বাংলাদেশে এবারের ঈদেও মহাসড়কে লাশের মিছিল; বিশেষজ্ঞের অভিমত
এবারও নিরাপদ করা গেলো না, ঈদের আগে পরে মানুষের রক্তে লাল হয়েছে সড়ক মহাসড়েকের কালো পিচ। আহতদের আর্তনাদে ভারি হয়েছে হাসপাতাল। ব্যতিক্রম নয় এবারের ঈদেও।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফাকা সড়কে বেপরোয়া গতি, চালক বিশ্রাম না পাওয়া, অনভিজ্ঞ চালক, সর্বোপরি আইনের যথাযথ প্রয়োগ না হওয়াতেই ঠেকানো যাচ্ছে না সড়ক দুর্ঘটনা।
সবশেষ শুক্রবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় বরযাত্রীবাহী মাইক্রোবাসের ৮ যাত্রী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো ২ জন। এছাড়া মাদারীপুর, টাঙ্গাইল, চট্টগ্রাম ও সুনামগঞ্জে আলাদা সড়ক দুর্ঘটনায় আরো ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন।
শুক্রবার সকালে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরের শশই এলাকায় যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই মাইক্রোবাসে থাকা বর আবু সুফিয়ানসহ ৭ জন নিহত হন। আহত হন আরো ৩ জন। পরে হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যায় আরও একজন।
এদিকে, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পুংলি এলাকায় ভোরে ঢাকামুখী যাত্রীবাহী একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই ৩ জন এবং হাসপাতালে আরো ২ জনের মৃত্যু হয়। চিকিৎসাধীন আছেন ১৫জন। এছাড়া মাদারীপুরের রাজৈরে বাস ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৪ জন নিহত এবং অন্তত ১২ জন আহত হয়। আর সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার পাগলা বাজার এলাকায় বিকেলে ট্রাকের ধাক্কায় নূরুল ইসলাম নামে এক পথচারী নিহত হয়েছেন। এছাড়া চট্টগ্রামের পটিয়া আমজুরহাট এলাকায় বাস ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে মাইক্রোচালক আবদুল মোনাফ নিহত হয়েছেন। এ দুর্ঘটনায় দুটি গাড়ির অন্তত ২০জন যাত্রী আহত হয়। অদক্ষ চালকের বেপরোয়া গতিকেই এসব দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করেন যাত্রী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা।
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, মোট দুর্ঘটনার ৩৫ শতাংশ ঘটে মহাসড়কের ৪ শতাংশ এলাকায়। সড়ক অবকাঠামো নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ ত্রুটি, চলাচল অযোগ্য যানবাহন, পথচারীদের অসচেতনতা আর অদক্ষ চালক মুলত এসব দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। দুর্ঘটনার পর পরিবহন মালিক ও চালককে জবাবদিহিতা করতে হয় না সেভাবে। তাই ফাঁকা সড়কে গতির প্রতিযোগিতায় প্রাণহাণি ঘটছে বলে জানান এক্সসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক ড. শামসুল হক।
দুর্ঘটনা এড়াতে মহাসড়কের ত্রুটি সারানো, লাইসেন্স ছাড়া কোন চালক রাস্তায় নামতে না দেয়া, চালকের যথাযথ বিশ্রামের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। সেইসঙ্গে নজরদারি বাড়াতে হবে সড়ক মহাসড়কে।#
পার্সটুডে/এসএম/এমবিএ/১৬