ত্রাণের দাবিতে দিনাজপুরে অবরোধ, বরগুনায় মৃতের নামে চাল উঠিয়ে ডিলারের আত্মসাৎ
-
দিনাজপুরে ত্রাণের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ
বাংলাদেশের উত্তরের জেলা দিনাজপুরে ত্রাণের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করেছেন চার গ্রামের মানুষ। আজ (শনিবার) দিনাজপুর-রংপুর মহাসড়কের সদর উপজেলার ১ নম্বর চেহেলগাজী ইউনিয়নের বটতলি এলাকার চার গ্রামের কয়েকশ' ত্রাণবঞ্চিত মানুষ সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত পাঁচ ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। অবরোধের ফলে মহাসড়কের দুই পাশে পাঁচ ঘণ্টা ধরে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।
সড়ক অবরোধের খবর পেয়ে দিনাজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাগফারুল আব্বাসী ঘটনাস্থলে গিয়ে ত্রাণ দেয়ার আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেন বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা।
তারা জানান, সদর উপজেলার ১ নম্বর চেহেলগাজী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডে এ যাবত কোনো ধরনের ত্রাণ বিতরণ হয়নি। ইউনিয়নের বেশিরভাগ লোক ইজিবাইক চালান। দিনে কয়েক ঘণ্টা ইজিবাইক চালিয়ে যা আয় হয় তা ইজিবাইকের মালিককে দিতে হয়। তাদের কাছে কিছু থাকে না। এ অবস্থায় সংসার চলছে না। বাড়িতে তাদের খাবার নেই। বাধ্য হয়ে মহাসড়ক অবরোধ করেছেন তারা।
পিরোজপুরে ত্রাণ প্রার্থীদের ওপর হামলা
এদিকে, পিরোজপুরের নাজিরপুরে ত্রাণ চাওয়া নিয়ে হামলায় ২ নারীসহ ৭ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার রাতে উপজেলার দীর্ঘা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ছৈলাবুনিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হচ্ছেন, ফুল মালা বেগম (৬০), সুফিয়া বেগম (৪৫), কদম আলী শিকদার (৫৫), সাব্বির হাওলাদার (২২), রাজু শিকদার (৫০), রফিক বেপারী (৫০) ও আব্দুল আজিজ বেপারী (৬০)
নাজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন গুরুতর আহত সুফিয়া বেগম বলেন, রাতে স্থানীয় ইউপি সদস্যর কাছে সরকারি আর্থিক সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে এ নিয়ে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায় তার লোকজন হামলা করলে আমরা কয়েকজন আহত হই।
স্থানীয়রা জানান, ওই ইউপি সদস্য সম্প্রতি স্থানীয়দের সরকারি ঘরসহ বিভিন্ন সাহায্য দেওয়ার কথা বলে টাকা নিয়েছেন। পরে সরকারি অনুদানের টাকা দেওয়ার তালিকায় স্বজনপ্রীতি করেছেন।
বরগুনায় ডিলারের চাল আত্মসাৎ
দক্ষিণের জেলা বরগুনার আমতলীতে মো. জাহাঙ্গীর হোসেন হাওলাদার নামে এক ডিলারের বিরুদ্ধে মৃত ব্যক্তি ও কার্ডধারীদের নামে চাল উঠিয়ে আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে ওজনে কম দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে ইতোমধ্যেই উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর ডিলার জাহাঙ্গীর হোসেনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন ভুক্তভোগী কয়েরকটি পরিবার।
ত্রাণের তালিকায় নয়-ছয়
সম্প্রতি করোনা সাহায্য হিসেবে মোবাইল ফোনে অসহায় পরিবার প্রতি ২,৫০০ টাকা নগদ অর্থ সাহায্যের তালিকায় পক্ষপাতিত্ব করা ও জনপ্রতিনিধিদের নিজেদের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে অনেকজনের নাম দিয়ে তালিকা প্রস্তুতেরও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মানবিক সহায়তার তালিকায় বাগেরহাটের শরণখোলায় ৪০ জন মানুষের নামের পাশে নিজের মোবাইল নম্বরজুড়ে দিয়েছেন রাকিব হাসান নামক একজন ইউপি সদস্য। শুধু তাই নয়, ত্রাণের তালিকায় চৌকিদার এবং সরকারি সুবিধাভোগী বা সচ্ছল পরিবারেরও নাম অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় অনিয়মকারী ইউপি সদস্যকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
একই রকম জোচ্চুরির অভিযোগ এসেছে হবিগঞ্জ জেলার লাখাই উপজেলা থেকে। দরিদ্র-নিম্ন আয়ের মানুষের মোবাইল নম্বরে সরাসরি এই টাকা পাঠানোর নির্দশনা দেয়া হলেও একই মোবাইল নম্বর ভিন্ন নামে ব্যবহার হয়েছে সর্বোচ্চ ২শ বার। তালিকায় অন্তর্ভূক্তকরা হয়েছে স্বচ্ছল ব্যক্তি এবং জনপ্রতিনিধির আত্মীয়-স্বজনের নামও।
তালিকা পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, মুড়িয়াউক ইউনিয়নে ৪টি মোবাইল নম্বর ব্যবহার হয়েছে ৩০৬ জনের নামের পাশে। আর এই নম্বরগুলো পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম মলাইয়ের ঘনিষ্টজনদের। এছাড়া তালিকায় যুক্ত হয়েছে জনপ্রতিনিধিদের আত্মীয়-স্বজন ও স্বচ্ছল ব্যক্তিদের নাম। রয়েছেন স্বামী-স্ত্রীসহ একই পরিবারের একাধিক সদস্যও। এলাকায় বসবাস করেন না এমন লোকের নামও লেখা হয়েছে ত্রাণের তালিকায়।
তবে অভিযোগ সম্পর্কে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তাড়াহুড়া করতে গিয়ে অসাবধানতাবশত: এসব ঘটনা ঘটেছে। এটা সংশোধন করা হবে।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/১৬
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।