটি ডলারের মতো। এ অর্থ কি সংকট কাটানোর জন্য যথেষ্ট? এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে বিশেষজ্ঞ মহলে।
অর্থনৈতিক বিশ্লেষক ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ মনে করেন, আইএমএফ-এর ঋণ বাংলাদেশকে বিপদের মুখে একটি ভরসার ছায়া দিয়েছে। কিন্তু এই ঋণে পাওয়া অর্থ খরচের বিষয়ে পেশাগত দক্ষতা ও রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা বৃদ্ধি জরুরি।
আর সিপিডির ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলছেন, আর্থিক ব্যবস্থাপনা এখন গভীর সংকটে। ঠিক সময়ে ঠিক পদক্ষেপ নিতে না পারার ব্যর্থতার খেসারত হিসেবে এ সংকট তৈরি হয়েছে। সাময়িক স্বস্তি দিলেও সংকটের গভীরতা এত বেশি যে আইএমএফের এ ঋণে তা মেটানো কঠিন। ঋণ দরকার, তার চেয়েও এখন সংস্কার বেশি দরকার বলে মনে করছেন এ সিপিডি ফেলো।
করফাঁকি ও অর্থপাচার রোধের মাধ্যমে বাড়াতে হবে নিজস্ব অর্থনৈতিক সক্ষমতা, এমন পরামর্শও দিচ্ছেন অর্থনীতির বিশ্লেষকরা। গবেষকরা বলছেন, প্রবাসী আয় যা আসছে তা হয়তো দেড় গুণ করা সম্ভব, যদি আনুষ্ঠানিক চ্যানেলে অর্থ আনার পথ বের করা যায়। আইএমএফের ঋণে অবশ্য সরকার একটা লাভ আশা করছে। সেটা হচ্ছে এখন অন্য উন্নয়ন সহযোগীরাও ঋণ দিতে চাইবে বাংলাদেশকে। কিন্তু সে আশায় না থেকে বেশি ঋণের পরিবর্তে বরং অভ্যন্তরীণ আর্থিক ব্যবস্থাপনাকে সুসংহত করার ওপরই জোর দিচ্ছেন দেশের অর্থনীতিবিদরা।#
পার্সটুডে/মো: বাদশাহ মিয়া/আশরাফুর রহমান/৭
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।