খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার আবেদনে আইন মন্ত্রণালয়ের ‘না’
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।
আজ (রোববার) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রীর নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। আইনমন্ত্রী বলেন, 'স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে যে আবেদন এসেছে তাতে স্থায়ী জামিন ও চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার অনুমতি চাওয়া হয়েছে। এর আগে ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী দুটি শর্তে তাকে বাসায় থেকে চিকিৎসা নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। কাজেই আমরা নতুন করে আরেকটি আবেদন গ্রহণ করতে পারি না। আমাদের এ সুযোগ নেই।'
আইনমন্ত্রী বলেন, 'আইনের ৪০১ ধারায় কোনো দরখাস্ত যদি একবার নিষ্পত্তি করা হয়, সেই নিষ্পত্তিকৃত দরখাস্ত পুনঃবিবেচনা করার কোনো অবকাশ আর আইনে থাকে না। ঠিক সেই ফৌজদারি কার্যবিধি ৪০১ ধারার উপধারা ১,২,৩,৪,৫,৬ ব্যাখ্যা করে আমরা আমাদের মতামত পাঠিয়ে দিয়েছি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। সেখানে আমরা মতামত দিয়েছি, ৪০১ ধারার ক্ষমতাবলে যে দরখাস্ত নিষ্পত্তি করা হয়েছে, তা পাস্ট অ্যান্ড ক্লোজড ট্রানজেকশন। এটি খোলার আর কোনো উপায় নেই।'
এর আগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে মতামত দিয়েছেন, তাই আইনের অবস্থান এবং সেটাই সঠিক বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার ছোটভাই শামীম ইস্কান্দার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সঙ্গে দেখা করে বিদেশে চিকিৎসার আবেদন করেন। এরপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ আবেদন মতামতের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায়।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ আদালত। রায়ের পর তাকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রাখা হয়। এরপর ৩০ অক্টোবর এই মামলায় আপিলে তার সাজা আরও পাঁচ বছর বাড়িয়ে ১০ বছর করেন হাইকোর্ট।
একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেন একই আদালত।
২০২০ সালের মার্চে করোনা মহামারি শুরু হলে পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার নির্বাহী আদেশে দণ্ড স্থগিত করে খালেদা জিয়াকে শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেয়। এরপর থেকে মুক্তির মেয়াদ বাড়তে থাকায় তাকে আর কারাগারে যেতে হয়নি।#
পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/১