বিশ্ব অ্যাজমা দিবস
বাংলাদেশের ৭০ ভাগ অ্যাজমা রোগী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সেবা থেকে বঞ্চিত
সাধারণত ঠাণ্ডা সর্দি-কাশিকে অনেক সময়ই আমরা খুব বেশি গুরুত্ব দিই না। কিন্তু কখন যে এই ঠাণ্ডা সর্দি-কাশি অ্যাজমা কিংবা হাঁপানিতে রূপ নেবে বলা মুশকিল। বুকের মধ্যে শো শো শব্দ হওয়া, কাশি, বুকে চাপ অনুভব করা, বুকের মাংস-পেশি শক্ত হয়ে যাওয়া এবং স্বল্প মাত্রায় শ্বাস নিতে পারা এমন সব উপসর্গে ভোগেন অ্যাজমা রোগীরা। শহরকেন্দ্রীক রোগীর পাশাপাশি তৃণমূল গ্রামে রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে।
এমন বাস্তবতায় 'কেয়ার ফর অল' প্রতিপাদ্যে আজ বাংলাদেশেও পালিত হচ্ছে বিশ্ব অ্যাজমা বা হাঁপানি দিবস। প্রতিবছর মে মাসের প্রথম মঙ্গলবার পালিত হয় দিনটি। অ্যাজমা বা হাঁপানি রোগ থেকে বিশ্ববাসীকে রক্ষা ও রোগ সম্পর্ক সচেতনতা বৃদ্ধি করাই হলো দিবসটি পালনের উদ্দেশ্য।
গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ ফর অ্যাজমা (জিআইএনএ) রোগটি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে ১৯৯৮ সালে প্রথম বিশ্ব হাঁপানি দিবস পালন করে। দিনটি পালনের জন্য মে মাসকে বেছে নেওয়া হয়েছে। কারণ এই সময়ে হাঁপানির লক্ষণ বেড়ে যায়। গরমে এই সমস্যা অনেক প্রবল হয়। সমস্যা প্রবল আকার নিলে শ্বাসকষ্ট শুরু হতে পারে। নিশ্বাসে কষ্ট, কাশি, বুকের মধ্যে সাঁই সাঁই শব্দ দেখা দেয় হাঁপানি হলে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, বিশ্বে প্রায় ৩০ কোটির বেশি মানুষ এখন অ্যাজমা রোগে আক্রান্ত। চিকিৎসকদের মতে, একটা সময় জন্মগত অ্যাজমা রোগীর সংখ্যা বেশি ছিল। এখন পরিবেশদূষণ, বায়ুদূষণ ও রাসায়নিক পদার্থের ব্যবহারের কারণে অ্যাজমা রোগী বাড়ছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে বলে মনে করেন জাতীয় বক্ষব্যাধি ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. এস এম আব্দুর রাজ্জাক। অ্যাজমা রোগী বৃদ্ধি সঙ্গে বেড়েছে ইনহেলার ও অন্যান্য ওষুধ গ্রহণের হারও। তবে আশার কথা হলো, আধুনিক চিকিৎসায় এই রোগে মৃত্যুর হার কমছে। জীনগত কারণ ছাড়াও নানাবিধ দূষণ ও সচেতনতার অভাবে বাংলাদেশে এ্যজমা বা হাঁপানি রোগের প্রকোপ বেশ ভয়াবহ বলে উল্লেখ করছেন বিশেষজ্ঞরা। নগরায়ন ও পরিবেশ দুষনের কারণে অ্যাজমা বাংলাদেশে দিন দিন বেড়েই চলেছে।
তবে এতসবের মধ্যে হতাশার খবর হলো- দেশে প্রতি বছর যে ৪০ থেকে ৪৫ হাজার মানুষ অ্যাজমায় আক্রান্ত হচ্ছেন তারা সবাই কিন্তু বিশেষজ্ঞ চিকিৎকের সেবা নিতে পারছেন না। এর কারণ জানিয়ে জাতীয় বক্ষব্যাধি ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক ডা. খায়রুল আনাম বলেন, সরকারিভাবে দেশে মোট ১৫০ জন অ্যাজমা রোগের চিকিৎসক রয়েছেন। যার মধ্যে মাত্র ৩ জন অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক ১৩ জন আর ৩০ জন সহকারী অধ্যাপক রয়েছেন। অর্থাৎ প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। এমন পরিস্থিতিতে দেশে অ্যাজমা রোগীদের নিরবচ্ছিন্ন আধুনিক সেবা নিশ্চিতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। ##
পার্সটুডে/বাদশা রহমান/আশরাফুর রহমান/২
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।