ইউনাইটেড হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিপূরণ প্রদানে দেওয়া হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত
-
হাইকোর্ট
রাজধানী ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডে কোভিড-১৯ ইউনিটের পাঁচজন রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ আজ সাময়িকভাবে স্থগিত করে দিয়েছে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।
হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে বেসরকারি ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়েরকৃত আবেদনে সাড়া দিয়ে চেম্বার বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান মঙ্গলবার এ আদেশ দেন। আইনজীবীরা জানিয়েছেন, ইউনাইটেডের আবেদনটি আগামী ১৬ আগস্ট আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য রেখে সে পর্যন্ত হাইকোর্টের আদেশটির কার্যকারিতা স্থগিত করেছে চেম্বার আদালত। ক্ষতিপূরণ প্রশ্নে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সমঝোতায় আসতে না পারায় বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ গত ১৫ জুলাই ক্ষতিগ্রস্ত চার পরিবারকে ১৫ দিনের মধ্যে ৩০ লাখ টাকা করে দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।

গতকাল (সোমবার) হাইকোর্টের সে আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করে ইউনাইটেড হাসাপাতাল কর্তৃপক্ষ। প্রাথমিক শুনানির পর হাই কোর্টের আদেশ স্থগিত করল চেম্বার আদালত। উল্লেখ্য, গত ২৭ মে রাতে গুলশানের বেসরকারি ওই হাসপাতালের প্রাঙ্গণে কোভিড-১৯ রোগীদের জন্য স্থাপিত আইসোলেশন ইউনিটে আগুন লেগে পাঁচজন রোগীর মৃত্যু হয়। তাদের মধ্যে তিনজন ছিলেন কোভিড-১৯ পজিটিভ রোগী। ওই ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও গাফিলতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে কমিটি গঠন এবং নিহতদের পরিবারকে পাঁচ কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে গত ৩০ মে একটি রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী নিয়াজ মুহাম্মদ মাহবুব ও শাহিদা সুলতানা শিলা।

এছাড়া এ ঘটনার বিচারিক তদন্ত চেয়ে ১ জুন আরেকটি রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী রেদওয়ান আহমেদ ও হামিদুল মিসবাহ। কেন বিচারিক তদন্ত করা হবে না- সে বিষয়ে রুলও চাওয়া হয় এ রিটে। গত ২ জুন প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রাজউক, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ১৪ জুনের মধ্যে ঘটনার প্রতিবেদন দিতে বলে হাইকোর্ট। ইতোমধ্যে পুলিশের দেওয়া প্রতিবেদনে ইউনাইটেড হাসপাতালের গাফিলতির কথা বলা হয়েছে। রাজউক জানায়, করোনাভাইরাসের জন্য আলাদা করে আইসেলেশন ইউনিট করার অনুমতি নেয়নি ইউনাইটেড কর্তৃপক্ষ।
এদিকে ইউনাইটেড হাসাপাতালের আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান খানের ভাষ্য, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী তারা ক্ষতিগ্রস্ত সবার পরিবারের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যে পরিমাণ অর্থ দিতে চেয়েছিল, তাতে রাজি হয় নি চার পরিবার। অগ্নিকাণ্ডে মৃত একজনের পরিবার শুধু ২০ লাখ টাকায় সমঝোতায় সম্মত হয়। পরে গত ১৫ জুলাই বিষয়টি হাই কোর্টকে জানানো হলে আদালত ৪ পরিবারকে ১৫ দিনের মধ্যে ৩০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দেয়।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/এনএম/২১
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।