নতুন ঋণের প্রয়োজনীয়তা যাচাই করবে আইএমএফ
বাংলাদেশকে ২০২ মিলিয়ন ডলার অনুদান দেবে ইউএসএআইডি
বাংলাদেশকে ২০২ দশমিক ২৫ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেবে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা। ইউএসএআইডি ডেভেলপমেন্ট অবজেক্টিভ গ্রান্ট এগ্রিমেন্টে বা ডিওএজি আওতায় এ সহায়তা দেওয়া হবে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) অতিরিক্ত সচিব এ কে এম শাহাবুদ্দিন ও ইউএসএআইডির মিশন ডিরেক্টর রিড জে এসচলিম্যান আজ (রোববার) ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় এ সংক্রান্ত ষষ্ঠ সংশোধনী চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
২০২১ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১-২০২৬ সালের জন্য বাংলাদেশ ও ইউএসএআইডির মধ্যে একটি নতুন ডিওএজি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। ডিওএজি বাস্তবায়নের মাধ্যমে ইউএসএআইডি মোট ৯৫৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অবদান রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এখন পর্যন্ত পঞ্চম সংশোধনী পর্যন্ত ইউএসআআইডি ৪২৫ মিলিয়ন ডলার দিয়েছে। এ ষষ্ঠ সংশোধনীর অধীনে ইউএসআআইডি ২০২ দশমিক ২৫ মিলিয়ন অনুদান দেবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৯৭২ সাল থেকে বাংলাদেশের একটি বিশ্বস্ত উন্নয়ন অংশীদার। ১৯৭৪ সালে স্বাক্ষরিত 'অর্থনৈতিক প্রযুক্তিগত ও সম্পর্কিত সহায়তা' শীর্ষক একটি চুক্তির অধীনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্র ও শাসনের মতো বিভিন্ন খাতে আজ পর্যন্ত ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি অবদান রেখেছে।
বাংলাদেশের নতুন ঋণের প্রয়োজনীয়তা যাচাই করবে আইএমএফ
এদিকে, বাংলাদেশের নতুন ঋণের প্রয়োজনীয়তা মূল্যায়ন করবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রতিনিধি দল। ঢাকা সংস্থাটির কাছে নতুন করে তিন বিলিয়ন ডলার ঋণ চেয়েছে। প্রতিনিধি দলটি আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর ঢাকায় এসে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত থাকবে বলে জানিয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা।
গত শুক্রবার আইএমএফের যোগাযোগ বিভাগের পরিচালক জুলি কোজ্যাক ওয়াশিংটন ডিসিতে সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানান, বাংলাদেশের সব ধরনের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সম্ভাব্য অর্থায়নের প্রয়োজনীয়তা মূল্যায়ন করা হবে। তিনি আরও জানান, আইএমএফ বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে।
জুলি কোজ্যাক বলেন, 'আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে ও আইএমএফ কর্মসূচির প্রেক্ষাপটে জনগণকে সমর্থন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা সংস্কারকে এগিয়ে নিতে সহায়তার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাব।'
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক গণঅভ্যুত্থানে প্রাণহানি ও আহতের ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করে কোজাক বলেন, 'প্রাণহানির সংবাদ শুনে খুব কষ্ট পেয়েছি।'
গত বুধবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, 'দেশের রিজার্ভ বাড়াতে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে বাজেট সহায়তা চাওয়া হয়েছে।'
এর আগে আইএমএফের সঙ্গে আলাদা ভার্চুয়াল বৈঠকে তিন বিলিয়ন ডলার ঋণ চেয়েছিলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।
বাংলাদেশের জন্য আইএমএফের চলমান চার দশমিক সাত বিলিয়ন ডলার ঋণ কর্মসূচি আছে। গত বছরের জানুয়ারিতে সংস্থাটি এই ঋণের অনুমোদন দেয়।
গত দুই বছর ধরে দেশের রিজার্ভ ক্রমাগত কমছে। তা দিয়ে মাত্র কয়েক মাসের আমদানি খরচ মেটানো যাবে। আইএমএফের হিসাব অনুসারে, সাম্প্রতিক মাসগুলোয় রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি আছে। গত ১১ সেপ্টেম্বর তা ছিল ১৯ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ডলার। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মতে, জ্বালানি-বিদ্যুৎ খাতেই সরকারের দেনা দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি।
এ খাতের আমদানি খরচ মেটাতে প্রতি মাসে সরকারের প্রায় এক বিলিয়ন ডলার দরকার হয়। এমন পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকার রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বাড়ানোর পাশাপাশি উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে বাজেট সহায়তা চেয়েছে।#
পার্সটুডে/জিএআর/১৫