পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আবহে বোমার আঘাতে প্রাণ গেল স্কুল ছাত্রের
(last modified Wed, 05 Jul 2023 12:33:10 GMT )
জুলাই ০৫, ২০২৩ ১৮:৩৩ Asia/Dhaka
  • তৃণমূল নেত্রী কাকলি ঘোষ দস্তিদার এমপি
    তৃণমূল নেত্রী কাকলি ঘোষ দস্তিদার এমপি

পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আবহে এবার প্রাণ গেল ইমরান হোসেন নামে এক স্কুল ছাত্রের। এ নিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ঘটনায় রাজ্যে গত ২৬ দিনে ১৬ জন নিহত হল।

গতকাল (মঙ্গলবার) দেগঙ্গার সোহাইশেতপুর পঞ্চায়েত এলাকার গাঙার্টি গ্রামে মিছিল করে যাচ্ছিল তৃণমূল সমর্থকরা। এ সময়ে বোমার আঘাতে নিহত হয় একাদশ শ্রেণির ছাত্র ইমরান হোসেন (১৭)। নিহত ওই নাবালকের পরিবার তৃণমূল সমর্থক বলে জানা গেছে। ওই ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠেছে  সিপিএম-আইএসএফ সমর্থিত নির্দলীয়দের বিরুদ্ধে।   আগামী ৮ জুলাই রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।   

দেগঙ্গার ঘটনায় নিহত নাবালকের বাবা ইন্দাদুলেকে আজ  (বুধবার) সকালে ফোন করেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাজভবন সূত্রে খবর, কয়েক মিনিট ইন্দাদুলের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। মৃতের বাবার কাছে রাজ্যপাল জানতে চান, ঠিক কী ঘটেছে? পুলিশ প্রশাসন  কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে কী না জানতে চান তিনি। শোকাহত ইন্দাদুল বলেন, ‘আমার ছেলের সম্পর্কে জানতে চাইলেন উনি (রাজ্যপাল)। ছেলে কী করত, কোন ক্লাসে পড়াশোনা করত, এ সব জানতে চান। কোনও অসুবিধা থাকলে তাকে জানতে বলেছেন।’

নিহত ছাত্রের চাচা মুহাম্মদ আরসাদুল হক নিজেকে দীর্ঘ দিনের তৃণমূল সমর্থক বলে পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘আমরা মিছিল করে যাচ্ছিলাম। আমার ভাইপো ইমরান হোসেনও আমাদের সঙ্গে যাচ্ছিল। মিছিলে আচমকা বোমা নিক্ষেপ করে সিপিএম, আইএসএফ-এর লোকেরা।আমরা চাইব প্রশাসন যেন দোষীদের উপযুক্ত সাজা দেয়।’ 

নিহত ইমরানের বাড়ির লোকেদের অভিযোগ, মিছিল করে বাড়ি ফেরার সময় তাকে লক্ষ্য করে আইএসএফ এবং সিপিএম সমর্থকরা বোমা নিক্ষেপ করে। রক্তাক্ত ইমরানকে নিয়ে যাওয়া হয় দেগঙ্গার বিশ্বনাথপুর গ্রামীণ হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।  ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে  পাল্টা আক্রমণ চালায় তৃণমূলও। আইএসএফ এবং সিপিএমের কয়েকজন কর্মীর বাড়িতে ভাঙচুর চলে। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় গাড়ি ও খড়ের গাদা। পরিস্থিতি এতটাই তেতে ওঠে যে এলাকায় নামানো হয় ‘র্যা ফ’। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন  পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। হামলাকারীদের খোঁজে গ্রামজুড়়ে শুরু হয় তল্লাশি অভিযান। রাতেই বেশ কয়েকজন ধরে নিয়ে যায় দেগঙ্গা থানার পুলিশ। আজ (বুধবার)  সকালেও চলে ধরপাকড়। 

ওই ইস্যুতে তৃণমূল নেত্রী কাকলি ঘোষ দস্তিদার এমপি আজ  বলেন, ‘নিন্দা জানানোর ভাষা নেই। আইএসএফ রক্তের হোলি খেলায় নেমেছে। এবং মানুষের জন্য কোনোরকম পরিসেবা না দিয়ে রাজনৈতিক কোনোরকম কর্মকাণ্ড ছাড়া শুধুমাত্র হিংসা করে এই নির্বাচনটাকে বাংলার মানুষকে কলুষিত করার চেষ্টা করছে। একটার পর একটা জায়গায় আইএসএফ বোমা বাঁধছে, মানুষকে হত্যা করছে এবং পায়ে পা লাগিয়ে ঝগড়া করে আমাদের এখানে অশান্তি সৃষ্টি করছে।’

নওশাদ সিদ্দিকি

এ প্রসঙ্গে আজ আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি বলেন, 'তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা বলছেন, এরা বাইরে থেকে লোক নিয়ে আসছে।

তাহলে নিজেরাই যখন এত জানতে পারছে, প্রশাসন দিয়ে আটকাচ্ছে না কেন? আসলে, তারা বোমাবাজি করছে, এলাকা অশান্ত করছে, আর আইএসএফের ছেলেদের দেখে দেখে মিথ্যা মামলা দিচ্ছে' বলেও মন্তব্য করেন আইএসএফ বিধায়ক ও ফুরফুরা শরীফের পীরজাদা নওশাদ সিদ্দিকি। অন্যদিকে, আজ বারাসত পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন,  ‘বোমার আঘাতে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। ইতোমধ্যে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’  #

পার্সটুডে/এমএএইচ/এমআরএইচ/৫  

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।