বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক স্বাধীনতা ‘আংশিক মুক্ত’: ফ্রিডম হাউসের প্রতিবেদন ও প্রতিক্রিয়া
‘বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারের কোনো উন্নতি হয়নি। বরং ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশের নাগরিক স্বাধীনতার অবনতি হয়েছে।’ যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ফ্রিডম হাউসের বার্ষিক প্রতিবেদনে এমন মন্তব্য করা হয়েছে। ‘ফ্রিডম ইন দ্য ওয়ার্ল্ড ২০২১ ডেমোক্রেসি আন্ডার সিজ’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি গতকাল (বুধবার) প্রকাশিত হয়েছে।
বিশ্বের ১৯৫টি দেশ ও ১৫টি অঞ্চলের গণতান্ত্রিক স্বাধীনতার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে প্রতিবেদনে। প্রতিবছরের মতো এবারের প্রতিবেদনে রাজনৈতিক ও নাগরিক অধিকার, এ দুই বিষয় বিবেচনায় নিয়ে গণতান্ত্রিক স্বাধীনতার স্কোর নির্ণয় করা হয়েছে।
এ প্রতিবেদনে গণতন্ত্রের মানদণ্ডে ১০০ পয়েন্টের মধ্যে এবার বাংলাদেশের অর্জন ৩৯। সে অনুযায়ী, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক স্বাধীনতা এখন ‘আংশিক মুক্ত’ দেশের কাতারে রয়েছে।
আগের বছর ২০২০ সালেও বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৩৯। ২০১৯ সালে স্কোর ছিল ৪১। তার আগে ২০১৮ সালে ৪৫ এবং ২০১৭ সালে ছিল ৪৭। গত কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশ গণতন্ত্রের মানদণ্ডে ‘আংশিক মুক্ত’ দেশের কাতারে অবস্থান করছে।
এ প্রসঙ্গে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক রেডিও তেহরানকে বলেন, বিগত এক যুগের অপশাসন দুঃশাসন এবং নিপীড়নের কবলে পড়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে এসে একটি ভয়াবহ শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় পৌঁছেছে।
সাইফুল হক উল্লেখ করেন, পাকিস্তানি সরকার আমাদের ভাষার অধিকার কেড়ে নিতে চেয়েছিল আর বর্তমান আওয়ামী সরকার আমাদের কথা বলার অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। ধর্মান্ধ গোষ্ঠী মুক্তমনা লেখকদের কুপিয়ে হত্যা করছে আর এ সরকার স্বাধীন মত দমনে ভিন্ন কায়দায় নাগরিকদের মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
তিনি দৃঢ়তার সাথে বলেন, দেশের মানুষ এমন অবস্থা মেনে নেবে না। এর বিরুদ্ধে জনমত সংগঠিত করে গণআন্দোলন গড়ে তোলা হবে এবং গণতন্ত্রকে পূর্ণাঙ্গরূপে কার্যকর করা হবে।
ফ্রিডম হাউসের ওয়েবসাইটে বাংলাদেশের সম্পর্কে বলা হয়েছে, বিরোধী দল, তাদের জোটের শরিক, সমালোচক মিডিয়া ও নাগরিক সমাজের কণ্ঠস্বরকে ধারাবাহিকভাবে হয়রানির মাধ্যমে রাজনৈতিক শক্তি সুসংহত করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দুর্নীতি একটি মারাত্মক সমস্যা এবং দুর্নীতিবিরোধী প্রচেষ্টাগুলো রাজনৈতিক ক্ষমতার প্রয়োগে দুর্বল হয়ে পড়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে একাধিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে এবং দায়মুক্তির নজিরও আছে। ২০১৬ সাল থেকে দেশে ইসলামি চরমপন্থার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।
প্রতিবেদনের গত ১০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গণতান্ত্রিক স্বাধীনতা সংকুচিত হওয়া দেশগুলোর যে তালিকায় প্রকাশ করা হয়েছে সেখানে বাংলাদেশের অবস্থান ৭ নম্বরে। বাংলাদেশের নিচে অবস্থান করছে মালি, তুরস্ক, তানজানিয়া, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক, ভেনেজুয়েলা ও নিকারাগুয়া।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/৩
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।