মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত কেজরিওয়ালের: ‘নাটক’ বলছে বিজেপি
(last modified Sun, 15 Sep 2024 11:43:30 GMT )
সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৪ ১৭:৪৩ Asia/Dhaka
  • মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত কেজরিওয়ালের: ‘নাটক’ বলছে বিজেপি

আবগারি মামলায় জামিনে মুক্তি পাওয়ার দুই দিন পর দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ও আম আদমি পার্টির (আপ) সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়াল পদত্যাগের কথা জানালেন।

আজ (রোববার) বেলা ১১টা নাগাদ এই ঘোষণা দেন কেজরিওয়াল। দুই দিনের মধ্যেই তিনি মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করবেন বলে জানালেন।

কেজরিওয়ালের জায়গায় কে মুখ্যমন্ত্রী হবেন, দল তা ঠিক করবে। আতিশি, রাঘব চাড্ডা, সৌরভ ভরদ্বাজের মধ্য থেকে কেউ হতে পারেন। 

ছয় মাস জেলবন্দি থাকার পর জামিনে মুক্তি পেয়ে দলীয় কর্মীদের এক বৈঠকে এই ঘোষণা দিয়ে কেজরিওয়াল বলেন, তিনি চান, দিল্লি বিধানসভার নির্বাচন মহারাষ্ট্র ও ঝাড়খন্ডের সঙ্গে এই নভেম্বর মাসেই করা হোক। দিল্লি বিধানসভার নির্বাচন হওয়ার কথা আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে।

কেজরিওয়াল ও আম আদমি পার্টির বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়া ও অর্থ পাচারের গুরুতর অভিযোগে তদন্ত চলছে। অভিযোগ, আবগারি নীতির মাধ্যমে তাঁরা ১০০ কোটি রুপি ঘুষ নিয়েছেন। এই অভিযোগের তদন্ত করছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি), সিবিআই ও আয়কর বিভাগ। কেজরিওয়াল ছাড়াও ওই মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া, রাজ্যসভার সদস্য সঞ্জয় সিংকে। কিন্তু এখনো অকাট্য প্রমাণ তারা দাখিল করতে পারেনি।

দুই বছর ধরে বিজেপি কেজরিওয়ালের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু কেজরিওয়াল আমলে নেননি। সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিন পাওয়ার পর এখন তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন। অরবিন্দ কেজরিওয়াল দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানালেন।

দলীয় কর্মীদের কেজরিওয়াল বলেছেন, ‘সর্বোচ্চ আদালতের কাছ থেকে ন্যায়বিচার পাওয়ার পর এবার আমি জনতার দরবারে হাজির হব। জনতার রায় চাইব। দিল্লির জনগণ চাইলে আবার আমি মুখ্যমন্ত্রী হব। তার আগে দলের নেতারা ঠিক করবেন, অন্তর্বর্তী সময়ে কে মুখ্যমন্ত্রী হবেন। সে জন্য দুয়েক দিনের মধ্যেই পরিষদীয় দলের বৈঠক ডাকা হবে।’

পদত্যাগের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দলীয় কর্মীদের সভায় কেজরিওয়াল তুলোধুনা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তার দলকে। তিনি বলেন, ‘ব্রিটিশ সরকারের চেয়েও বড় স্বৈরতন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বিরোধী মুখ্যমন্ত্রীদের হেনস্তার জন্য তাঁর সরকার সব করেছে। তারা আমাকে জেলে পাঠিয়েছে। কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া, কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন, ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রত্যেকের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে। এটা করেছে দল ভাঙাতে। বিধায়ক ভাঙাতে।’

কেজরিওয়াল বলেন, ‘এটাই বিজেপির চাল। যেখানে সরকার গড়তে ব্যর্থ, সেখানে নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রীদের জেলে পাঠিয়ে সরকার দখল করতে চায়। সেই সুযোগ আমি ওদের দিইনি। তাই পদত্যাগ করিনি। দলও ভাঙেনি। আমি সব সময় চেয়েছি গণতন্ত্রকে বাঁচাতে। এখন করতে চাইছি জনগণের রায় মাথা পেতে নিতে।’

এদিকে, কেজরীওয়ালের সিদ্ধান্তের পর থেকেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে দিল্লির রাজনীতিতে। কেজরিওয়ালের এই সিদ্ধান্ত নিশ্চিতই এক রাজনৈতিক ‘মাস্টার স্ট্রোক’ বলে মনে করছে পর্যবেক্ষকমহল।

আম আদমি পার্টির (আপ) অনেকেই দাবি করছেন, কেজরী অগ্নিপরীক্ষা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মাস পাঁচেক পরেই দিল্লিতে বিধানসভা ভোটের কথা রয়েছে। আপের আশা, দিল্লিবাসী আবার তাদের ভোট দিয়ে কেজরীর পক্ষে মত দেবেন। তবে আপ প্রধানের এই সিদ্ধান্তকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিজেপি। দু’দিন পরে কেন পদত্যাগ, কেন এখনই নয়, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি নেতারা। কেজরীর পদত্যাগের সিদ্ধান্তকে একটি ‘রাজনৈতিক নাটক’ হিসাবেই দেখছেন পদ্মশিবিরের নেতারা।#

পার্সটুডে/জিএআর/১৫

ট্যাগ