'জুলাইয়ে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি শেখ হাসিনা নিজেই দিয়েছিলেন'
https://parstoday.ir/bn/news/event-i150296-'জুলাইয়ে_প্রাণঘাতী_অস্ত্র_ব্যবহারের_অনুমতি_শেখ_হাসিনা_নিজেই_দিয়েছিলেন'
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথোপকথনের একটি ফাঁস হওয়া অডিও রেকর্ডিং থেকে জানা যায়, গত বছরের জুলাইয়ে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভে প্রাণঘাতী শক্তি প্রয়োগের অনুমতি তিনি নিজেই দিয়েছিলেন।
(last modified 2025-07-29T12:16:04+00:00 )
জুলাই ০৯, ২০২৫ ১৬:৩৫ Asia/Dhaka
  • 'জুলাইয়ে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি শেখ হাসিনা নিজেই দিয়েছিলেন'

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথোপকথনের একটি ফাঁস হওয়া অডিও রেকর্ডিং থেকে জানা যায়, গত বছরের জুলাইয়ে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভে প্রাণঘাতী শক্তি প্রয়োগের অনুমতি তিনি নিজেই দিয়েছিলেন।

পশ্চিমা গণমাধ্যম বিবিসি আইয়ের যাচাই করা ওই রেকর্ডিং অনুসারে, শেখ হাসিনা তার নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ‘প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার’ করার অনুমতি দিয়েছেন এবং ‘তাঁরা (এসব বাহিনীর সদস্যরা) যেখানেই তাদের (আন্দোলনকারী) পাবেন, গুলি করবেন।

অজ্ঞাতপরিচয় একজন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে শেখ হাসিনার কথোপকথনের ফাঁস হওয়া অডিওটি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ যে তিনি সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের গুলি করার জন্য সরাসরি অনুমতি দিয়েছিলেন।

ফাঁস হওয়া অডিওটি সম্পর্কে জানেন, এমন একটি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, গত ১৮ জুলাই নিজের সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে শেখ হাসিনা ওই ফোনালাপ করেন।

চলতি বছরের মার্চের শুরুতে ফোনালাপের অডিওটি কে ফাঁস করেছেন, তা স্পষ্ট নয়। বিক্ষোভের পর থেকে শেখ হাসিনার কলের অসংখ্য ক্লিপ অনলাইনে প্রকাশিত হয়েছে, যার অনেকগুলোই যাচাই করা হয়নি।

গত ১৮ জুলাইয়ের ফাঁস হওয়া রেকর্ডিংয়ের কণ্ঠের সঙ্গে শেখ হাসিনার কণ্ঠস্বরের মিল শনাক্ত করেছে বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ।

বিবিসি আলাদাভাবে ইয়ারশটের অডিও ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের দিয়ে এ রেকর্ডিংয়ের সত্যতা যাচাই করেছে। তাঁরা এটিতে এডিট করার বা কোনো রকম পরিবর্তন করার কোনো প্রমাণ পাননি। অডিওটি কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয়েছে, এমন সম্ভাবনাও খুবই কম বলে তাঁরা জানিয়েছেন।

মানবাধিকার বা পরিবেশ রক্ষার ইস্যুতে অডিও-সংক্রান্ত তদন্তের কাজ করে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ইয়ারশট। তারা বলছে, ফাঁস হওয়া রেকর্ডিংটি সম্ভবত এমন একটি ঘরে ধারণ করা হয়েছিল, যেখানে ফোনকলটি স্পিকারে বাজানো হয়েছিল। কারণ, এতে স্বতন্ত্র টেলিফোনিক ফ্রিকোয়েন্সি ও ব্যাকগ্রাউন্ডে কিছু শব্দ ছিল।

ইয়ারশটের বিশেষজ্ঞরা রেকর্ডিংজুড়ে ইলেকট্রিক নেটওয়ার্ক ফ্রিকোয়েন্সি বা ইএনএফ শনাক্ত করেছেন। যে ফ্রিকোয়েন্সি অন্য একটি ডিভাইস থেকে অডিও রেকর্ডিংয়ের ক্ষেত্রে প্রায়ই উপস্থিত থাকে। এটি এমন এক সূচক, যার মানে হলো অডিওটিতে হেরফের করা হয়নি।

ইয়ারশটের বিশেষজ্ঞরা শেখ হাসিনার বক্তব্যে ছন্দ, স্বর ও শ্বাসের শব্দ বিশ্লেষণ করেছেন এবং ধারাবাহিক নয়েজের স্তরও শনাক্ত করেছেন। অডিওতে কৃত্রিম কোনো পরিবর্তন আনার প্রমাণ তাঁরা খুঁজে পাননি।

ব্রিটিশ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনজীবী টবি ক্যাডম্যান বিবিসিকে বলেছেন, রেকর্ডিংগুলো তাঁর (শেখ হাসিনার) ভূমিকা প্রমাণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো স্পষ্ট ও সঠিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে এবং অন্যান্য প্রমাণ দ্বারা সমর্থিত।

টবি ক্যাডম্যান বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পরামর্শক হিসেবে কাজ করছেন, যেখানে শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে মামলা চলছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ২০৩ জনকে অভিযুক্ত করেছেন, যার মধ্যে ৭৩ জন গ্রেপ্তার রয়েছেন। আন্দোলনে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও বাংলাদেশের আদালতে বিচার চলছে।#

পার্সটুডে/জিএআর/৯