সরকারের অঙ্গীকারে সহায়ক হবে মার্কিন ভিসানীতি: বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
https://parstoday.ir/bn/news/bangladesh-i123586-সরকারের_অঙ্গীকারে_সহায়ক_হবে_মার্কিন_ভিসানীতি_বাংলাদেশের_পররাষ্ট্র_মন্ত্রণালয়
বাংলাদেশের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকারের অঙ্গীকারে সহায়ক হবে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আজ (বৃহস্পতিবার) এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি নিয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
(last modified 2025-09-11T14:06:22+00:00 )
মে ২৫, ২০২৩ ১১:২৭ Asia/Dhaka
  • সরকারের অঙ্গীকারে সহায়ক হবে মার্কিন ভিসানীতি: বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

বাংলাদেশের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকারের অঙ্গীকারে সহায়ক হবে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আজ (বৃহস্পতিবার) এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি নিয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

গতকাল ( বুধবার) বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করার লক্ষ্যে নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই ভিসা নীতির আওতায় বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িতদের ভিসা দেয়ার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করবে দেশটি।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে ব্লিংকেন বলেছেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে চায় তাদের সকলকে সমর্থন দিতে তিনি এই নীতি ঘোষণা করেছেন।

এর প্রতিক্রিয়ায় আজ সকালে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সমুন্নত রাখতে সব পর্যায়ে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকারের দ্ব্যর্থহীন অঙ্গীকারের বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের এই ঘোষণাকে দেখতে চায় বাংলাদেশ।

বিবৃতিতে নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিকভাবে স্থিতিশীল দেশ এবং জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে ধারাবাহিক নির্বাচন অনুষ্ঠানের অভিজ্ঞতা রয়েছে। ২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচনের পর থেকে এটা স্পষ্ট যে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে অব্যাহত রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার কারণে দেশের জনগণ অভূতপূর্ব আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। ফলে ২০০৬ সালের ৪১ দশমিক ৫ শতাংশ দারিদ্র্য ২০২২ সালে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ এবং একই সময়ের মধ্যে চরম দারিদ্র্য ২৫ দশমিক ১ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে এসেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের একটি আন্তর্জাতিক রোল মডেল। ২০২৬ সালের মধ্যে জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) মর্যাদা থেকে স্নাতক হওয়ার যোগ্য হয়ে উঠেছে দেশটি। গত ১৪ বছরে আওয়ামী লীগ সরকার টানা তিন মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ার কারণে এটি অর্জন হয়েছে। বাংলাদেশের জনগণ তাদের গণতান্ত্রিক ও ভোটাধিকারের বিষয়ে অনেক বেশি সচেতন। ভোট কারচুপির মাধ্যমে জনগণের ম্যান্ডেট কেড়ে নিয়ে কোনো সরকারের ক্ষমতায় থাকার নজির নেই। জনগণের ভোটের অধিকারকে আওয়ামী লীগ সরকার রাষ্ট্রীয় পবিত্রতা বলে মনে করে। আর এই অধিকারের জন্য নিরলস সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের রাজনৈতিক ইতিহাস তার রয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সরকার সব শান্তিপূর্ণ ও বৈধ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য সভা-সমাবেশের স্বাধীনতাকে গুরুত্ব দেয়। বাংলাদেশে নির্বাচনী সংস্কার প্রক্রিয়া সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে জড়িত পরামর্শমূলক পদ্ধতিতে চলে থাকে। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের নেতৃত্বাধীন সরকার কর্তৃক তালিকাভুক্ত ১০ দশমিক ২৩ মিলিয়ন ভোটার তালিকা জালিয়াতির প্রতিক্রিয়া হিসেবে ফটোভিত্তিক ভোটার আইডি কার্ড ইস্যু করা হয়েছিল।

নতুন আইনে নির্বাচন কমিশন গঠনের কথা তুলে ধরে বিবৃতিতে বলা হয়, ভোটারদের পাশাপাশি ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ও এজেন্টদের মধ্যে আস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সের ব্যবহারকেও আদর্শ করা হয়েছে। জাতীয় নির্বাচন কমিশন পূর্ণ স্বাধীনতা, বিশ্বাসযোগ্যতা ও দক্ষতার সঙ্গে তার কাজ সম্পাদনের জন্য সজ্জিত রয়েছে। বর্তমান সরকার প্রথমবারের মতো প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২ জাতীয় সংসদ কর্তৃক প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়। সেই আইন অনুযায়ী নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। বাংলাদেশের সংবিধান এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর মাধ্যমে বাধ্যতামূলকভাবে, সব নির্বাহী যন্ত্র নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে থাকবে, যাতে এটি নির্দেশিতভাবে তার দায়িত্ব পালনে সহায়তা করতে পারে। সেই বিবেচনায় নির্বাচনের সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক আয়োজনের জন্য কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা সত্তার যেকোনো বেআইনি অনুশীলন বা হস্তক্ষেপ প্রতিরোধ ও মোকাবিলার জন্য সরকারি সংস্থা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, নির্বাচন কমিশনের স্বীকৃত আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রক্রিয়া কঠোর নজরদারির মধ্যে থাকবে। সরকার আশা করে যে, যারা স্থানীয় অগণতান্ত্রিক শক্তি, যারা সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ ও ধ্বংসযজ্ঞ চালায়, তারা সতর্ক থাকবে এবং সংবিধানের নির্দেশিত নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বিপন্ন করার তাদের বিভ্রান্তিকর প্রচেষ্টা থেকে বিরত থাকবে।

সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতে যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পদক্ষেপের প্রমংসা করে বিবৃতিতে বলা হয়, কঠোর পরিশ্রমে অর্জিত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং দেশে উন্নয়নের অর্জনকে টিকিয়ে রাখা সম্পূর্ণভাবে বাংলাদেশের জনগণের ওপর নির্ভর করে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রীর টেকসই অঙ্গীকারের পাশে যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়েছে বলে সরকার প্রশংসা করে।#

পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/২৫