ইতিহাস থেকে 'পারস্য উপসাগর'-এর নাম মুছে যাবে না
ইরানের সরকারি মুখপাত্র ফাতেমা মোহাজেরানি 'জাতীয় পারস্য উপসাগর দিবস'-এ অভিনন্দন জানিয়েছেন। ইরানের পঞ্জিকা অনুযায়ী, ১০ই উর্দিবিহেশত (৩০ এপ্রিল) 'জাতীয় পারস্য উপসাগর দিবস' হিসেবে পালিত হয়। ১৬২২ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে ইরানের সাফাভি সম্রাট ‘প্রথম শাহ আব্বাস’ হরমুজ প্রণালি থেকে পর্তুগীজ উপনিবেশবাদী বাহিনীকে হটিয়ে দিয়েছিলেন।
পার্সটুডির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরান সরকারের মুখপাত্র ফাতেমা মোহাজেরানি বলেন, "আমরা পঞ্জিকায় 'পারস্য উপসাগর' নামটি সোনার ফ্রেমে বসিয়েছি— নিজেদের স্মরণ করানোর জন্য নয়, বরং যারা ভুলে যেতে চায়, তাদের মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য।"
মোহাজেরানি যোগ করেন, "এটি 'পারস্য' এবং এই নাম কোনো কৌশলেই গতকালের ইতিহাস বা আগামীর দিনের পাতা থেকে মুছে যাবে না। এই মাটি, এই রক্ত, এই সমুদ্রে ইরানের নামে জড়িত। পারস্য উপসাগর চিরকাল 'পারস্য' হিসেবেই থাকবে।"
পারস্য উপসাগরের উত্তরে ইরান, পশ্চিমে কুয়েত ও ইরাক এবং দক্ষিণে সৌদি আরব, বাহরাইন, আমিরাত এবং কাতার অবস্থিত। এটির আয়তন ২৪০,০০০ বর্গকিলোমিটার এবং মেক্সিকো উপসাগর এবং হাডসন উপসাগরের পরে এটি বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম উপসাগর। পারস্য উপসাগর হরমুজ প্রণালীর মাধ্যমে ওমান সাগরের সাথে এবং এর মধ্য দিয়ে খোলা সমুদ্রের সাথে সংযুক্ত এবং এর গুরুত্বপূর্ণ দ্বীপগুলোর মধ্যে রয়েছে: খার্গ, আবু মুসা, তুনবে কোচাক, তুনবে বোজোর্গ, কিশ দ্বীপ, কেশম দ্বীপ এবং লাভান- যার সবকটিই ইরানের অন্তর্গত।
পারস্য উপসাগর এবং এর উপকূল তেল ও গ্যাসের সমৃদ্ধ মজুদ। তেল পরিবহনের পথ কুয়েত, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশগুলোর মধ্য দিয়ে। এই কারণে, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং কৌশলগত অঞ্চল হিসেবে বিবেচিত হয়।
আড়াই হাজার বছরেরও বেশি সময় আগে বর্তমান ইরানে হাখামানেশিয় সম্রাট পারস্য সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই ইরানের দক্ষিণাঞ্চলীয় পানিসীমা পারস্য উপসাগর হিসেবে পরিচিত ছিল। প্রতিটি ইতিহাসগ্রন্থে এই ঐতিহাসিক সত্য উঠে আসলেও কিছু আরব দেশ এই উপসাগরের নাম থেকে ‘পারস্য’ শব্দটি মুছে ফেলার চেষ্টা করছে।#
পার্সটুডে/এমএআর/৩০