বিএনপির স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী কর্মসূচি প্রত্যাহার রহসজনক: কাদের
মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গড়ার শপথ নিন-হাসিনা; এ সরকারের হিংস্রতা আদিম- বিএনপি
গণতন্ত্র, ন্যায় বিচার আর মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা নিয়ে ৫০ বছর আগে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে জন্ম হয়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশের। স্বাধীনতার এই অর্ধশত বছর পূর্তিতে দাঁড়িয়ে দেশের মানুষ আজ বুঝতে পারছেন, মুক্তিযুদ্ধের সেসব আকাঙ্ক্ষা আজও পূর্ণতা পায়নি।
তবে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে সব ভেদাভেদ ভুলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গড়ার শপথ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণে তিনি এ আহ্বান জানান।
এ প্রসঙ্গে রাজনৈতিক বিশ্লেষক শারমীন মুরশিদ মনে করেন, দেশের শাসক গোষ্ঠী, রাজনৈতিক শক্তি এবং সচেতন নাগরিকরা যদি দৃঢ় রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষা প্রদর্শন না করেন তা হলে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে না।
এদিকে, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে প্রচারিতই এক বিবৃতিতে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, স্বাধীন দেশে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করা সকল নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, বর্তমান অবৈধ ভোটারবিহীন সরকার জনগণের সকল গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার হরণ করছে। দেশে এখন আওয়ামী সরকারের আদিম হিংস্রতা বিরাজ করছে।
তিনি উল্লেখ করেন, বৃহস্পতিবার যুব অধিকার পরিষদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ বাধা প্রদান, লাঠি চার্জ, টিয়ার-শেল, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ ও গুলি বর্ষণ করেছে এবং ছাত্রলীগ ন্যক্কারজনক হামলা চালায়। পুলিশ ও ছাত্রলীগের এই বর্বরোচিত হামলায় ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরসহ শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়। এই হামলা প্রমাণ করে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার কতটা অগণতান্ত্রিক, নির্মম, ফ্যাসিবাদী ও কর্তৃত্ববাদী।
ওদিকে, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে দলীয় কর্মসূচি পালনে পুলিশের অনুমতি না পেয়ে এবং করনা সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণ দেখিয়ে বি এন পি তাদের কর্মসূচী ৩০ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত করে দিয়েছে।
বুধবার বিকেলে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক খন্দকার মোশাররফ হোসেন কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেন। এ সময় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও উপস্থিত ছিলেন।
খন্দকার মোশাররফ জানান, বিএনপির কর্মসূচির মধ্যে ২৫ মার্চ আলোচনা সভা, ২৬ মার্চ সুবর্ণজয়ন্তীর শোভাযাত্রা ও ৩০ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সুবর্ণজয়ন্তীর সমাবেশ ছিল। এ সব কর্মসূচির কোনোটিরই তারা অনুমতি পাননি।
তবে করোনাভাইরাসের কারণ দেখিয়ে বিএনপির স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের কর্মসূচি প্রত্যাহার করাকে ‘রহস্যজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ইতিহাসের অনেক মীমাংসিত বিষয় নিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়বে জেনেই বিএনপি ২৫ ও ২৬ মার্চ কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছে।
অপরদিকে, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী পালন অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকায় আগমনের প্রতিবাদে রাজধানীতে এবং ঢাকার বাইরে বিক্ষোভ করেছে ইসলামী দলসমূহ, বাম রাজনৈতিক জোট, প্রগতিশীল ছাত্র জোট ও সাধারণ ছাত্র যুব অধিকার পরিষদ।
তবে ছাত্রদের এরকম কর্মসূচিতে পুলিশ এবং সরকারি দলের ছাত্র সংগঠন হামলা চালিয়ে অনেক বিক্ষোভকারীকে আহত ও গ্রেপ্তার করেছে। #
ARK-26/