ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২১ ১৬:০২ Asia/Dhaka

বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় কৃষি পণ্য আলু নিয়ে আবারও সঙ্কটে  পড়েছেন উৎপাদনকারী কৃষক। গত বছরের আলুর দাম বেড়ে যাবার কারণে এবারের মৌসুমে চাষীরা অধিক জমিতে আলু চাষ করেছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকার কারণে এবার ফলন ভালো হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি অর্থবছরে চার লাখ ৬৮ হাজার হেক্টর জমিতে এক কোটি ১৩ লাখ ৭১ হাজার টন আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে, যা গত বছরের প্রকৃত উৎপাদনের চেয়ে প্রায় সাড়ে  চার লাখ টন বেশি। অধিদপ্তরের হিসাবমতে, দেশে বছরে আলুর চাহিদা মাত্র ৭৭ লাখ টন। অর্থাৎ, বছরে ২৬ থেকে ৩৭ লাখ টন আলু উদ্বৃত্ত থেকে যাচ্ছে। বছরে রপ্তানি হচ্ছে মাত্র ৩৫ থেকে ৫০ হাজার টন।

তবে এ সময় বাজারে আলুর দাম কম থাকায় হতাশ কৃষক। লোকসানের  আশঙ্কা তারা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত।

কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ গণমাধ্যমকে  জানান, গত বছর তারা আলুর উৎপাদন খরচ ঠিক করেছিলেন কেজিপ্রতি ৮ দশমিক ৩২ টাকা এবং পরে বাজারে বিক্রির জন্য গড় দাম ২১-২২ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। তার পরও প্রতিবছর জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে উৎপাদন মৌসুমে আলুর দরপতন ঘটে।

তিনি বলেন, যে হারে আলুর উৎপাদন বাড়ছে, সে অনুযায়ী এর বহুমুখী ব্যবহার ও রপ্তানির ব্যবস্থা না হলে কৃষককে বিপাকে পড়তে হয়।

তবে কৃষি মন্ত্রণালয় বলছে, কৃষকের দুঃখ দূর করতে তারা রপ্তানি ও শিল্পে ব্যবহারযোগ্য এবং আগাম জাতের আলু চাষে জোর দিচ্ছে। এ জন্য ২০১৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছর মেয়াদি ৫৯৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্প চলমান রয়েছে। প্রকল্পের আওতায় নীলফামারীর ডোমারে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) খামারে আগাম জাতের, উচ্চ ফলনশীল, রপ্তানি ও শিল্পে ব্যবহার উপযোগী আলু এবং আলুবীজের চাষ হচ্ছে। এ খামারে ৫১৬ একর জমির মধ্যে আলু চাষের উপযোগী ৩১০ একর। চলতি ২০২০-২১ উৎপাদন বর্ষে ২৫৬ একর জমিতে বীজ আলু উৎপাদন হয়েছে।  

দেশের সম্ভাবনাময় ফসল আলু। চাহিদা মিটিয়ে প্রতিবছর প্রচুর উদ্বৃত্ত থাকলেও এ থেকে কৃষক ও দেশের অর্থনীতি কাঙ্ক্ষিত সুফল পাচ্ছে না। কারণ, বাণিজ্যিকভাবে দেশে আলুর বহুমুখী ব্যবহার নেই; অন্যদিকে রপ্তানির ক্ষেত্রে যে ধরনের আলুর চাহিদা রয়েছে, সেটির উৎপাদন এখনও নিশ্চিত করা যায়নি। অন্যদিকে, চাহিদার চেয়ে বেশি উৎপাদন ও সংরক্ষণাগারের অভাবে ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষক।

কৃষি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বর্তমানে সারাদেশে ২৮টি জোনের ৩০টি হিমাগার রয়েছে, যার বর্তমান ধারণক্ষমতা মোট ৪৫ হাজার ৫০০ টন। এ প্রকল্পের মেয়াদে দুই হাজার টন ধারণক্ষমতাসম্পন্ন চারটি হিমাগার নির্মাণ করা হবে। ফলে বিএডিসির বীজ আলুর সংরক্ষণক্ষমতা উন্নীত হবে ৫৩ হাজার ৫০০ টনে। এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ২০২৯-৩০ সালের মধ্যে বীজ আলু উৎপাদন ৬০ হাজার টনে উন্নীত করা হবে।#

পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/১৯

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ