বাংলাদেশে সড়কে নৈরাজ্য, হয়রানি এবং ঝুঁকি: সরকারের আন্তরিকতার অভাবকে দায়ী
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি অভিযোগ করেছে, সড়ক মহাসড়কে প্রতিমাসে ৩০০ কোটি টাকার চাঁদাবাজি হচ্ছে৷ নতুন সড়ক পরিবহন আইন হয়েছে কিন্তু তা কার্যকর হতে দেখছি না। এ আইনে লাইসেন্স পারমিটের জন্য দুই হাজার টাকার বদলে ১০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হচ্ছে৷ শুধুমাত্র সরকার চায় না বলেই সড়কে নৈরাজ্য থেকেই যাচ্ছে।
সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি আয়োজিত যাত্রী অধিকার দিবস উপলক্ষে ‘যাত্রী হয়রানি ও ভাড়া নৈরাজ্য বন্ধের কার্যকর পদক্ষেপ চাই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ অভিযোগ করেন।
গণপরিবহনে যাত্রী হয়রানি, ভাড়া নৈরাজ্য, বিশৃঙ্খলা, অরাজকতা, সড়কে দুর্ঘটনা, অন্যায্য ও অগ্রহণযোগ্য কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে দাবি আদায়ের প্রতীকী দিবস হিসেবে দেশে তৃতীয়বারের মতো যাত্রী অধিকার দিবস পালিত হচ্ছে। এবার দিবসটির মূল প্রতিপাদ্য- ‘যাত্রী হয়রানি ও ভাড়া নৈরাজ্য বন্ধের কার্যকর পদক্ষেপ চাই’। আলোচনা সভায় বিশিষ্টজনেরা গণপরিবহনে যাত্রী হয়রানি ও ভাড়া নৈরাজ্য রুখতে পরিবহন মালিক শ্রমিক সংগঠন ও সরকারের সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন । তারা বলছেন, দীর্ঘ লকডাউন শেষে চালু হওয়া গণপরিবহনে যাত্রী হয়রানি ও ভাড়া নৈরাজ্য এখন চরমে পৌঁছেছে।
অনুষ্ঠানে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, সড়কে বারবার মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে৷ নিরাপদ সড়কের কথা বলা হচ্ছে, আবার সড়কে নৈরাজ্যও আমরা দেখতে পাচ্ছি৷ এ দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় বছরে হাজারো মানুষ মারা যান৷ অথচ করোনায় প্রথম বছরে মারা গেছেন ছয় হাজার মানুষ৷
টিনি ঊল্লে৩খ করেন, পৃথিবীর সব দেশের মধ্যে বাংলাদেশে সড়কে নৈরাজ্য, হয়রানি এবং ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি৷ এসব সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব সরকারের৷ জীবনের অধিকার সবচেয়ে বড় অধিকার৷ এ অধিকার নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রকে এগিয়ে আসতে হবে৷ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হলে মামলা হলেও মানুষ বিচার পাচ্ছে না৷ পরিবহন খাতে অসম প্রতিযোগিতা চলছে৷ এসব নৈরাজ্য বন্ধ করতে হবে। এ দাবি শুধু আমার নয়, এ দাবি যাত্রীদের, এ দেশের ১৭ কোটি মানুষের।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য শরীফুজ্জামান শরীফ বলেন, বিশ্বের আর কোনো দেশে চেকপোস্ট বসিয়ে পরিবহন মালিকরা গাড়ি থেকে টাকা আদায় করে না। কিন্তু বাংলাদেশে তা সম্ভব। সরকার আন্তরিক হলে পরিবহন মালিক, শ্রমিক ও যাত্রীদের অধিকার আদায় করা সম্ভব। শুধুমাত্র সরকার চায় না বলেই সড়কে নৈরাজ্য থেকেই যাচ্ছে।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, সড়কে প্রতিমাসে ৩০০ কোটি টাকার চাঁদাবাজি হচ্ছে৷ নতুন সড়ক পরিবহন আইন হয়েছে কিন্তু তা কার্যকর হতে দেখছি না। এ আইনে লাইসেন্স পারমিটের জন্য দুই হাজার টাকার বদলে ১০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হচ্ছে৷ তাহলে কি আমরা ঘুষের টাকা বাড়ানোর জন্য আন্দোলন করেছি।##
পার্সটুডে/ আব্দুর রহমান খান/বাবুল আখতার/১৩
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।