আসিফ আলী জারদারির শোক বার্তা
খাইবার পাখতুনখোয়ায় সংঘর্ষে লে. কর্নেলসহ ১১ সেনা ও ১৯ সন্ত্রাসী নিহত
-
নিহত ১১ সেনা
পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে গতকাল (মঙ্গলবার) রাতে পরিচালিত এক অভিযানকালে সংঘর্ষে একজন লেফটেন্যান্ট কর্নেল ও একজন মেজরসহ ১১ সেনা সদস্য ও ১৯ সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে।
পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর আন্তঃসংযোগ দপ্তর (আইএসপিআর) এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের ওরাকজাই জেলায় মঙ্গলবার রাতে পরিচালিত একটি গোয়েন্দা-নির্ভর অভিযান (আইবিও) চলাকালে এক লেফটেন্যান্ট কর্নেল, এক মেজরসহ ১১ জন সেনা সদস্য শহীদ হয়েছেন।"
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ভারত-সমর্থিত ‘ফিতনা আল খাওয়ারিজ’ নামের সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর উপস্থিতির তথ্যের ভিত্তিতে অভিযানটি চালানো হয়। পাকিস্তানে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)-কে সরকারিভাবে এই নামে উল্লেখ করা হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “অভিযান চলাকালে আমাদের বাহিনীর কার্যকর প্রতিরোধে ভারত-সমর্থিত ১৯ জন খাওয়ারিজ সন্ত্রাসী নিহত (‘নরকে পাঠানো’) হয়েছে। তবে তীব্র গোলাগুলির সময় ৩৯ বছর বয়সী লেফটেন্যান্ট কর্নেল জুনায়েদ তারিক, যিনি নিজেই সৈন্যদের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন এবং তার সহকারী ৩৩ বছর বয়সী মেজর তৈয়্যব রাহাতসহ আরও ৯ জন সেনা সদস্য শহীদ হন।"
নিহত সেনারা হলেন: নায়েব সুবেদার আজম গুল (৩৮), নায়েক আদিল হুসাইন (৩৫), নায়েক গুল আমির (৩৪), ল্যান্স নায়েক শের খান (৩১), ল্যান্স নায়েক তালিশ ফারাজ (৩২), ল্যান্স নায়েক ইরশাদ হুসাইন (৩২), সিপাহি তুফায়েল খান (২৮), সিপাহি আকিব আলী (২৩) এবং সিপাহি মোহাম্মদ জাহিদ (২৪)
আইএসপিআর আরও জানায়, এলাকায় এখন পরিষ্কারকরণ অভিযান (sanitisation operation) চলছে, যাতে কোনো ভারত-সমর্থিত সন্ত্রাসী অবশিষ্ট থাকলে তাকে নির্মূল করা যায়।
বিবৃতিতে বলা হয়, “পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী দেশ থেকে ভারত-সমর্থিত সন্ত্রাসবাদ সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আমাদের সাহসী সৈন্যদের এই ত্যাগ আমাদের সংকল্পকে আরও শক্তিশালী করে।”

সন্ত্রাসবিরোধী এই অভিযান সম্পর্কে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি এক বিবৃতিতে বলেন, “ওরাকজাই জেলায় নিরাপত্তা বাহিনীর সাহসী পদক্ষেপের জন্য জাতি গর্বিত। ভারত-সমর্থিত খাওয়ারিজদের ১৯ জন সন্ত্রাসীকে নিঃশেষ করার ঘটনায় আমি সন্তুষ্ট। লেফটেন্যান্ট কর্নেল জুনায়েদ তারিক শহীদ, মেজর তৈয়্যব রাহাত এবং অন্যান্য শহীদরা জাতির নায়ক।”
প্রেসিডেন্ট পরিবারের প্রতি গভীর সহমর্মিতা প্রকাশ করে তাদের ধৈর্য ও সাহসের জন্য প্রার্থনা করেন।
এদিকে, পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) এক বিবৃতিতে জানায়, দলীয় চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি ১১ নিরাপত্তা সদস্যের শাহাদতের ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলা বেড়ে গেছে, বিশেষ করে খাইবার পাখতুনখোয়া ও বেলুচিস্তান প্রদেশে, যেখানে পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সামরিক সদস্যরা প্রধান লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। ২০২২ সালে নিষিদ্ধ তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে করা যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে দেওয়ার পর থেকে হামলার সংখ্যা ব্যাপকভাবে বেড়েছে।#
পার্সটুডে/এমএআর/৮