মধ্য প্রদেশের খারগোনে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা
রামনবমীতে সহিংসতার ঘটনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি দিলেন মাওলানা মাহমুদ মাদানী
-
মাওলানা মাহমুদ আসাদ মাদানী-অমিত শাহ
ভারতে রামনবমী উৎসবের সময়ে সহিংস ঘটনা প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি দিয়েছেন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সর্বভারতীয় সভাপতি মাওলানা মাহমুদ আসাদ মাদানী।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সচিব নিয়াজ আহমদ ফারুকী কর্তৃক প্রচারিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জমিয়তের জাতীয় সভাপতি মাওলানা মাহমুদ আসাদ মাদানী রাম নবমী উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে বিশেষ করে মধ্য প্রদেশের খারগোনে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা এবং পরবর্তীতে বাড়িঘর ও দোকানপাট ভাঙার বিষয়ে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের জাতীয় সভাপতি মাওলানা মাহমুদ আসাদ মাদানী তীব্র আপত্তি ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
মাওলানা মাদানী ওই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে দেশে দাঙ্গাবাজরা মুসলিম এলাকায় ঘৃণার ভিত্তিতে স্লোগান তোলা, সেখানে অত্যন্ত উসকানিমূলক কাজ করা এবং মসজিদ ও ইবাদতগাহের অবমাননা করাকে অভ্যাসে পরিণত করেছে। এ ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে তাদের কোনো বাধা বা অসুবিধা নেই। মাওলানা মাদানী ওই বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে একটি চিঠি লিখে এ ধরনের অনিয়ন্ত্রিত পরিস্থিতি বন্ধ করতে এবং দেশকে ক্রমাগত নৈরাজ্যের পথে হাঁটতে বাধা দেওয়ার জন্য দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
মাওলানা মাদানী, বিশেষ করে মধ্য প্রদেশের খারগোনের ঘটনা উল্লেখ করে লিখেছেন, এখানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অনেক ক্ষতি হয়েছে। সমাজবিরোধীদের মাধ্যমে অনেক বাড়িঘর ও ধর্মীয় উপাসনালয়ে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করা হয়। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে, সহিংসতা শুরু হওয়ার পর এখন স্থানীয় প্রশাসন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে হয়রানি করতে উদ্যত। মুসলিমদের সম্পত্তি ও তাদের বাড়িঘর চিহ্নিত করে ভেঙে ফেলা হচ্ছে।

মাওলানা মাদানী প্রশ্ন তুলেছেন, কোন্ আইনে এটা করা হচ্ছে? যেখানে ভারতীয় সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদের অধীনে, প্রত্যেক অভিযুক্তের ন্যায্য বিচার, জামিন, ফৌজদারি আইনজীবীর পরিসেবা, বিনামূল্যে আইনি সহায়তার অধিকার রয়েছে। শুধু তাই নয়, এটি ভারতের আদালত দ্বারা গৃহীত একটি সাধারণ আইনী নীতি যে অভিযুক্তকে দোষী প্রমাণিত না করা পর্যন্ত তাকে নির্দোষ হিসেবে বিবেচনা করা হবে। কিন্তু এখন মধ্য প্রদেশ সরকার ঘরবাড়ি ভেঙ্গে ভারতের সংবিধান লঙ্ঘন করে ‘ফ্যাসিবাদী কাজ’ করছে এবং নির্লজ্জভাবে তা রক্ষা করছে।
মাওলানা মাদানী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ করেন, জমিয়তে উলামার স্থানীয় ইউনিটের প্রাপ্ত রিপোর্ট অনুযায়ী, স্থানীয় পুলিশ বাহিনী সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করছে। এ সব দেখে দেশের সব প্রান্তে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে গভীর অবিচারের অনুভূতি পাওয়া যায়।
মাওলানা মাদানী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে দাবি করেন, খারগোনের সহিংসতার সত্যতা বের করতে একটি ‘উচ্চ পর্যায়ের বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি’ গঠন করা হোক। এ ছাড়াও, সেই সমস্ত লোকের বিচার করা উচিত যারা মিছিলের সময় সহিংসতাকে উত্সাহিত করেছিল এবং যার কারণে এই পুরো ঘটনাটি ঘটেছে। আইন মান্যকারী সংস্থার বৈষম্যমূলক মনোভাবকে আমলে নিয়ে সম্পত্তি ধ্বংস অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
অন্যদিকে, জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা হাকিমুদ্দিন কাশেমি, জমিয়তের খারগোনের কর্মকর্তা মুফতি রফিক এবং হাফিজ ইদ্রিসের কাছ থেকে ক্রমাগত রিপোর্ট নিচ্ছেন এবং আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন বলেও জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সচিব নিয়াজ আহমেদ ফারুকীর পক্ষ থেকে জানান হয়েছে।#
পার্সটুডে/এমএএইচ/এআর/১৪
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।