৫০ দিন হয়ে গেছে, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নীরবতা ভাঙেননি : কংগ্রেস, পাল্টা জবাব বিজেপির
https://parstoday.ir/bn/news/india-i124736-৫০_দিন_হয়ে_গেছে_কিন্তু_প্রধানমন্ত্রী_নীরবতা_ভাঙেননি_কংগ্রেস_পাল্টা_জবাব_বিজেপির
ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস বলেছে মণিপুরে সহিংসতার ৫০ দিন পার হয়ে গেলেও প্রধানমন্ত্রী মোদী তার নীরবতা ভাঙেননি।
(last modified 2025-07-29T12:16:04+00:00 )
জুন ২৩, ২০২৩ ১৫:২৩ Asia/Dhaka
  •  ৫০ দিন হয়ে গেছে, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নীরবতা ভাঙেননি : কংগ্রেস, পাল্টা জবাব বিজেপির

ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস বলেছে মণিপুরে সহিংসতার ৫০ দিন পার হয়ে গেলেও প্রধানমন্ত্রী মোদী তার নীরবতা ভাঙেননি।

গতকাল (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক বার্তায় কংগ্রেসের সিনিয়র নেতা জয়রাম রমেশ প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করে বলেছেন, ‘মণিপুর সহিংসতার ৫০ দিন পার হয়ে গেছে। শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে,  কয়েক হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী মোদী তার নীরবতা ভাঙেননি। শান্তির আবেদনও করেননি।’   

কংগ্রেস নেতা ও সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জয়রাম রমেশ বলেন, ‘মণিপুর ইস্যুতে সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে (মণিপুরের রাজধানী) ইম্ফলে এই বৈঠক হওয়া উচিত। বিশ্ববিষয়ক জ্ঞান দেওয়া প্রধানমন্ত্রী মণিপুর নিয়েও কিছু বলুন।’   

অন্যদিকে, একইদিনে কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধী এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘৫০ দিন ধরে মণিপুর জ্বলছে, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নীরব। প্রধানমন্ত্রী নিজে যখন দেশে নেই তখন সর্বদলীয় বৈঠক ডাকা হয়েছে! স্পষ্টতই, প্রধানমন্ত্রীর জন্য এই বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ নয়।’ প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মণিপুর পরিস্থিতি নিয়ে আগামী ২৪ জুন নয়াদিল্লিতে সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছেন।

কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মোদী আমেরিকায় থাকলেও মণিপুর নিয়ে নীরব রয়েছেন। ৫১ দিনের সহিংসতার পর সর্বদলীয় বৈঠক ডাকা হয়েছে। তিনি প্রশ্ন করেন, প্রধানমন্ত্রী যখন এখানে নেই তখন সর্বদলীয় বৈঠক করে কী লাভ? দিল্লিতে এই বৈঠকের উদ্দেশ্য কী যখন এটি ইম্ফলে হওয়া উচিত? দেশের একটি রাজ্য যখন জ্বলছে তখন প্রধানমন্ত্রী নীরব কেন?’ 

জয়রাম রমেশ আরও বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মণিপুর সফর কোনও প্রভাব ফেলেনি, রাজ্যে মানুষের মধ্যে বিভাজনের পরিস্থিতি বিরাজ করছে। মানুষ সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। তিনি বলেন,  ‘মণিপুরে যা ঘটেছে তা ডাবল ইঞ্জিন সরকারের (কেন্দ্রীয় ও রাজ্যে বিজেপি সরকার) ব্যর্থতা। আমরা এখনও আশা করি যে প্রধানমন্ত্রী নীরবতা ভাঙবেন। তিনি অনেক বিষয়ে কথা বলেন, কিন্তু মণিপুরের মতো বাস্তব ইস্যুতে নীরব থাকেন। এটা খুবই মর্মান্তিক।’ 

এদিকে, কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশের পাল্টা জবাবে মণিপুরের শিক্ষামন্ত্রী বসন্ত সিং বলেছেন, জয়রাম রমেশ জানেন না যে ১০/১১ মে মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং  সর্বদলীয় বৈঠক করেছিলেন। এতে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেসের সিনিয়র নেতা ও সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওকরাম ইবোবি সিংও।

বিজেপির আইটি বিভাগের প্রধান অমিত মালব্যের দাবি- ‘কংগ্রেস প্রথমে সর্বদলীয় বৈঠকের দাবি জানিয়েছিল এবং এখন, যখন এটি ঘোষণা করা হয়েছে, তখন সভার মাত্র দু'দিন আগে এটি বয়কট করার ভিত্তি তৈরি করছে। এটা স্পষ্ট যে কংগ্রেসের উদ্দেশ্য সমাধান খুঁজে বের করা নয়, বরং জবাবদিহিতা এড়ানো এবং পরিবেশ (রাজ্যে) উষ্ণ রাখা’ বলেও মন্তব্য করেছেন বিজেপি নেতা অমিত মালব্য।  

প্রসঙ্গত, ‘মেইতেই’ সম্প্রদায়কে ‘তফসিলি উপজাতি’র মর্যাদা দেওয়ার প্রচেষ্টাকে কেন্দ্র করে গত ৩ মে থেকে মণিপুরে মেইতেই সম্প্রদায় এবং উপজাতীয় কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে সহিংসতা শুরু হয়। সম্প্রতি মণিপুর হাই কোর্ট ‘মেইতেই’দের ‘তফসিলি উপজাতি’র মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই ‘উপজাতি’ বিভিন্ন সংগঠন যৌথভাবে তার বিরোধিতায় মাঠে নামে। আর সেই ঘটনা থেকেই সহিংসতার সূচনা হয় সেখানে। রাজ্যটিতে গত ৩ মে থেকে চলমান সহিংসতায় ১০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।