শিগগিরই প্রকাশিত হচ্ছে 'মহাবীর কাসেম সোলাইমানি' শীর্ষক বই
(last modified Sun, 23 Feb 2020 15:07:13 GMT )
ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২০ ২১:০৭ Asia/Dhaka
  • বইয়ের প্রচ্ছদ
    বইয়ের প্রচ্ছদ

ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী আইআরজিসি'র কুদস ফোর্সের প্রধান লে. জেনারেল কাসেম সোলাইমানির জীবন ও কর্ম নিয়ে বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত হতে যাচ্ছে একটি তথ্যবহুল গ্রন্থ।

বইটির সম্পাদকমণ্ডলীর সিনিয়র সদস্য মুহাম্মদ মুনীর হুসাইন খান রেডিও তেহরানকে জানিয়েছেন, 'মহাবীর কাসেম সোলাইমানি: সাম্রাজ্যবাদ ও সন্ত্রাসবাদবিরোধী অমর সেনানায়ক' শীর্ষক বইটি প্রকাশনার কাজ শেষ পর্যায়ে। আগামী এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে এটি বাজারে আসবে। ২৫০ পৃষ্ঠার এই বইটির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য শিগগিরই জানানো হবে।  

বইটি প্রকাশের উদ্দেশ্য সম্পর্কে তিনি জানিয়েছেন, "জেনারেল সোলাইমানি আজীবন আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদবিরোধী এবং বিশ্ব-মজলুমের পক্ষে সংগ্রামের এক অগ্রবর্তী সেনানি। তাঁর শাহাদাতের ঘটনায় বাংলাদেশের গণতন্ত্রপ্রিয় স্বাধীনচেতা জনগণ যেমন শোকার্ত এবং ক্ষুব্ধ হয়েছে তেমনি সমগ্র বিশ্বের শান্তিকামী মানুষও হয়েছে কিংকর্তব্যবিমূঢ়। আধিপত্যবাদবিরোধী এই মহানায়কের জীবন ও কর্মের সঙ্গে যথাসম্ভব পরিচয় করিয়ে দেওয়ার সচেতন ও নৈতিক দায়িত্ববোধ থেকেই এই গ্রন্থ প্রকাশের প্রয়াস পেয়েছি আমরা।"

গ্রন্থের বিষয়বস্তু সম্পর্কে তিনি জানান, "এই গ্রন্থের লেখাগুলো একান্তই নিরাবেগ বাস্তবতার স্মারক। শহীদ সোলাইমানির জীবনের জানা-অজানা তথ্যাবলি যাচাই বাছাই করে তুলে ধরার ক্ষেত্রে আমাদের চেষ্টা ছিল একান্তই আন্তরিক। গ্রন্থে শহীদ সোলাইমানির মাতৃভাষা ফারসির বিভিন্ন ডকুমেন্টের অনুবাদ স্থান পেয়েছে। অন্তত বিশটি দেশি-বিদেশি বস্তুনিষ্ঠ তথ্যবহুল প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয়েছে। ‘জীবন্ত শহীদ’ খ্যাত জেনারেল সোলাইমানি বহু বক্তব্য রেখেছেন, গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। এরকম কিছু বক্তৃতা এবং তাঁর জীবনের সর্বশেষ দীর্ঘ একটি সাক্ষাৎকার এই গ্রন্থে স্থান পেয়েছে। কৌতূহলি ধীমান পাঠকগণ তাঁর বক্তব্য এবং সাক্ষাৎকার থেকে তাঁর সম্পর্কে নতুন করে জানার সুযোগ পাবেন বলে আমাদের বিশ্বাস।"

মহাবীর কাসেম সোলাইমানি সম্পর্কে মুনীর হুসাইন খান বলেন, "বিশ্বের আধিপত্যবাদী শক্তিগুলোর সরাসরি মদদে গড়ে ওঠা ইসলামের স্বরূপ বিকৃতকারী ‘ইসলামি স্টেট’ নামক চরমপন্থি, দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে জেনারেল সোলাইমানি বিচিত্র কৌশলে নির্ভীকচিত্তে লড়ে গেছেন আজীবন। সেই সুদূরপ্রসারি কৌশলেরই অংশ হলো বিভিন্ন অঞ্চলে প্রতিরোধ ফ্রন্ট গড়ে তোলা। শহীদ সোলাইমানি চলে গেছেন তাঁর কাঙ্ক্ষিত মঞ্জিলে। কিন্তু তাঁর গড়ে তোলা সেই প্রতিরোধ ফ্রন্টগুলো নিরন্তর সংগ্রাম চালিয়ে যাবে উগ্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে। সন্ত্রাসবাদ ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে বিশ্বের স্বাধীনতাকামী জনতার সংগ্রামী চেতনায় দুর্বার সাহস ও শক্তির প্রেরণা সঞ্চার করে গেছেন তিনি। এখানে একটি বিষয় মনে রাখা দরকার, তা হলো শহীদ সোলাইমানি শুধু একজন সামরিক ব্যক্তিত্বই ছিলেন না, বরং তিনি একজন দূরদর্শী কূটনীতিকও ছিলেন। বলাবাহুল্য, যেই সফরে গিয়ে ইরাকের বাগদাদ বিমানবন্দরে তিনি শহীদ হয়েছেন সেই সফরটি ছিল ইরাক সরকারের আমন্ত্রণে তাঁর একটি কূটনৈতিক সফর। সৌদি আরবের সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক উন্নয়নের চলমান সংলাপে অংশ নিতেই তিনি ওই সফরে গিয়েছিলেন। এরকম নেপথ্য বহু তথ্যে সমৃদ্ধ এই গ্রন্থটি।"

তিনি আরও বলেন, "শহীদ সোলাইমানি একজন ভালো সংগঠক এবং সমন্বয়কও ছিলেন। মুসলমানদের বিভিন্ন মাজহাবসহ দল-উপদলের মধ্যকার বিরোধ মীমাংসা করে সহৃদয় সমন্বয়েরও প্রয়াস পেয়েছেন তিনি। এতসব সত্ত্বেও বিভিন্ন দেশের নিরীহ মুসলমানরা সাম্রাজ্যবাদী মিডিয়ার অপ্রপ্রচারে বিভ্রান্তির শিকারে পরিণত হয়েছেন। তাঁদের সচেতন দৃষ্টি আর মননকে উজ্জীবিত করে প্রকৃত সত্য সম্পর্কে সম্যক অবহিত হবার ক্ষেত্রে এই গ্রন্থ সহায়ক হবে বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস। এই গ্রন্থে অনেক দুর্লভ ছবিও স্থান পেয়েছে যা গ্রন্থটিকে একদিকে যেমন প্রামাণ্য করে তুলেছে তেমনি করে তুলেছে বস্তুনিষ্ঠ ও সর্বজনগ্রাহ্য।"

মার্কিন সন্ত্রাসী হামলায় শহীদ জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে নিয়ে সম্প্রতি ঢাকার প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান অন্যধারা থেকেও একটি বই প্রকাশিত হয়েছে।  জীবন্ত   শহীদ: সোলাইমানী   হত্যার   নেপথ্য   কাহিনী শীর্ষক বইটি লিখেছেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট সাহিত্য-অনুবাদক ও সাংবাদিক প্রমিত হোসেন। #

পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/২৩

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ