ভারত থেকে ‘মাদ্রাসা’ শব্দ বিলুপ্ত হওয়া উচিত : হিমন্তবিশ্ব শর্মা
ভারতের বিজেপিশাসিত অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা বলেছেন, ‘মাদ্রাসা শব্দটি বিলুপ্ত হওয়া উচিত, যতদিন এই মাদ্রাসা মনের মধ্যে ঘুরপাক খেতে থাকবে, ততদিন শিশু ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হতে পারবে না।’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি তার এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও বক্তব্য শেয়ার করেছেন। গতকাল (রোববার) তিনি দিল্লিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময়ে এ ধরনের মন্তব্য করেন।
আজ (সোমবার) গণমাধ্যমে প্রকাশ, বিজেপি নেতা ও মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা বলেছেন, ‘মাদ্রাসায় যাওয়ার সময় যদি বাচ্চাকে বলেন যে, এই মাদ্রাসায় গিয়ে তুমি জনাব হবে, ডাক্তার হতে পারবে না, তাহলে কোনও বাচ্চা মাদ্রাসায় যাবে না। মাদ্রাসায় ভর্তি করা মানবাধিকার লঙ্ঘন। আপনি অবশ্যই বাচ্চাদের কোরআন শেখান, এতে কোন সমস্যা নেই কিন্তু সবচেয়ে বেশি পড়ান বিজ্ঞান, অংক, জীববিজ্ঞান, উদ্ভিদবিদ্যা, প্রাণিবিদ্যা। সুতরাং, এজন্য ‘মাদ্রাসা’ শব্দ বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া উচিত। স্বাভাবিক শিক্ষা হওয়া উচিত। বাসায় আপনারা আপনাদের ধর্মগ্রন্থ পড়ান। ২/৩ ঘণ্টা ধরে ধর্মগ্রন্থ পড়ান। কিন্তু স্কুলে এমন শিক্ষা দিন, যে শিক্ষা থেকে আপনার সন্তান ডাক্তার ও ইঞ্জিনিয়ার হতে পারে, অধ্যাপক হতে পারে, বিজ্ঞানী হতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘আপনারা বলছেন, মুসলিমরা কোরআন মুখস্থ করছে কারণ তাদের অনেক বেশি মেধা আছে। কিন্তু এই সমস্ত মুসলমান ভাই হিন্দু ছিলেন। কেউ মুসলিম হিসেবে এই মাটিতে আসেনি। ভারতের মাটিতে সবাই হিন্দুই ছিল। যদি কোনও শিশু অনেক বেশি মেধাবী হয় আমি তার হিন্দু অতীতেরও কৃতিত্বের একটি অংশ দেব’ বলেও মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা।
বিজেপি নেতা ও মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মার এ ধরণের মন্তব্য প্রকাশ্যে আসার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তি প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
অনীশ শেখ নামে এক ব্যক্তি লিখেছেন, ‘হিন্দু শিশু যদি পড়ালেখায় দুর্বল হয়, তাহলে কৃতিত্ব কাকে দেবেন?’
অশোক শেখাওয়াত নামে একজন লিখেছেন, ‘বিতর্কিত বক্তব্য দেওয়া এবং ধর্মের রাজনীতি করা বিজেপির কাজ।’
শাহিব হায়দার নামের একজন লিখেছেন, 'নবম পাস শিক্ষামন্ত্রীর জন্য কে দায়ী ছিলেন সিএম (মুখ্যমন্ত্রী) স্যার? লাখ লাখ মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত, তাদের সাহায্য করার পরিবর্তে ফালতু কথাবার্তায় লিপ্ত।’
জয় নামের একজন লিখেছেন, কিছু ভালো হলে কৃতিত্ব মোদীজির এবং ভুল হলে সেটা নেহরুর। এভাবে কিছু ভালো হলে হিন্দু পূর্বপুরুষদের কৃতিত্ব এবং ভুল হলে তা মুসলিম পূর্বপুরুষদের।’ আরেক জন লিখেছেন, ‘মাদ্রাসা সম্পর্কে জ্ঞান দেবেন কিন্তু ‘আরএসএস’-এর বিষয়ে নীরব থাকবেন।’
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে অসমের সমস্ত সরকারি মাদ্রাসা তুলে দিয়ে সেগুলোকে স্কুলে পরিণত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। এরফলে ‘ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষাব্যবস্থা’ গড়ে তোলার পথ সহজ হবে বলে দাবি অসম সরকারের।#
পার্সটুডে/এমএএইচ/আবুসাঈদ/২৩
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।