১২ দিনের যুদ্ধের সময় ইরানের প্রতি পাকিস্তানের সমর্থন ‘অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক’
https://parstoday.ir/bn/news/event-i150894
ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান ইসরায়েল-আমেরিকার সাম্প্রতিক ১২ দিনের আগ্রাসনের সময় ইসলামি প্রজাতন্ত্রের প্রতি পাকিস্তানের দৃঢ় সমর্থনের প্রশংসা করে বলেছেন, এটি দুই দেশের মধ্যে গভীর বন্ধনের প্রতিফলন।
(last modified 2025-08-03T11:57:49+00:00 )
আগস্ট ০৩, ২০২৫ ১৭:৫০ Asia/Dhaka
  • ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানকে স্বাগত জানান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ
    ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানকে স্বাগত জানান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ

ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান ইসরায়েল-আমেরিকার সাম্প্রতিক ১২ দিনের আগ্রাসনের সময় ইসলামি প্রজাতন্ত্রের প্রতি পাকিস্তানের দৃঢ় সমর্থনের প্রশংসা করে বলেছেন, এটি দুই দেশের মধ্যে গভীর বন্ধনের প্রতিফলন।

আজ (রোববার) ইসলামাবাদে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে পেজেশকিয়ান বলেন, “যুদ্ধের সময় পাকিস্তানের সরকার, পার্লামেন্ট, রাজনৈতিক দল, আলেমসমাজ ও জনগণের অবস্থান অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক ছিল।”

উল্লেখ্য, গত ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানের বিরুদ্ধে আগ্রাসী যুদ্ধ শুরু করে, যাতে ইরানের অন্তত ১,০৬৪ জন মানুষ নিহত হন। নিহতদের মধ্যে সামরিক কমান্ডার, পরমাণু বিজ্ঞানী এবং সাধারণ বেসামরিক নাগরিকরাও ছিলেন।

এই যুদ্ধ চলাকালীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে ইরানের তিনটি পরমাণু স্থাপনায় বোমাবর্ষণ করে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে।  

এর জবাবে, ইরানের সশস্ত্র বাহিনী ইসরায়েলি শাসন ও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পাল্টা সামরিক অভিযান চালায় এবং ২৪ জুন আগ্রাসন বন্ধে বাধ্য করে।

সংবাদ সম্মেলনের অন্য অংশে প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান বলেন, “আঞ্চলিক নিরাপত্তা একে অপরের ওপর গভীরভাবে নির্ভরশীল।” তিনি বলেন, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক উন্নয়নের জন্য শান্তি, স্থিতিশীলতা ও নিরবচ্ছিন্নতা অত্যাবশ্যক।

তিনি আরও বলেন, “প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ককে অগ্রাধিকার দেওয়া ইরানের পররাষ্ট্রনীতির মূল স্তম্ভ। পাকিস্তানকে আমরা শুধু প্রতিবেশী নয়, বরং ভাইয়ের মতো মনে করি।”

ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠক সম্পর্কে প্রেসিডেন্ট জানান, দুই দেশ ফিলিস্তিন, লেবানন এবং সিরিয়ায় ইসরায়েলের নৃশংস অপরাধ, গাজায় চলমান গণহত্যা এবং গোটা অঞ্চলে তার অস্থিতিশীল তৎপরতার নিন্দা জানিয়েছে।

তিনি বলেন, “ইরান ও পাকিস্তান একমত যে, ইসরায়েলের আগ্রাসী ও সম্প্রসারণবাদী নীতির মোকাবেলায় আঞ্চলিক দেশগুলোর—বিশেষ করে মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে আরও শক্তিশালী, কার্যকর ও কার্যনির্ভর সহযোগিতা গড়ে তোলা জরুরি।”

পেজেশকিয়ান আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো, বিশেষ করে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন, যুদ্ধের বিস্তার ও বেসামরিক গণহত্যার বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নেওয়ার এবং দ্বিমুখী নীতি প্রয়োগ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান।

পাকিস্তান সফরের আতিথেয়তা ও ভ্রাতৃত্ববোধের জন্য পাকিস্তান সরকার ও জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন পেজেশকিয়ান। তিনি প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফকে তেহরানে সফরের আমন্ত্রণ জানান।

প্রসঙ্গত, প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের আমন্ত্রণে দু’দিনের সফরে শনিবার ইসলামাবাদ পৌঁছান। রবিবার, দুই দেশের মধ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, পরিবহন ও ট্রানজিট, বাণিজ্য ও অর্থনীতি, পর্যটন এবং কৃষিসহ ১২টি সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।#

পার্সটুডে/এমএআর/৩