ইরান পরমাণু বিজ্ঞানীর হত্যাকাণ্ডে জড়িত মোসাদ গুপ্তচরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর
https://parstoday.ir/bn/news/event-i150992-ইরান_পরমাণু_বিজ্ঞানীর_হত্যাকাণ্ডে_জড়িত_মোসাদ_গুপ্তচরের_মৃত্যুদণ্ড_কার্যকর
ইরানে গুপ্তচরবৃত্তি ও ইসরাইলের সাথে সহযোগিতার দায়ে দোষী সাব্যস্ত এক মোসাদ এজেন্টের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। আজ (বুধবার) সকালে 'রুজবেহ ভাদি'র মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় বলে ইরানের বিচার বিভাগ নিশ্চিত করেছে।  
(last modified 2025-09-11T14:06:22+00:00 )
আগস্ট ০৬, ২০২৫ ২০:৩০ Asia/Dhaka
  • ইরানের বিচার বিভাগ
    ইরানের বিচার বিভাগ

ইরানে গুপ্তচরবৃত্তি ও ইসরাইলের সাথে সহযোগিতার দায়ে দোষী সাব্যস্ত এক মোসাদ এজেন্টের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। আজ (বুধবার) সকালে 'রুজবেহ ভাদি'র মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় বলে ইরানের বিচার বিভাগ নিশ্চিত করেছে।  

মামলার নথি ও ভাদির নিজস্ব স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, তিনি সম্পূর্ণ সচেতনভাবে মোসাদের সাথে সহযোগিতা করছেন। ভাদি ইরানের একটি সংবেদনশীল সংস্থায় গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন এবং তার উচ্চস্তরের অ্যাক্সেসের কারণে তিনি ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান লক্ষ্যে পরিণত হন। তাকে সাইবারস্পেসের মাধ্যমে মোসাদে নিয়োগ দেওয়া হয় এবং তিনি মোসাদ অফিসারদের বিভিন্ন মূল্যায়ন পর্যায়ে অংশ নিয়েছিলেন।

ভাদির পরিচয় যাচাই করার পর, অ্যালেক্স নামে একজন মোসাদ কর্মকর্তা তার উচ্চস্তরের অ্যাক্সেস নিশ্চিত করে তাকে দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নিয়ে যান। এর অল্প সময়ের মধ্যেই আরেক এজেন্ট 'কেভিন' তার হ্যান্ডলার হিসেবে দায়িত্ব নেয় এবং এভাবেই মোসাদের সাথে তার আনুষ্ঠানিক সহযোগিতা শুরু হয়।

ভাদির অনুরোধ অনুযায়ী, পুরস্কারভিত্তিক ব্যবস্থার পরিবর্তে একটি ক্রিপ্টো কারেন্সি ওয়ালেটের মাধ্যমে তার অ্যাকাউন্টে মাসিক অর্থ জমা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ প্রদান এবং নিরাপদ যোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে ভাদিকে গুরুত্বপূর্ণ এবং গোপন তথ্য সংগ্রহ ও সরবরাহ করার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছিল।

এরপর আসামীকে ভিয়েনা ভ্রমণের নির্দেশ দেওয়া হয়, যেখানে তিনি মোসাদ এজেন্টদের সাথে পাঁচটি গোপন বৈঠক করেন। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, গোপনীয়তা নিশ্চিত করতে এই বৈঠকগুলো কঠোর নিরাপত্তা প্রোটোকল মেনে পরিচালিত হয়েছিল।

অস্ট্রিয়ার রাজধানীতে তার ভ্রমণ ও মোসাদ অফিসারদের সাথে সাক্ষাতের সময়, ভাদিকে তার মিশন সম্পর্কে পূর্ণ ব্রিফিং দেওয়া হয় এবং তিনি তেহরানে ফিরে এসে আদেশগুলো কার্যকর করেন।

ভাদিকে সংস্থাগত উন্নয়ন ও প্রাপ্য গোয়েন্দা তথ্য সম্পর্কে সাপ্তাহিক রিপোর্ট জমা দিতে হতো। পরিষেবার প্রযুক্তিগত জিজ্ঞাসাবাদের জবাব দেওয়ার পর, তিনি সংশ্লিষ্ট আর্থিক ক্ষতিপূরণ পেতেন।

ভাদি ইরানের একজন পারমাণবিক বিজ্ঞানী সম্পর্কেও মোসাদকে তথ্য সরবরাহ করেছিলেন, যিনি সাম্প্রতিক সময়ে ইসরাইলের আগ্রাসনে শাহাদাতবরণ করেন।

একটি মিশনের সময় যখন তিনি একজন মোসাদ এজেন্টের সাথে দেখা করছিলেন, ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী তার কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে এবং পরবর্তীতে ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থার সাথে তার সম্পর্ক নিশ্চিত করে তাকে গ্রেফতার করে।

এই মামলা ‘গোপনীয় তথ্য সংগ্রহ এবং ইসরায়েলের সঙ্গে গোয়েন্দা সহযোগিতার’ অভিযোগে আদালতে পাঠানো হয় এবং আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তা তদন্ত করা হয়।

ভাদিকে 'ইহুদিবাদী ইসরায়েলের বিরুদ্ধে শত্রুতামূলক কার্যক্রম আইন'-এর ৬ নম্বর ধারা এবং ইরানের ইসলামি দণ্ডবিধির ২৭৯, ২৮৩, ২৮৬ ও ২১১ নং ধারার অধীনে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। আদালত রায়ে বলেছে, তার কর্মকাণ্ড অভ্যন্তরীণ ও বহিরাগত জাতীয় নিরাপত্তাকে মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন করেছে এবং জনশৃঙ্খলার গুরুতর ব্যাঘাত ঘটিয়েছে।#

পার্সটুডে/এমএআর/৫