কিছু ভোট সংগ্রহের উদ্দেশ্যে টুইট করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প: ধর্ম উপদেষ্টা
অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, "নির্বাচনি প্রচারণার অংশ হিসেবেই বাংলাদেশে হিন্দুসহ সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের নিন্দা জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে টুইট করেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার উদ্দেশ্য কিছু ভোট সংগ্রহ। সরকার তার কথার সাথে একমত পোষণ করে না।"
আজ (রোববার) সকালে সাভারে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে দুই দিনব্যাপী ‘সুন্নাহ কনফারেন্স বাংলাদেশ-২০২৪’-এর উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. খালিদ হোসেন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষমতার পালাবদল হলেও বাংলাদেশ দেশটির সাথে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপক্ষীয় সম্পর্ক বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর। আমি মনে করি ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই টুইট যৌক্তিক নয়। বাংলাদেশে থাকা সনাতন ধর্মের অনুসারীরা অত্যন্ত নিরাপদে আছেন। ধর্ম অনুশীলন ও ধর্ম চর্চার ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই। সম্প্রতি জন্মাষ্টমী ও দুর্গাপূজা অত্যন্ত নিরাপদে পালন করেছেন তারা। সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। তারা কিছু দাবির কথা জানিয়েছেন। সেগুলো সরকারের উচ্চ পর্যায়ে বিবেচনা করা হচ্ছে।’
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবিরও মনে করেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ‘ফিড করা হয়েছে’। অর্থাৎ, তাকে এটি বোঝানো হয়েছে। ‘নয়তো, তার এ ধরনের কথা বলার কথা না। কিন্তু বাংলাদেশের বিষয়ে যে সমস্ত শব্দ ব্যবহার করেছেন, এগুলো খুবই শক্ত শব্দ।’
যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির সরকার ও রাজনীতির অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর ভারতীয় গণমাধ্যম ছোট ঘটনাকে বড় করে বলে আসছে যে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন হচ্ছে। চলতি সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক সুবিধা পাওয়ার জন্য ধর্মকে কীভাবে ব্যবহার করা হয়, ট্রাম্পের টুইট তার সুস্পষ্ট প্রমাণ।’
৩১ অক্টোবর বাংলাদেশ সময় অনুযায়ী রাত ১১টায় পোস্ট করা টুইটে ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ তুলে ধরেন। ট্রাম্পের এই বক্তব্য নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিতর্ক চলছে। টুইটের প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এলবার্ট পি কস্টা। ট্রাম্পের মন্তব্যকে 'সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত' বলে অভিহিত করে তিনি জানান, এটি মার্কিন নির্বাচনে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার হিন্দু ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সমর্থন পাওয়ার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে এবং এর পেছনে পতিত সরকারের এজেন্টদের হাত থাকতে পারে।
কস্টা আরও বলেন, ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশে খ্রিস্টানদের উপর কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি। দু'টি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে, যা রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ঘটেছে। একজন সাবেক বিশ্ব নেতার এ ধরনের মন্তব্য বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে পারে।#
পার্সটুডে/এমএআর/৩