ভারতের মণিপুরে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলিতে নিহত ১১, প্রতিবাদে বনধ পালিত
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলিতে ১১ ব্যক্তি নিহত হওয়ার প্রতিবাদে সকাল-সন্ধ্যা বনধ পালিত হয়েছে। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে জিরিবাম জেলাসহ আশেপাশের বেশকিছু এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়েছে। এছাড়া, বিপুল সংখ্যায় সেনা মোতায়েন করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট এলাকায়।
পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনী সিআরপিএফের বরাত দিয়ে ভারতের গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছেন, গতকাল (সোমবার) জিরিবাম জেলার বোরোবাকেরা এলাকায় হামলা চালায় কুকি জঙ্গিরা। বেশকিছু বাড়িতে আগুন লাগানো হয়। এর পর জিরিবাম জেলার বোরোবাকেরা পুলিশ স্টেশনকে নিশানা করে তারা। সেখান থেকে সিআরপিএফের ক্যাম্পে হামলার চেষ্টা চালায় জঙ্গিরা। এসময় পাল্টা জবাব দেয় নিরাপত্তাবাহিনী। গুলির লড়াইয়ে ১১ জঙ্গি নিহত হয়। তাদের কাছ থেকে ৪টি এসএলআর, ৩টি একে ৪৭, একটি আরপিজি-সহ বিপুল পরিমাণ গোলাগুলি উদ্ধার করা হয়েছে। পাশাপাশি এই হামলায় আহত হন দুই সিআরপিএফ জওয়ান।
তবে ‘জঙ্গি’ বলে কথিত এই ১১ জনের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে আজ (মঙ্গলবার) মণিপুরের জাতিগত সংগঠনগুলো স্কুল ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে। তারা মণিপুরের পাহাড়ি জেলাগুলোতে স্থানীয় সময় ভোর ৫টা থেকে পরবর্তী ১১ ঘণ্টার জন্য বনধের ডাক দেয়। রাস্তায় কোনো যানবাহন না চলায় পাহাড়ি জেলাগুলোর জনজীবন স্তব্ধ হয়ে পড়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
কুকি সম্প্রদায়ের নেতারা জানিয়েছেন, যাদের হত্যা করা হয়েছে তারা স্থানীয় গ্রামগুলোর স্বেচ্ছাসেবক, তারা হামার নৃগোষ্ঠীর সদস্য।
২০২৩ সালের মে থেকে মণিপুরে সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেই ও সংখ্যালঘু কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে দাঙ্গা চলছে। অর্থনৈতিক সুবিধা ও কোটা নিয়ে বিরোধ থেকে এ দাঙ্গার সূত্রপাত হয়।
মণিপুরের মেইতেই জনগোষ্ঠী প্রধানত উপত্যকাগুলোতে বসবাস করে আর কুকিরা বাস করে পাহাড়ে। দুই জনগোষ্ঠীর আবাসভূমিকে একটি ‘বসতিহীন ভূখণ্ড’ দিয়ে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে। ভারতের কেন্দ্রীয় আধাসামরিক বাহিনী এই ভূখণ্ডটি পাহারা দিয়ে রাখে।#
পার্সটুডে/এমএআর/১২