কুয়েতে পাপুলের কারাদণ্ড ‘বাংলাদেশের জন্য দুঃখজনক ও লজ্জাজনক’: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মানবপাচারের দায়ে কুয়েতের আদালতে লক্ষ্মীপুরের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম পাপুলের কারাদণ্ড হওয়াকে ‘বাংলাদেশের জন্য দুঃখজনক ও লজ্জাজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন।
পাপুলের সাজার দুই দিন পর শনিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই মন্তব্য করেন। শনিবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন মেঘনায় প্রথম বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমেটিক টেনিস টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা জানেন উনি আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন না, উনি স্বতন্ত্র ছিলেন। এটা খুবই দুঃখজনক। দেশের নাগরিক বিদেশে অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হলে আমাদের লজ্জা লাগে। আমাদের প্রত্যেকের জন্য এটা একটা লজ্জার বিষয়। তবে রায়ের বিষয়ে কুয়েত সরকার এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি। উনার বিচার হয়েছে সেটা পত্রপত্রিকার মারফতে শুনেছি। কুয়েত সরকারের আনুষ্ঠানিক বক্তব্য জানার জন্য আমাদের রাষ্ট্রদূতকে বলা হয়েছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে জানলে তখন পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
তবে পাপুলের সাজার ফলে কুয়েতের সঙ্গে সম্পর্কে ভাটা পড়বে না জানিয়ে মোমেন বলেন, ‘কুয়েতের সাথে আমাদের সম্পর্ক খুব সলিড ও পুরোনো। বঙ্গবন্ধুর সময় থেকে একটি ভালো সম্পর্ক। এই একটি ঘটনায় আমাদের সম্পর্কে কোনো ঘাটতি হবে না।’

পাপুলের দায়ভার বিএনপির: হানিফ
এদিকে, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেছেন, বিএনপি সরকারের আমলে দুর্নীতি করে অর্থ-সম্পদের মালিক হয়েছেন পাপুল। তাই এর দায়ভার বিএনপিকেই নিতে হবে।
দায়িত্ব আওয়ামী লীগের: দুদু
এ প্রসঙ্গে বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু রেডিও তেহরানকে বলেন, বিএনপি আমলে পাপুল বা হানিফ সাহেবদের নাম শোনা যায়নি, এখন তারা সম্পদ পাহাড় গড়েছেন কিভাবে তা দেশবাসী জানেন। পাপুল স্বতন্ত্রভাবে সংসদ পদে বিজয়ী হলেন এবং তার স্ত্রী মহিলা কোটায় এমপি হলেন- এটাতো আওয়ামী লীগের হাল আমলের কথা। এর দায়িত্ব তো তাদের নিতে হবে।

এদিকে, নৈতিক স্খলনের দায়ে লক্ষীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শহীদুল ইসলাম পাপুলের সংসদ সদস্য পদ থাকা উচিত নয় বলে মনে করছেন আইনজীবীরা।
কুয়েতের আদালতে মানবপাচার মামলায় গত বৃহস্পতিবার লক্ষীপুরের সংসদ সদস্য শহীদুল ইসলাম পাপুলের ৪ বছরের জেল হয়। সেই সাথে তাকে ৫৩ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়। তবে কুয়েতের গণমাধ্যম বলছে এ রায়ে সন্তুষ্ট নয় দেশটির পাবলিক প্রসিকিউটর দপ্তর। আর তাই পাপুলের সাজা বাড়ানোর জন্য আবেদন করা হবে। পাপুলের আইনজীবীও এ রায় বাতিলের একটি আবেদন করবে। সব মিলিয়ে কুয়েতের আদালতে পাপুলের আইনি লড়াইটা দীর্ঘ হতে যাচ্ছে বলে ধারনা করা হচ্ছে।

মানবপাচারে ঘুষ নেয়ার মামলায় শাস্তি হলেও এখনো রায় হয়নি অর্থপাচার মামলার। কাজেই সে মামলায়ও পাপুলের কী শাস্তি হয় তার দিকেও নজর থাকবে সবার। আর দেশে পাপুল ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে যে মামলা তার তদন্তও নির্ধারিত সময়ে শেষ হবে বলে জানালেন আইনজীবী।
অন্যদিকে নির্বাচনী হলফনামায় শিক্ষাগত যোগ্যতার যে সনদ দিয়েছিলেন পাপুল তা নিয়ে লক্ষীপুরের এক ব্যক্তি হাইকোর্টে তার সংসদ সদস্য পদ চ্যালেঞ্জ করেছিলেন। সেই মামলাটিও রোববার দ্রুত শুনানির জন্য আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে রিটকারী আইনজীবী।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/৩১
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।