সৌদির সাথে মিল রেখে বাংলাদেশের কয়েকটি জেলায় ঈদ-উল আজহা পালিত
সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে আজ (রোববার) বাংলাদেশের কয়েকটি জেলায় পবিত্র ঈদ-উল-আজহা উদযাপিত হয়েছে। আজ সকালে এসব এলাকায় ঈদের নামাজ শেষে দেশ ও জাতির সমৃদ্ধি কামনায় দোয়া করা হয়। নামাজের পরে পশু কোরবানি এবং আত্মীয় ও দরিদ্রদের মাঝে কোরবানির গোশত বিতরণ করা হয়।
চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার শাহ সুফি মমতাজিয়া দরবার শরিফ, সাতকানিয়া মির্জাখিল দরবার শরীফ, পটিয়ার এলাহাবাদ দরবার শরীফ, শরীয়তপুরের শুরেশ্বরী দরবার শরীফ, পটুয়াখালীর বদরপুর দরবার শরীফ ও সাদ্রা দরবার শরিফ- এই ছয় দরবারের অনুসারিরা অনুসারীরা বহুদিনের রেওয়াজ অনুযায়ী সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোজা, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা পালন করে আসছেন।
চট্টগ্রাম:
চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার জাহাঁগিরিয়া শাহ সুফি মমতাজিয়া দরবার শরিফ ও সাতকানিয়া মির্জাখিল দরবারের অনুসারী দক্ষিণ চট্টগ্রামের চন্দনাইশ ও উত্তর চট্টগ্রামের প্রায় ৫০টি গ্রামের বাসিন্দারা আজ সকাল ৮টায় চন্দনাইশ দরবারের ঈদগাহ মাঠে ঈদুল আজহার জামাতে অংশ নেন। জামাত পরিচালনা করেন দরবার শরিফের পীর মাওলানা হজরত শাহ সুফি সৈয়দ মোহাম্মদ আলী।
পটুয়াখালী:
পটুয়াখালী জেলার বিভিন্ন উপজেলার ২৮ গ্রামে আজ ঈদ উদযাপিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে সকাল ৯টায় সদর উপজেলার বদরপুর দরবার শরীফে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার পীর মাওলানা মোহাম্মদ মোকলেসুর রহমানের অনুসারী হিসেবে ১৯২৮ সাল ধেকে তারা সৌদি আরবের সাথে সংগতি রেখে রোজা, ঈদ-ঊল-ফিতর, ঈদ-উল-আজহা সহ ইসলাম ধর্মীয় যাবতীয় আচার অনুষ্ঠান পালন করে আসছেন।
দিনাজপুর:
দিনাজপুরের সদর, চিরিরবন্দর, পার্বতীপুর, বিরামপুর ও কাহারোল এই পাঁচ উপজেলার কিছু এলাকায় পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপন করছে প্রায় দুই হাজার পরিবার। এসব পরিবারের মুসল্লিরা বিভিন্ন স্থানে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন।
আজ সকাল ৮টায় দিনাজপুর শহরের বাসুনিয়াপট্টিতে একটি কমিউনিটি সেন্টারে (পার্টি সেন্টার) অনুষ্ঠিত ঈদের জামায়াতে প্রায় দুইশ’ মুসল্লি অংশ নেন। এখানে ঈমামতি করেন মাওলানা সাইফুল ইসলাম। তিনি ঢাকার যাত্রাবাড়ী মাদ্রাসাতুল হাসিদের শিক্ষার্থী।
এছাড়াও জেলার চিরিরবন্দর উপজেলার সাইতাড়া ও রাবার ড্যাম এলাকা, কাহারোল উপজেলার জয়নন্দ ও গড়েয়া বাজার, বিরামপুর এবং পার্বতীপুর উপজেলার কয়েকটি গ্রামে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
চাঁদপুর:
অনুরুপভাবে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনায় চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ, ফরিদগঞ্জ, মতলব উত্তর, শাহরাস্তি ও কচুয়া উপজেলার ৪০টি গ্রামের অর্ধ লক্ষাধিক মুসলমানগন আজ রোববার পবিত্র ঈদ-উল আজহা উদযান করছেন। সৌদি আরবের সঙ্গে মিল থেকে দীর্ঘ ৮৯ বছর ধরে আগাম ঈদ পালন করে আসছেন এসব গ্রামের মানুষ। যার ধারাবাহিকতায় এবারও দেশের সময়সূচির সকাল থেকেই ঈদের নামাজ পড়ার জন্য দল বেধে মুসল্লিরা ঈদগায়ে সমবেত হয়ে সামাজ আদায় করেন।
লক্ষ্মীপুর:
লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার নোয়াগাঁও, জয়পুরা, বিঘা, বারো ঘরিয়া, হোটাটিয়া, শারশোই, কাঞ্চনপুর ও রায়পুর উপজেলার কলাকোপা গ্রামসহ ১০ গ্রামের বাসিন্দা আজ ঈদ উদযাপন করছেন। সকাল সাড়ে ১০টায় রামগঞ্জ উপজেলার নোয়াগাঁও বাজারের তালিমুন কোরআন নুরানি মাদ্রাসা মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
মাদারিপুর:
মাদারীপুর সদর উপজেলার ১০টি গ্রাম এবং শরীয়তপুরের ৬ উপজেলার ৩০টি গ্রামের কিছু অংশের লোকজন শরীয়তপুরের শুরেশ্বর পীরের মতাবলম্বী হিসেবে আজ কেই ঈদ-উল আজহা উদযাপন করছেন।
মাদারীপুরের একই অনুসারিদের ঈদের বড় জামাত আয়োজন করা হয়েছে সদর উপজেলার চরকালিকাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে।
মৌলভীবাজার:
সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে মৌলভীবাজারের শতাধিক পরিবারের মুসল্লিরা ঈদ-উল আজহার নামাজ আদায় করেছেন। সকাল সোয়া ৭টায় জেলা শহরের সার্কিট হাউস এলাকায় এই ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন উপজেলার নারী-পুরুষ অংশ নেন। নামাজে ইমামতি করেন আব্দুল মাওফিক চৌধুরী।
তিনি জানান, বিগত ১৩ বছর ধরে আমরা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে তারা এ ধর্মীয় বিধানটি পালন করে থাকেন।
সাতক্ষীরা:
সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে রবিবার সাতক্ষীরার আট গ্রামে ঈুদল আজহা পালিত হয়েছে। সকাল সাড়ে ৭টায় সদর উপজেলার বাউখোলায় ঈদুল আজহার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ইমামতি করেন মাওলানা মহব্বত আলী।
ঈদের জামায়াতে বাউখোলা, সাতানি, ভাদড়া, নলতা, খুলনার ডুমুরিয়া ও পাইকগাছাসহ ৮ গ্রামের শতাধিক মানুষ নামাজ আদায় করেন।#
পার্সটুডে/ আব্দুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/১১
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।