ভারতে আগামীকাল অনুষ্ঠিত হবে ৬ রাজ্যের ৭টি বিধানসভা আসনে উপনির্বাচন
ভারতে আগামীকাল (মঙ্গলবার) ৬টি রাজ্যের ৭টি বিধানসভা আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল (রোববার) এ সব আসনের উপনির্বাচনের প্রচারণা শেষ হয়েছে।
আগামী বছর ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া লোকসভা নির্বাচন এবং চলতি বছরের শেষে পাঁচটি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের আগে আগামীকাল মঙ্গলবার ৬টি রাজ্যের ৭টি বিধানসভা আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
পশ্চিমবঙ্গের ধূপগুড়ি বিধানসভা আসন, ত্রিপুরার ধনপুর ও বক্সানগর আসন, কেরালার পুদুপল্লি, ঝাড়খণ্ডের ডুমরি, উত্তরাখণ্ডের বাগেশ্বর আসন এবং উত্তর প্রদেশের বহুলালোচিত ঘোসি আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, এই সব আসনে ভোটগ্রহণের দু’দিন পর ৮ সেপ্টেম্বর ভোট গণনা করা হবে।
পশ্চিমবঙ্গের ধূপগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হতে চলেছে। বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপদ রায়ের মৃত্যুতে এই আসনটি শূন্য হয়েছিল। এই আসন থেকে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের প্রার্থী নির্মল চন্দ্র রায়। অন্যদিকে, বিজেপি এখান থেকে প্রার্থী করেছে তাপসী রায়কে। যেখানে মার্কসবাদী কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিআই-এম) প্রার্থী ঈশ্বরচন্দ্র রায়।
গতকাল (রোববার) ছিল ধূপগুড়িতে শেষ দিনের নির্বাচনী প্রচার। সেই প্রচারে ঝড় তোলে সব পক্ষই। এক দিকে গেরুয়া শিবিরের হয়ে হাজির ছিলেন, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী থেকে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। অন্যদিকে, তৃণমূলের পক্ষ থেকে প্রচারে ঝড় তুলতে উপস্থিত ছিলেন ফিরহাদ হাকিম, মিমি চক্রবর্তীরা।
তৃণমূল শিবিরের দাবি, ধূপগুড়ি পুনর্দখল এখন কেবল সময়ের অপেক্ষা মাত্র। বিজেপি নেতাদের দাবি, ব্যবধান কতটা বাড়বে তা নিয়েই এখন আলোচনা চলছে। মাটি আঁকড়ে পড়ে রয়েছেন কংগ্রেস সমর্থিত বামফ্রন্ট প্রার্থী ঈশ্বরচন্দ্র রায়ও। তিনিও হিসাব বদলের কথা ভাবছেন।
বিজেপিশাসিত ত্রিপুরার ধনপুর ও বক্সানগর আসনে উপনির্বাচন হবে।এখানে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি-মার্কসবাদী (সিপিআইএম) এবং বিজেপির মধ্যে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে। কারণ রাজ্যের আঞ্চলিক দল তিপ্রা মোথা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার ঘোষণা দিয়েছে।
সিপিআইএম বিধায়ক সামসুল হকের মৃত্যুর পর ত্রিপুরার বক্সানগর বিধানসভা আসনটি শূন্য হয়। অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ায় ধানপুর বিধানসভা আসনটি শূন্য হয়েছিল। কংগ্রেস দল ত্রিপুরার উপনির্বাচনে প্রার্থী না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল। অন্যদিকে, সিপিআইএম নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্টের কৌশিক চন্দ ধনপুর আসন থেকে এবং মিজান হুসেন বক্সানগর বিধানসভা আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য বিজেপি বক্সানগর থেকে তোফাজ্জুল হুসেন এবং ধনপুর থেকে বিন্দু দেবনাথকে প্রার্থী করেছে।
কেরালার পুদুপল্লী বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনের জন্য তিন দলের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। এখানে ক্ষমতাসীন বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট (এলডিএফ), কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউডিএফ) এবং বিজেপি এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। প্রবীণ কংগ্রেস নেতা ও সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমেন চান্ডির মৃত্যুতে পুদুপল্লি আসনটি শূন্য হয়। এই আসনে কংগ্রেস উপনির্বাচনে প্রার্থী হিসাবে ওমেন চান্ডির ছেলে চন্ডি ওমেনকে প্রার্থী করেছে। অন্যদিকে, আর রাজগোপাল এখান থেকে বিজেপির প্রার্থী। সিপিআইএম প্রার্থী হয়েছেন জ্যাক সি থমাস।
ঝাড়খণ্ডের ডুমরি বিধানসভা আসনটি সাবেক শিক্ষামন্ত্রী জগরনাথ মাহতোর মৃত্যুতে শূন্য হয়েছে। এবার এই আসনে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন ‘এনডিএ’ ও বিরোধীদের নবগঠিত জোট ‘ইন্ডিয়া’র মধ্যে। এই বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনে, সাবেক শিক্ষামন্ত্রীর স্ত্রী বেবী দেবী ‘ইন্ডিয়া’ জোট প্রার্থী হয়েছেন। অন্যদিকে, যশোদা দেবী বিজেপি নেতৃত্বাধীন ‘এনডিএ’ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
উত্তর প্রদেশের ঘোসি বিধানসভা আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে বিজেপি বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ জোট এবং বিজেপি নেতৃত্বাধীন ‘এনডিএ’ জোটের মধ্যে। এখানে, বিজেপি এবং এসপি ছাড়া অন্য কোনও দল প্রার্থী দেয়নি। এখানে কংগ্রেস, বামফ্রন্ট ও ‘আপ’ এসপিকে সমর্থন করছে। অন্যদিকে, ‘বিএসপি’ও ঘোসি আসনে প্রার্থী দেননি। এসপি বিধায়ক দারা সিং চৌহানের পদত্যাগের পর এই আসনটি শূন্য হয়েছিল। এরপর বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন দারা সিং। অন্যদিকে, এই আসনে বিজেপি ও তার বিদ্রোহী নেতা দারা সিং চৌহানের বিরুদ্ধে সুধাকর সিংকে প্রার্থী করেছে এসপি।
উত্তরাখণ্ডের বাগেশ্বর বিধানসভা আসনটি সাবেক মন্ত্রী বিধায়ক চন্দন রামদাসের মৃত্যুতে শূন্য হয়েছিল। বিজেপি এখান থেকে প্রয়াত চন্দন রামদাসের স্ত্রী পার্বতী দাসকে প্রার্থী করেছে। যেখানে কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার পর এখান থেকে প্রার্থী করা হয়েছে আম আদমি পার্টির সাবেক নেতা বসন্ত কুমারকে। এই আসনে কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে। যদিও প্রয়াত বিজেপি নেতা টানা চারবার এখান থেকে বিধায়ক ছিলেন।#