বাংলাদেশে করোনায় ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু  ১১২
https://parstoday.ir/bn/news/bangladesh-i93916-বাংলাদেশে_করোনায়_২৪_ঘণ্টায়_মৃত্যু_১১২
মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে দেশের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং ইবতেদায়ি ও কওমি মাদ্রাসার চলমান ছুটি আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
(last modified 2025-11-11T14:44:42+00:00 )
জুন ২৯, ২০২১ ১৮:৫২ Asia/Dhaka
  • বাংলাদেশে করোনায় ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু  ১১২

মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে দেশের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং ইবতেদায়ি ও কওমি মাদ্রাসার চলমান ছুটি আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

সারাদেশে করোনা পরিস্থিতি আরও অবনতি হওয়ায় ও কঠোর লকডাউন কার্যকর থাকায় শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মচারী ও অভিভাবকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও সার্বিক নিরাপত্তা বিবেচনায় এবং কোভিড ১৯ সংক্রান্ত জাতীয় পরামর্শক কমিটির সঙ্গে পরামর্শক্রমে এ ছুটি বাড়ানো হয়েছে।

এর আগের ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ৩০ জুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কথা ছিল। কিন্তু নতুন করে আবার কঠোর লকডাউন ঘোষণা করায় ফের অনিশ্চিত হয়ে পড়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়টি।

এদিকে আজ মঙ্গলবার (২৯ জুন) শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে জাতীয় সংসদে আসন্ন ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনাকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানান, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের করোনা টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে। টিকা কার্যক্রম সম্পন্ন হলে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া হবে। আর করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে।

২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু  ১১২; শনাক্তের হার ২৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ

স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আজ মঙ্গলবার (২৯ জুন) সকাল আটা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ পর্যন্ত করোনায় দেশে মোট মৃত্যু হয়েছে ১৪ হাজার ৩৮৮ জনের।
২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৭ হাজার  ৬৬৬ জন। এ নিয়ে মোট শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৯ লাখ ৪ হাজার ৪৩৬ জনে। 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনামুক্ত হয়েছেন ৪ হাজার ২৭ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৮ লাখ ১১ হাজার ৭০০ জন। 
২৪ ঘণ্টায় ৩২ হাজার ৬৫৯ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পরীক্ষা করা হয়েছে ৩১ হাজার ৯৮২টি। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ২৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ। দেশে এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৬৫ লাখ ৭৩ হাজার ৮২২টি। মোট পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৭৬ শতাংশ। 

গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ১১২ জনের মধ্যে ৩৫ জন খুলনার। এছাড়া ঢাকায় ২২, চট্টগ্রামে ১৬, রাজশাহীতে ২১, বরিশালে ৩, সিলেটে ১, রংপুরে ১০ এবং ময়মনসিংহে ৪ জন মারা গেছেন।

মারা যাওয়াদের মধ্যে ৬৭ জন পুরুষ এবং ৪৫ জন নারী। এদের মধ্যে ১৩ জন বাসায় মারা গেছেন। হাসপাতালে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে ১ জনকে। বাকিরা হাসপাতালে মারা গেছেন। 

এ পর্যন্ত ভাইরাসটিতে মোট মারা যাওয়াদের মধ্যে পুরুষ ১০ হাজার ২৫৩ জন এবং নারী ৪ হাজার ১৩৫ জন।

বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে ৬১ জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি। এছাড়া ৫১ থেকে ৬০ বছরের ২৪, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ১০, ৩১ থেকে ৪০ বছরের ১৪, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ২ জন এবং ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ১ জন মারা গেছেন।  

রাজশাহীতে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড 

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা ইউনিটে সর্বোচ্চ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। আজ মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে আগের ২৪ ঘণ্টায় এখানে ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত বছর দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের পর এই হাসপাতালে মৃত্যুর সর্বোচ্চ রেকর্ড এটি। এর আগে এখানে সর্বোচ্চ ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছিল।   

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে আগের ২৪ ঘণ্টায় মৃত ২৫ জনের মধ্যে নয়জন করোনা পজিটিভ ছিলেন। আর ১৬ জন মারা গেছেন উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায়। মৃতদের মধ্যে রাজশাহীরই ১২ জন। এ ছাড়া পাঁচজন চাঁপাইনবাবগঞ্জের, পাঁচজন নাটোরের, দুজন নওগাঁর ও একজন চুয়াডাঙ্গার। এ নিয়ে চলতি মাসের ২৯ দিনে হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা গেলেন ৩৪৩ জন। 

পরিচালক জানান, হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ৪০৫টি বেডের বিপরীতে রোগী ভর্তি আছে ৪৫৯ জন। এদের মধ্যে করোনা পজিটিভ রোগী ভর্তি আছেন ১৮২ জন, সন্দেহভাজন ২৩৪ জন ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে করোনা নেগেটিভ রোগী আছেন ৪৩ জন। মোট রোগীর মধ্যে ৩০৭ জনই রাজশাহী জেলার 

রাজশাহীর দুটি পিসিআর ল্যাবে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহী, নওগাঁ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৬৩৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২০৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। রাজশাহীতে শনাক্তের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৬ দশমিক ৯২ শতাংশ, আগের দিন যা ছিলো ২৭ দশমিক ৮৪ শতাংশ। 
তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জে শনাক্তের হার কমেছে। আগের দিন এই হার ১৮ দশমিক ১৮ শতাংশ থাকলেও সর্বশেষ শনাক্ত হয়েছে ১৬ দশমিক ৭৯ শতাংশ। আর নওগাঁয় শনাক্ত হয়েছে ৩৮ দশমিক ০৯ শতাংশ।
যশোরে  শনাক্তের হার ৪৮ শতাংশ।

এ ছাড়া, খুলনা বিভাগে করোনায় আক্রান্ত হয়ে একদিনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায়  নতুন করে রেকর্ড ১ হাজার ৩৬৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ জুন) বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক রাশেদা সুলতানা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের দফতর সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের মধ্যে যশোরে সর্বোচ্চ আটজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া বাগেরহাটে পাঁচজন, খুলনায় চারজন, কুষ্টিয়ায় চারজন, নড়াইলে তিনজন, মেহেরপুরে দুইজন, চুয়াডাঙ্গায় দুজন, মাগুরায় দুইজন, ঝিনাইদহে একজন এবং সাতক্ষীরায় একজন মারা গেছেন।

যশোরে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ৩০৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। করোনা ও উপসর্গ নিয়ে যশোর জেনারেল হাসপাতালে মারা গেছেন ১২ জন। 
যশোর স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৬৪০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৩০৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার প্রায় ৪৮ শতাংশ। আজ মারা গেছেন ১২জন। এদের মধ্যে ৮ জন করোনা এবং অপর ৪ জন করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছে ১৫৯ জন। 

যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, যশোর জেনারেল হাসপাতালের করোনা রোগীর চাপ বেড়েছে সেক্ষেত্রে ডাক্তার ও নার্স সংকট রয়েছে। এই ডাক্তার ও নার্স দিয়ে চিকিৎসা দিতে সমস্যা হচ্ছে কারণ করোনা রোগীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আজ আমাদের এখানে সেন্ট্রাল অক্সিজেনের মধ্যে লিকুইড অক্সিজেন ঢোকানো হচ্ছে। সেন্ট্রাল অক্সিজেন যখন আমরা লিকুইড অক্সিজেন থেকে পাবো তখন অক্সিজেনের সরবরাহের  আর সমস্যা হবে না। #

পার্সটুডে/এআরকে/২৯