রূপপুরের পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে অনিয়মের ঘটনায় নির্বাহী প্রকৌশলীকে প্রত্যাহার
(last modified Wed, 22 May 2019 09:31:25 GMT )
মে ২২, ২০১৯ ১৫:৩১ Asia/Dhaka

পাবনার রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের গ্রিন সিটি প্রকল্পের বিভিন্ন কাজে অনিয়মের ঘটনায় নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদুল আলমকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। আজ (বুধবার) গণপূর্ত বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী শাহাদাৎ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, পাবনার নির্বাহী প্রকৌশলীকে প্রত্যাহার করে হেড অফিসে সংযুক্ত করা হয়েছে।

এর আগে গতকাল (মঙ্গলবার) বিকেলে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জানান, তারা বিষয়টিতে নজর রাখছে। মন্ত্রণালয়ের তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অতীতে এরকম অভিযোগের বেলায় সরকারের বিভিন্ন বিভাগ বা সংস্থার পাশাপাশি দুদককেও অনুসন্ধানে নামতে দেখা গেছে। রূপপুর দুর্নীতির অভিযোগ সম্পর্কে ভিন্ন কৌশল কেন- জানতে চাইলে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘শোনেন, আমাদের কতগুলো প্রজেক্ট আছে যেগুলো জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে হঠাৎ করে আপনি জাম্প করবেন, সেখানে চিন্তা-ভাবনা করতে হয়। এটা জাতীয় বিষয়, রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প বহুদিন ধরে চলছে। কিন্তু এটার বাস্তবায়নের কাজ মাত্র শুরু হয়েছে। এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের ও গুরুত্বপূর্ণ। সো জাস্ট ওয়েট। টেলিভিশনে দেখলাম একজন মন্ত্রী বলছেন যে, বেতন-ভাতা এগুলো সঠিক নয়। বালিশের ক্ষেত্রে এ রকম একটা পরিস্থিতি তো হতেও পারে।’

দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ

সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের আবাসন পল্লিতে আসবাবপত্র কেনাসহ অন্য আনুষঙ্গিক কাজে দুর্নীতি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এ নিয়ে দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে একজন অতিরিক্ত সচিব এবং গণপূর্ত অধিদপ্তর থেকে একজন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর নেতৃত্বে আলাদা দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সব ধরনের বিল পরিশোধ না করতে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রণালয়।

ওদিকে, রূপপুর প্রকল্পের দুর্নীতির অভিযোগে বিচারবিভাগীয় তদন্ত দাবি করে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করা হয়েছে। আদালত জানিয়েছে, এ সংক্রান্ত সরকারের দুটি কমিটির রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরই শুনানি করবেন তারা।

এ বিষয়ে আদালতে রিটকারীর আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইদুল হক সুমন জানিয়েছেন,  ঈদের পর এ সংক্রান্ত রিপোর্ট আদালতে এলে শুনানি হবে।

সোমবার (২০ মে) এ সংক্রান্ত রিটের শুনানিকালে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত অনিয়মের রিপোর্ট সঠিক হলে তা হবে বাংলাদেশের জন্য ভয়ঙ্কর সংবাদ। তবে তিনি পদ্শা সেতু নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গ টেনে বলেন, অভিযোগ সঠিক না বেঠিক তা  কেবল তদন্ত শেষে বলা যাবে।

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, রূপপুরকাণ্ডে গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্টে কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে, গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার পর পরমাণু শক্তি কমিশন এক বিজ্ঞপ্তিতে আসবাবপত্র কেনা নিয়ে কোনো কথা উল্লেখ না করলেও প্লান্টের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ভাতা নিয়ে গণমাধ্যমে খবরকে কাল্পনিক ও অনুমাননির্ভর বলে দাবি করেছে।#

পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/২২

খবরসহ আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সব লেখা ফেসবুকে পেতে এখানে ক্লিক করুন এবং নোটিফিকেশনের জন্য লাইক দিন

ট্যাগ