নিউইয়র্কে আওয়ামী লীগ নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করলেন আখতার হোসেন
-
জেএফকে বিমানবন্দরে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা ও অন্যরা
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে হামলার অভিযোগে আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মী ও সমর্থকদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন।
নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় অনুযায়ী বুধবার দিবাগত রাত ১টায় (বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা) জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরের পাশে পোর্ট অথরিটি পুলিশ ডিপার্টমেন্ট থানায় আখতার হোসেন মামলা করেছেন।
আজ (বৃহস্পতিবার) গণমাধ্যমে পাঠানো এক ভিডিও বার্তায় এনসিপির এই নেতা এ তথ্য জানান।
ভিডিও বার্তায় আখতার হোসেন বলেন, ‘এয়ারপোর্টে হামলার পরে আজ সন্ধ্যাবেলা আওয়ামী সন্ত্রাসীরা আবার হোটেলের লবিতে এসেছিল হামলা করার উদ্দেশ্যে। সে সময় যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত এনসিপির সদস্যরা এবং আমার শুভাকাঙ্ক্ষীরা তাদের প্রতিহত করেন এবং পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরবর্তী সময়ে পুলিশ ইনভেস্টিগেশন অফিসার এসে মামলা করার জন্য আমাদের পরামর্শ দেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আমি এয়ারপোর্টের খুব কাছের যে থানা রয়েছে, সেখানে গিয়েছি। যারা সেই দিন আমাদের ওপর হামলা করেছিল, হত্যাচেষ্টা করেছিল এবং থ্রেট দিয়েছিল, তাদের ব্যাপারে আমরা এখানে মামলা দায়ের করেছি।’
ওই মামলায় আখতার দুজনের নাম উল্লেখ করেছেন। পাশাপাশি ১৫ থেকে ২০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করেছেন।
মামলার অভিযোগে আখতার হোসেন বলেছেন, জেএফকে বিমানবন্দরে হামলার পরও এয়ারপোর্টের লবিতে এবং অন্যান্য জায়গায় নানাভাবে হেনস্তা করার চেষ্টা করেছে হামলাকারীরা।

ভিডিও বার্তায় আখতার আরও বলেন, ‘একই সঙ্গে ইউএস পুলিশকে আমরা এই বিষয়টা অবহিত করেছি যে যারা ওই ঘটনাগুলো যুক্তরাষ্ট্রে ঘটাচ্ছেন, তারা বাংলাদেশে নিষিদ্ধ এমন একটি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত, যারা গত বছর বাংলাদেশে গণহত্যা চালিয়েছেন। মানবতাবিরোধী অপরাধ চালিয়েছেন। ইউএন-এর (জাতিসংঘ) যে রিপোর্ট সে ব্যাপারে আমরা তাদের অবহিত করেছি, আমরা মনে করি যে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা তারা দেশে হোক দেশের বাইরে, যেখানেই হোক আমরা তাদের ব্যাপারে আইনগতভাবে যে প্রতিকারের ব্যবস্থা, সেটা আমরা গ্রহণ করব এবং আমরা এ কথা বিশ্বাস করি যে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা তারা যত ধরনের অপরাধ করেছেন, সে অপরাধগুলোকে আইনগতভাবেই নিষ্পত্তি করা সম্ভব এবং আওয়ামী লীগ তার সন্ত্রাস নিয়ে বাংলাদেশে আর ফিরে আসার সুযোগ পাবে না।’
বিমানবন্দরের ৪ নম্বর টার্মিনাল থেকে বের হওয়ার সময় স্থানীয় সময় ২২ সেপ্টেম্বর (সোমবার) বিকেল পাঁচটার দিকে আখতার হোসেনকে ডিম ছোড়েন আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মী ও সমর্থকেরা।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সফরসঙ্গী হিসেবে আখতার হোসেন সেখানে যান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমানকে ডিম ছুড়তে দেখা গেছে। এ ঘটনার পর বিএনপির এক কর্মীকে ছুরিকাঘাত করার অভিযোগে মিজানুরকে আটক করা হয়। পরে তিনি ছাড়াও পান।
আখতার হোসেনের সঙ্গে হাঁটছিলেন সফরসঙ্গী হিসেবে আসা বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা এ সময় তাসনিম জারাকে লক্ষ্য করে কটূক্তি করেন। তারা সেখানে বিক্ষোভ করেন।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সফরসঙ্গীরা ম্যানহাটনের গ্র্যান্ড হায়াত হোটেলে আছেন। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ সেখানে প্রতিবাদ করার অনুমতি নিয়ে ২২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় বিক্ষোভ করেন।
রাস্তার দুই পাশে পরস্পরবিরোধী স্লোগান দেয় এনসিপি ও আওয়ামী লীগ। সেখানে এনসিপি নেতা আখতার হোসেন এ ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের বিচার দাবি করেন।#
পার্সটুডে/জিএআর/২৫