মণিপুর নিয়ে সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতির দাবিতে বিরোধীদের বিক্ষোভ কর্মসূচি
(last modified Sun, 23 Jul 2023 04:39:55 GMT )
জুলাই ২৩, ২০২৩ ১০:৩৯ Asia/Dhaka
  • সালামি
    সালামি

ভারতে বিজেপিশাসিত মণিপুরে সাম্প্রতিক সহিংস ঘটনা প্রসঙ্গে সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতির দাবিতে আগামীকাল (সোমবার) সংসদ ভবন চত্বরে গান্ধী মূর্তির সামনে বিক্ষোভ করবেন বিরোধী দলীয় জোটের এমপিরা।

আগামীকাল সকাল সাড়ে দশটায় ওই বিক্ষোভ প্রদর্শন হবে। তার আগে আগামীকাল সকাল ১০টায় সংসদের উভয় কক্ষের বিরোধী নেতারা গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসবেন।   সংসদের বর্ষাকালীন অধিবেশনে মণিপুরের সহিংস ঘটনা নিয়ে তোলপাড় চলছেই। ওই ঘটনায় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতির দাবিতে বিরোধীরা অনড় রয়েছেন। এ ব্যাপারে গত (বৃহস্পতিবার) এবং (শুক্রবার) মণিপুর ইস্যুতে হট্টগোলের কারণে সংসদের উভয়কক্ষের (লোকসভা ও রাজ্যসভা) কাজকর্ম ব্যাহত হয়। বিরোধীরা দাবি করেন মণিপুরের পরিস্থিতি বিধি ২৬৭ -এর অধীনে লোকসভা এবং রাজ্যসভায় আলোচনা করতে হবে। কিন্তু সরকার ১৭৬ ধারা অনুযায়ী আলোচনা করতে চায়। এর পাশাপাশি শাসক দলের তরফে জানানো হয়েছে, কেবল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই বিষয়ে সংসদে উত্তর দেবেন। এভাবে শাসক দল ও বিরোধীরা উভয়েই মণিপুর নিয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত হলেও বিষয়টি কার্যত আটকে আছে নিয়মের ওপর।    

১৭৬ বিধির অধীনে এ নিয়ে বিতর্ক হলে স্বল্প সময়ের জন্য প্রায় আড়াই ঘণ্টা আলোচনা হবে। তর্ক-বিতর্কের পর ভোট হয় না, শুধু সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী উত্তর দেন। অন্যদিকে, বিধি ২৬৭-এর অধীনে বিতর্ক হলে সংসদের বাকি কাজ স্থগিত করা হয় এবং শুধুমাত্র একটি বিষয় নিয়ে বিতর্ক হয়। একইসঙ্গে বিতর্ক শেষে ভোটও হয় শেষের দিকে।   

প্রসঙ্গত, গত ৩ মে জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’(এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচি ঘিরে অশান্তির সূত্রপাত হয়েছিল উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিজেপিশাসিত রাজ্যটিতে। মণিপুর হাই কোর্ট ‘মেইতেই’দের তফসিলি উপজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই কুকিসহ বিভিন্ন উপজাতি গোষ্ঠীর সংগঠন তার বিরোধিতায় মাঠে নামে। আর সেই থেকেই সহিংসতার সূত্রপাত হয় সেখানে।

এদিকে, বিজেপিশাসিত মণিপুরে সহিংস ঘটনার মধ্যে সম্প্রতি সেখানকার দু’জন আদিবাসী নারীকে নগ্ন অবস্থায় রাস্তায় ঘোরানো এবং ধর্ষণের অভিযোগে এ পর্যন্ত ৬ অভিযুক্তকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ওই ইস্যুতে দেশজুড়ে ব্যাপক তোলপাড় ও প্রতিবাদ বিক্ষোভের মধ্যে এবার তৃণমূলশাসিত পশ্চিমবঙ্গের মালদহে চুরির অভিযোগে দু’জন মহিলাকে উন্মত্ত জনতা বিবস্ত্র করে মারধর ও জুতোপেটা করেছে বলে  অভিযোগ ওঠায় রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। বিজেপির রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতারা ওই ইস্যুতে রাজ্য সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন। দলটির পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ প্রদর্শনও করা হয়েছে।

বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক বার্তায় বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে আতঙ্ক অব্যাহত। মালদহে দুই আদিবাসী মহিলাকে নগ্ন করে নির্মম ভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। এই ঘটনার সময় পুলিশ ছিল নীরব দর্শকের ভূমিকায়।’  

গতকাল (শনিবার) তৃণমূল নেত্রী ও রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা অবশ্য সাফাইতে বলেছেন, ‘যেই দুই মহিলা চোর ছিলেন, তাদের পাকড়াও করেন যারা, তারাও মহিলা পুলিশকর্মী। তাদের গ্রেফতার করার সময় ধস্তাধস্তি হয়। বেচারারা সবাই গরিব। ধস্তাধস্তিতে কাপড় সরে যায়।’

‘কিন্তু এই ঘটনাকে রাজনীতির চশমায় কেন দেখা হচ্ছে? পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা সিভিক ভলান্টিয়ারেরা এগিয়ে যান। কিন্তু মহিলারা নিজের হাতে আইন তুলে নেন। এটাও তো ঠিক নয়। যাই হোক, অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করছে’বলেও মন্তব্য করেন মন্ত্রী শশী পাঁজা।#       

পার্সটুডে/এমএএইচ/এসএ/২৩

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।