বাংলাদেশে মানিকগঞ্জে করোনা উপসর্গ নিয়ে এক স্কুলছাত্রীর মৃত্যু: অভিভাবকমহলে আতঙ্ক
বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি অনেকটা সহনীয় হয়ে এলে মাত্র দশদিন দেশের সব প্রাথমিক ও মাধ্যমমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে, বুধবার সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জে করোনা উপসর্গ নিয়ে সুবর্ণা ইসলাম রোদেলা নামে এক স্কুলছাত্রী মারা গেছে।
মানিকগঞ্জ জেলা শহরের বেউথা এলাকার বশির উদ্দিন মোল্লার মেয়ে রোদেলা মানিকগঞ্জ এস কে সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জোবায়দা খানম জানান, গত ১৫ সেপ্টেম্বর রোদেলা বিদ্যালয়ে এসে ক্লাস করে। এর পর সে আর স্কুলে আসেনি। তিন দিন আগে জ্বর ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হলে প্রথমে বাসাতেই চিকিৎসা চলছিল। অবস্থা খারাপ হলে গতকাল তাকে স্থানীয় মুন্নু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে ঢাকার কুর্মিটোলা বিশেষায়িত হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. আনোয়ারুল আমিন আখন্দ জানান, মুন্নু হাসপাতালে মেয়েটির সিটিস্ক্যান করা হয়। এতে তার ফুসফুসের ৩০ ভাগে প্রদাহ দেখা দেয়। ওই হাসপাতালে তার করোনা পরীক্ষা করা হয়নি।
এর আগে চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার ড. মনসুরউদ্দীন মহিলা কলেজের তিনজন শিক্ষার্থী ও গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় ফেরধোরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
করোনার উপসর্গ নিয়ে মানিকগঞ্জে স্কুলছাত্রী মৃত্যুর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে করে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসের বিন্দুমাত্র উপসর্গ থাকলে কোনো শিক্ষার্থীকে যেন স্কুলে না পাঠানো হয়। শিক্ষামপ্নত্রী জানান, মানিকগঞ্জের ঐ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষার্থীদের করোনা টেস্ট করা হয়েছে এবং সবার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে।
আজ বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ডা. জোহরা বেগম কাজী ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে স্মারক গ্রন্থ প্রকাশ অনুষ্ঠান শেষে শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, ‘আমাদের সবাইকে চোখ-কান খোলা রাখতে হবে। আমরা অভিভাবকদের বলেছি, কোনো শিক্ষার্থীর বিন্দু পরিমাণ উপসর্গও যদি থাকে বা তার বাড়িতে কারও উপসর্গ থাকে, তাহলে শিক্ষার্থীকে স্কুলে পাঠানো যাবে না।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের বাড়িতে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসার পথে করোনা সংক্রমণ হতে পারে। আমরা এ বিষয়ে সতর্ক আছি। কোথাও এমন কিছু ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে কন্ট্রাক্ট ট্রেসিং করা হবে। তবে আশার কথা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এখন পর্যন্ত এমন ঘটনা ঘটেনি।’
ডা. দীপু মনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীর ক্লাসে উপস্থিতি নিয়ে চাপ দেওয়া যাবে না। দেখতে হবে, সে কেন উপস্থিত হলো না। কিন্তু কোনভাবেই জোর করা যাবে না। কারণ কোনো শিক্ষার্থী শ্রেণিকক্ষে পাঠগ্রহণ না করতে পারলেও তার জন্য অনলাইন ও টিভিতে এখনো ক্লাস চালু আছে।’
চার মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন মৃত্যু
এদিকে, দেশে একদিনে করোনা সংক্রমণে চার মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন ২৪ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর আগে গত ২৭ মে একদিনে মৃত্যু হয়েছিল ২২ জনের । আজ বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ১৪৪ জনের। শনাক্তের হার ৪ দশমিক ৬১ শতাংশ। #
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/বাবুল আখতার/২৩
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।