বাংলাদেশে আবারও ঝড়ের শঙ্কা, ৪ সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত
https://parstoday.ir/bn/news/bangladesh-i80194-বাংলাদেশে_আবারও_ঝড়ের_শঙ্কা_৪_সমুদ্রবন্দরে_৩_নম্বর_সতর্ক_সংকেত
ঘূর্ণিঝড় আম্পানের রেশ কাটতে না কাটতেই উপকূলীয় এলাকায় আর একটি ঝড়ের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। ইতোমধ্যেই দেশের সকল সমুদ্রবন্দরসমূহে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।
(last modified 2025-09-11T14:06:22+00:00 )
মে ২৬, ২০২০ ১৮:২৪ Asia/Dhaka
  • বাংলাদেশে আবারও ঝড়ের শঙ্কা, ৪ সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত

ঘূর্ণিঝড় আম্পানের রেশ কাটতে না কাটতেই উপকূলীয় এলাকায় আর একটি ঝড়ের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। ইতোমধ্যেই দেশের সকল সমুদ্রবন্দরসমূহে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।

আজ (মঙ্গলবার) দুপুরে আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দরে উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

আবহাওয়ার অফিসের এক সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরসমূহকে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য ও অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তি দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২ থেকে ৪ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলসমূহে উপর দিয়ে দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সেই সাথে বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টিসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার আভ্যন্তরীন নদীবন্দরসমুহকে ১ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়ে লণ্ডভণ্ড চাঁপাইনবাবগঞ্জের দু’টি গ্রাম

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর ইউনিয়নের কাজিগ্রামের একাংশ ও কলকলিয়া গ্রাম ঘূর্ণিঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে।

ঈদের দিন (সোমবার) সন্ধ্যায় আকস্মিক এই ঝড়ে বাড়ি-ঘর, বিদ্যুতের খুঁটি, শতাধিক গাছ-পালা, পাকা বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গাছ ও বাড়ির দেয়াল ভেঙ্গে কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছেন।

গোমস্তাপুর ফায়ার স্টেশনের ফায়ারম্যান রেজাউল করিম সোমবার রাত সাড়ে ৯টায় জানান, গোটা গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তার উপর উপড়ে ও ভেঙে পড়েছে গাছপালা। কাঁচা বাড়ি-ঘর ভেঙে পড়েছে, উড়ে গেছে টিনের ছাউনি। ঝড়ের পর থেকেই তারা গাছপালা ও বিদ্যুতের খুঁটি সরানোর কাজ করছেন।

লালমনিরহাটের ১০ মিনিটের ঝড়ে লন্ডভন্ড ১০ গ্রাম

এর আগে ঈদের দিন সকালে উত্তরের জেলা লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলায় ১০ মিনিটের ঝড়ের তাণ্ডবে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে অর্ধশত ঘরবাড়ি। আহত হয়েছেন অন্তত পাঁচজন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে।

সোমবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার চলবলা ইউনিয়নের ১০টি গ্রামে কালবৈশাখী ঝড় আঘাত হানে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকালে হঠাৎ করে আকাশে ঘন মেঘ দেখা দেয়ার পরপরই ঝড় শুরু হয়। প্রচণ্ড ঝড়ো বাতাসে মুহূর্তেই অর্ধশত বসতবাড়ি, গাছপালা, বিদ্যুৎতের খুঁটি, সবজি ক্ষেত, ধান ক্ষেত লন্ডভন্ড হয়ে যায়। ঝড়ে উড়ে যায় ঘরের টিন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো এখন খোলা আকাশের নিচে মাবনবেতর জীবন কাটাচ্ছে। ঝড়ে শিশু শিক্ষার্থীদের বই-খাতাসহ অনেক কিছুই নষ্ট হয়ে গেছে। এ সময় ঝড়ে অন্য জায়গায় আশ্রয় নিতে গিয়ে পাঁচজন আহত হয়েছেন।

তিস্তার বাঁধ ভেঙে দুটি গ্রাম প্লাবিত

এদিকে, আজ (মঙ্গলবার) ভোর রাতে লালমনিরহাটে সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নের চর গোকুন্ডা গ্রামে তিস্তার ডান তীরের একটি বাঁধ ভেঙে দুটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

এসময় বাঁধে বসবাসকারী ১১টি বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে বলে জানিয়েছেন গোকুন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তাফা স্বপন। নিজের বসতবাড়ি রক্ষা করতে গিয়ে ওই এলাকার দুলু মিয়ার ছেলে আবু সাইদ (২২) বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে মারা গেছেন।
চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তাফা স্বপন জানান, বাঁধের পাশেই অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন এবং  তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চর গোকুন্ডার ডান তীর বাঁধটি মঙ্গলবার সকালে ধসে গিয়ে দুটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ভাঙনরোধে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড  ইতিমধ্যেই ব্যবস্থা গ্রহন করেছে।

সিরাজগঞ্জে নৌকাডুবি: নিখোঁজ ৩০

সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার এনায়েতপুরে যমুনা নদীতে অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে নৌকাডুবির ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন অন্তত ৩০ জন। নিখোঁজদের উদ্ধারে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা অভিযান শুরু করেছেন।

স্থল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এনায়েতপুর থেকে অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে নৌকাটি চৌহালীর দিকে যাওয়ার পথে স্থলচর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিখোঁজদের উদ্ধারে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা কাজ করছেন।#

পার্সটুডে/ আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/২৬

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।