বাংলাদেশে করোনায় একদিনে ২১২ জনের মৃত্যুর রেকর্ড: শনাক্ত ১১,৩২৪
বাংলাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ২১২ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা দেশে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু। এর আগে বৃহস্পতিবার ১৯৯ জন এবং বুধবার মৃত্যু হয় ২০১ জনের। জুলাইয়ের ১ তারিখ থেকে প্রতিদিন মারা যাচ্ছেন ১৩০ জনের বেশি মানুষ। সবমিলিয়ে এখন পর্যন্ত করোনায় মোট ১৬ হাজার ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আজ (শুক্রবার) স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে পাঠানো করোনা-বিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ২১২ জনের মধ্যে খুলনা বিভাগেরই ৭৯ জন। এছাড়া ঢাকায় ৫৩, চট্টগ্রামে ২৬, রাজশাহীতে ২৩, বরিশালে ৫, সিলেটে ৬, রংপুরে ১২ এবং ময়মনসিংহে ৮ জন মারা গেছেন। মৃতদের মধ্যে ১১৯ জন পুরুষ এবং ৯৩ জন নারী। এদের মধ্যে ১৬ জন বাসায় মারা গেছেন। বাকিরা হাসপাতালে মারা গেছেন। এ পর্যন্ত ভাইরাসটিতে মোট মারা যাওয়া ১৬ হাজার ৪ জনের মধ্যে পুরুষ ১১ হাজার ২৫৪ জন এবং নারী ৪ হাজার ৭৫০ জন।
এদিকে, স্থানীয় প্রতিনিধিদের মাধ্যমে সংগৃহীত তথ্য প্রকাশ করে গণমাধ্যমে উল্লেখ করা হয়েছে, রাজধানী বাদে দেশের ২০ জেলাতে করোনা ও উপসর্গ নিয়ে ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ২০৬ জন। এর মধ্যে দেশের উত্তর ও দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে মারা গেছেন ২০২ জন।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ১১ হাজার ৩২৪ জন। এ নিয়ে মোট শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১০ লাখ ৫৪৩ জনে। এর আগে বৃহস্পতিবার ১১ হাজার ৬৫১ জনের করোনা শনাক্ত হয়, যা এক দিনে ছিল সর্বোচ্চ। তার আগে মঙ্গলবার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১১ হাজার ৫২৫ জন শনাক্ত হন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ৩৯ হাজার ২০৯ জনের। পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৬ হাজার ৫৮৬টি। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ৩০ দশমিক ৯৫ শতাংশ। দেশে এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৬৯ লাখ ৩ হাজার ২৬৮টি। মোট পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ৪৯ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা আরও হয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৬ হাজার ৩৮ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৮ লাখ ৬২ জন ৩৮৪ জন।
লাগামহীন করোনার ভয়াবহ বিস্তারে বিপর্যস্ত বেশিরভাগ জেলা। সেখানে হাসপাতালগুলোতে চরম শয্যা ও অক্সিজেন সংকট। রোগীদের নিয়ে এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ছোটাছুটি করছেন স্বজনরা। যথাযথ চিকিৎসা না পেয়েও মারা যাচ্ছেন অনেকে।
গত ২৪ ঘণ্টায় (বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) তথ্য অনুযায়ী, সব চেয়ে বেশি রোগী মারা গেছে একক জেলা হিসেবে কুষ্টিয়ায়। আর সর্বোচ্চ শনাক্তের হার পাওয়া গেছে ফরিদপুরে ৫২ দশমিক ২ শতাংশ।
খুলনা:
খুলনা বিভাগে করোনাভাইরাস সংক্রমনের ঊর্ধ্বমুখী ধারা বজায় রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগটিতে করোনা ও উপসর্গে আরও ৭১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় আক্রান্ত হয়েছে ১ হাজার ৬৫৬ জন।
শুক্রবার (৯ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিভাগীয় পরিচালক রাশেদা সুলতানা এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, এ বিভাগে শনাক্তের হার কমলেও মৃত্যু হার বেশি। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ৪৫ শতাংশ।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের দফতর সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের মধ্যে সর্বোচ্চ ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে খুলনা জেলায়। বাকিদের মধ্যে কুষ্টিয়ায় ১৪ জন, ঝিনাইদহে ১০ জন, চুয়াডাঙ্গায় ছয়জন, মেহেরপুরে পাঁচজন, বাগেরহাটে দুজন, নড়াইল ও মাগুরায় একজন করে মারা গেছেন।
রাজশাহী:
রাজশাহী মেডিকেলে একদিনে মারা গেছেন ১৮ জন। তাদের মধ্যে রাজশাহীর ১০ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর ও নওগাঁর ৬ জন এবং কুষ্টিয়া ও সিরাজগঞ্জের একজন করে। তবে কমেছে সংক্রমণের হার।
উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা বগুড়ার তিনটি হাসপাতালে মারা গেছেন ১৬ জন । শনাক্তের হার ৩০ শতাংশ।
এছাড়াও করোনা ও উপসর্গ নিয়ে ১৪ জন করে মারা গেছেন ময়মনসিংহ, ফরিদপুর ও যশোরে। ঝিনাইদহে ১৩ জন ও চট্টগ্রামে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনা ও উপসর্গ নিয়ে।
গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম ৩ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/৯
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।