চাল, ডাল না পাঠালে খাওয়া বন্ধ হয়ে যাবে: দিলীপ ঘোষ
বাংলাদেশিদের চিকিৎসা দেবে না কলকাতার হাসপাতাল, বাণিজ্য বন্ধের ইঙ্গিত ত্রিপুরার
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতার জেএন রায় হাসপাতাল অনির্দিষ্টকালের জন্য বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবা বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে। বাংলাদেশে ‘হিন্দু-বিরোধী’ সহিংসতা এবং ভারতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
কলকাতার মানিকতলা এলাকায় অবস্থিত হাসপাতালটি ভারতের প্রতি ‘অসম্মানের’ প্রতিক্রিয়া হিসেবে একটি বিবৃতি দিয়েছে। হাসপাতালের কর্মকর্তা শুভ্রাংশু ভক্ত বলেছেন, “আজ থেকে আমরা কোনো বাংলাদেশি রোগীকে ভর্তি করব না। এটি বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর ‘অত্যাচার’ এবং আমাদের তিরঙ্গার প্রতি ‘অসম্মানের’ প্রতিবাদ। ভক্ত কলকাতার অন্যান্য হাসপাতালগুলোকেও এই পদক্ষেপ অনুসরণ করার আহ্বান জানিয়েছেন।"
এই সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, “কোনও হাসপাতাল ব্যক্তিগতভাবে বাংলাদেশি নাগরিকদের পরিষেবা দেওয়া বন্ধ করতে পারে। বাংলাদেশের ঘটনা নিয়ে আমাদের প্রবল আপত্তি আছে। কিন্তু বাংলাদেশের কোনও মানুষ অসুস্থ হলে তাঁকে আমরা সুস্থ করব না? চিকিৎসক বা চিকিৎসা কেন্দ্রের ধর্ম রোগীকে সুস্থ করা। যদি চিকিৎসা না হয়, এটা আমাদের মানবিকতাবিরোধী, এটা ঠিক নয়।”

তিনি আরও বলেন, “কেন্দ্র সরকার যদি ভিসা দেয় তাহলে সে চিকিৎসা করাতে পারবেন। কোনও সমস্যা হচ্ছে বলে আমার জানা নেই।”
এদিকে, পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, “আমরা যদি চাল, ডাল পাঠানো বন্ধ করে দিই তাহলে তো খেতে পাবে না। চিকিৎসা থেকে বিয়ের বাজার, সবকিছুর জন্যই ওদের কলকাতায় আসতে হয়। হিন্দুদের উপর নির্যাতন বন্ধ না হলে এবার সীমান্ত অবরোধ করে সব আটকে দেব। তখন দেখব, কত দম্ভ!”
তিনি বলেন, দুই দেশের সরকার সিদ্ধান্ত নেবে পরিস্থিতি কীভাবে আয়ত্তে আনা হবে। তবে এভাবে অত্যাচার চললে মুখ বুজে তা মেনে নেওয়া সম্ভব নয় বলেও জানান দিলীপ।

অন্যদিকে, সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর অত্যাচারের প্রতিবাদে বাংলাদেশের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধ করার ইঙ্গিত দিয়েছে বিজেপি শাসিত ত্রিপুরা। মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের বলেছেন, “অচিরেই বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ করতে পারে ত্রিপুরা সরকার।”
আজ (শনিবার) আগরতলা প্রেস ক্লাবে বাছাই করা সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সরকার ইঙ্গিত দিয়েছেন, বাণিজ্য বন্ধ নিয়ে ত্রিপুরা সরকার এখনও চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত না নিলেও বিষয়টি ভাবনা-চিন্তার পর্যায়ে আছে। এ নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত হতে পারে। এ বিষয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছে রাজ্য সরকার।
ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর যা চলছে তা অমানবিক। বাংলাদেশের বর্তমানে যারা সরকার চালাচ্ছে তাদের দেখা উচিত সংখ্যালঘুদের স্বাধীনতা যেন খর্ব না হয়।”
তিনি বলেন, যেদিন শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ত্যাগ করেছিলেন সেদিন থেকেই তিনি নির্দেশ দিয়েছেন বাংলাদেশ থেকে যেন কোনও উপায়ে বেআইনিভাবে রাজ্যে কেউ প্রবেশ করতে না পারে সেদিকে বিএসএফ-সহ পুলিশকে নজর রাখতে হবে।#