ডিসেম্বর ৩০, ২০১৮ ১৩:৪৩ Asia/Dhaka
  • সালমা ইসলাম, শামা ওবায়েদ, মিয়া গোলাম পরওয়ার, সুনীল শুভ রায়, ইকবাল হুসাইন, আবদুল হাকিম, আবুল কালাম আজাদ ও ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের
    সালমা ইসলাম, শামা ওবায়েদ, মিয়া গোলাম পরওয়ার, সুনীল শুভ রায়, ইকবাল হুসাইন, আবদুল হাকিম, আবুল কালাম আজাদ ও ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের

বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ব্যাপক কারচুপির অভিযোগে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকের ৩৬ জন প্রার্থী ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। এছাড়া, জাতীয় পার্টি সুনীল শুভ রায়, জহিরুল হক এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী সালমা ইসলামও ভোট বর্জন করেছেন।

ধানের শীষ প্রতীকের যেসব প্রার্থী এ পর্যন্ত যারা ভোট বর্জন করেছেন তারা হলেন ঢাকা-১৭ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী আন্দালিব রহমান পার্থ, খুলনা-১ বিএনপির প্রার্থী আমীর এজাজ খান, সিরাজগঞ্জ-৪ আসনের প্রার্থী জামায়াত নেতা মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, কুমিল্লা-১১ আসনের প্রার্থী জামায়াত নেতা ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের, খুলনা-৩ বিএনপির প্রার্থী রকিবুল ইসলাম বকুল, খুলনা-৪ বিএনপির প্রার্থী আজিজুল বারী হেলাল, খুলনা-৫ আসনের জামায়াত নেতা মিয়া গোলাম পরওয়ার, খুলনা-৬ আসনের জামায়াত নেতা আবুল কালাম আজাদ, ফরিদপুর-২ (নগরকান্দা–শালথা) আসনে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, পাবনা-৫ আসনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ইকবাল হুসাইন এবং ঠাকুরগাঁও-২ আসনের শীষের প্রার্থী কারাবন্দী জামায়াত নেতা আবদুল হাকিম, নীলফামারী-৩ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী জামায়াত নেতা অধ্যক্ষ আজিজুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী রুমানা মোর্শেদ কনক চাঁপা, সিরাজগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী রুমানা মাহমুদ, সিরাজগঞ্জ-৩ বিএনপির প্রার্থী আবদুল মান্নান তালুকদার, সিরাজগঞ্জ-৫ আসনে সাবেক ছাত্রনেতা আমিরুল ইসলাম খান আলিম এবং হবিগঞ্জ-৪ আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ড. আহমদ আবদুল কাদের। 

নির্বাচন বর্জনকারী ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের মধ্যে আরও রয়েছেন- ময়মনসিংহ-৯ আসনের খুররম খান চৌধুরী, নোয়াখালী-৪ আসনের মো. শাহজাহান, জামালপুর-২ আসনের এ,ই সুলতান মাহমুদ বাবুল, বাগেরহাট-৩ আসনের মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াদুদ শেখ, শেরপুর-২ আসনের মোহাম্মদ ফাহিম চৌধুরী, শেরপুর-৩ আসনের মো. মাহমুদুল হক রুবেল, জয়পুরহাট-১ আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী আ. স.ম মোক্তাদির তিতাস, যশোর-৫ আসনে বিএনপি প্রার্থী মুফতি ওয়াক্কাস, সাতক্ষীরা-৪ আসনে জামায়াত নেতা গাজী নজরুল ইসলাম, যশোর-১ শার্শা আসনের ধানের শীষের প্রার্থী বিএনপি নেতা মফিকুল হাসান তৃপ্তি, ময়মনসিংহ-৩ আসনের প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইকবাল হোসেন, ময়মনসিং-৫ আসনে জাকির হোসেন বাবলু, ময়মনসিংহ-৬ আসনে ইঞ্জিনিয়ার শামসুদ্দিন, ময়মনসিংহ-১১ আসনে ফখরুদ্দিন বাচ্চু, নাটোর-২ জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মজিবুর রহমান সেন্টু, বাগেরহাট-৩ আসনে জামায়াত নেতা মোহাম্মদ আবদুল ওয়াদুদ, বাগেরহাট-৪ আসনে জামায়াত নেতা মো. আবদুল আলীম, কিশোরগঞ্জ-১ বিএনপির রেজাউল করিম খান চুন্নু এবং কিশোরগঞ্জ-৩ ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী জেএসডি নেতা সাইফুল ইসলাম।

সিরাজগঞ্জে ধানের শীষের ৫ প্রার্থীর নির্বাচন বর্জন

সিরাজগঞ্জের ৬টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ৫টি আসনে ধানের শীষের প্রার্থীরা নির্বাচন বর্জন করেছেন। ভোট প্রদানে বাধা প্রদান, কেন্দ্রে এজেন্টদের প্রবেশ করতে না দেয়া এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করার অভিযোগে বেলা সাড়ে ১২টার পর থেকে দেড়টার মধ্যে প্রার্থীরা এ সিদ্ধান্ত নেন। প্রার্থীরা হলেন, সিরাজগঞ্জ-১ আসনে কণ্ঠশিল্পী রুমানা মোর্শেদ কনকচাপা, সিরাজগঞ্জ-২ আসনে সাবেক এমপি রুমানা মাহমুদ, সিরাজগঞ্জ-৩ আসনে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আব্দুল মান্নান তালুকদার, সিরাজগঞ্জ-৪ আসনে জামায়াত নেতা মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান ও সিরাজগঞ্জ-৫ আসনে সাবেক ছাত্রনেতা আমিরুল ইসলাম খান আলিম।

ময়মনসিংহে ধানের শীষের ৪ প্রার্থীর ভোট বর্জন

ময়মনসিংহে ধানের শীষের ৪ প্রার্থী ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। ভোট চলাকালে নানা অভিযোগ এনে আজ তারা নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। এসব প্রার্থীরা হলেন, ময়মনসিংহ-৩ আসনের প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইকবাল হোসেন, ময়মনসিং-৫ আসনে জাকির হোসেন বাবলু, ময়মনসিংহ-৬ আসনে ইঞ্জিনিয়ার শামসুদ্দিন ও ময়মনসিংহ-১১ আসনে ফখরুদ্দিন বাচ্চু। হামলা, কেন্দ্র দখল, ভোট ডাকাতির অভিযোগ এনে তারা বর্জনের ঘোষণা দেন।  

খুলনায় ৩ প্রার্থীর ভোট বর্জন

পোলিং এজেন্টের কেন্দ্রে ঢুকতে না দেয়ার অভিযোগ তুলে খুলনায় তিন আসনের তিন প্রার্থী ভোট বর্জন করেছেন। তাদের মধ্যে দুইজন ঐক্যফ্রন্টের। তারা হলেন খুলনা-৫ (ডুমুরিয়া-ফুলতলা) আসনের গোলাম পরওয়ার ও খুলনা-৬ (কয়রা-পাইকগাছা) আসনের আবুল কালাম আজাদ।

গোলাম পরওয়ার জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির। আর আজাদ জামায়াতে ইসলামীর খুলনা মহানগর আমির। তাদের প্রতীক ধানের শীষ।

অন্যজন হলেন খুলনা-১ (দাকোপ-বটিয়াঘাটা) আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী সুনীল শুভরায়।

গোলাম পরওয়ার রোববার সকাল ১০টায় ফুলতলায় সাংবাদিকদের বলেন, “১৩৩টা কেন্দ্রে আমার এজেন্টদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এছাড়া ভোটারদের বলা হচ্ছে, নৌকায় ভোট দিতে হবে। না হলে পুলিশে দেওয়া হবে। এভাবে চললে আমি কোনো ভোট পাব না। ফলে এই নির্বাচনকে আমি বৈধতা দেব না। তাই ভোট বর্জন করলাম।”

খুলনা-৬ (কয়রা-পাইকগাছা) আসনের ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের পক্ষেও একই অভিযোগ আনা হয়েছে। আজাদ নাশকতার মামলায় কারাগারে রয়েছেন।

এছাড়া ভোট বর্জন করেছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী সুনীল শুভরায়। তিনি অভিযোগ করেন, “আমার নেতাকর্মীরা ভোটকেন্দ্রে যেতে পারছে না। এজেন্টদের মারধর করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা এই ভোট বর্জন করছি।”

কুমিল্লা-১১ আসনে ধানের শীষের নির্বাচন বর্জন

কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) আসনে ধানের শীষের প্রার্থী জামায়াত নেতা ড. আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। রোববার সকাল ১১টায় তিনি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন।

ভোটকেন্দ্রে প্রবেশে ভোটার, নেতাকর্মী এবং প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদের বাধাসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। এই আসনে তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রেলমন্ত্রী মজিবুল হক।

ভোট বর্জন করে নতুন নির্বাচন চাইলেন সালমা ইসলাম

ঢাকা-১ আসনে ভোট বর্জন করেছেন বিএনপি সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী সালমা ইসলাম। ভোটের আগের রাতেই ব্যালট পেপারে সিল মেরে বাক্স ভর্তি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। আজ (৩০ ডিসেম্বর) বেলা ১২টার দিকে তিনি এই বর্জনের ঘোষণা দেন। এসময় তিনি নতুন করে নির্বাচনের দাবি জানান।

অভিযোগ তুলে ভোট বর্জন করলেন পার্থ

পোলিং এজেন্টদের মারধর, ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া, কোনো কোনো কেন্দ্রে ঢুকতে না দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ এনে ভোট বর্জান করেছেন ঢাকা-১৭ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী আন্দালিভ রহমান পার্থ।

রোববার  দুপুরে  ভোট বর্জনের কথা জানান তিনি। পার্থ বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ভোট বর্জন করছি। ৬০-৭০ কেন্দ্র ঘুরেছেন দাবি করে বলেন, সব কেন্দ্রেই আমার এজেন্ট ও সমর্থক ও ভোটারদের বাধা দেওয়া হচ্ছে। এটাই প্রমাণ করে দলীয় সরকারে অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না।

তবে তিনি সকালে ভোট দিয়েছেন বলে জানান। এই আসনে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক)।

যশোর-৫ আসনে বিএনপি প্রার্থী মুফতি ওয়াক্কাসের নির্বাচন বর্জন

যশোর-৫ মণিরামপুর আসনের ধানের শীষের প্রার্থী মুফতি ওয়াক্কাস নির্বাচনকে প্রহসন উল্লেখ করে তা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।  আজ রোববার বেলা ১২ টার দিকে মুফতি ওয়াক্কাসের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট আলহাজ্ব সফিকুল ইসলাম এই নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। একই সঙ্গে তিনি নিরপেক্ষ প্রশাসনের অধীনে পুন:নির্বাচন দাবি করেন।  

পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/৩০

খবরসহ আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সব লেখা ফেসবুকে পেতে এখানে ক্লিক করুন এবং নোটিফিকেশনের জন্য লাইক দিন

 

ট্যাগ