বাবরী মসজিদ ধ্বংসের দিনে 'সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী দিবস' পালন করছে মুসলিমরা
ভারতের ঐতিহাসিক বাবরী মসজিদ ধ্বংসের ২৪তম বার্ষিকী পালিত হচ্ছে। ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় করসেবক নামধারী উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা প্রকাশ্য দিবালোকে বাবরী মসজিদ ধ্বংস করে।
৬ ডিসেম্বরের কথা মাথায় রেখে অযোধ্যাসহ গোটা এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোর করা হয়েছে। সিনিয়র পুলিশ সুপার অনন্ত দেব বলেছেন, অযোধ্যা এবং ফৈজাবাদে বিশেষ তল্লাশি অভিযান চালানো হচ্ছে। যানবাহন ছাড়াও হোটেল, ধর্মশালা, বাস স্ট্যান্ড এবং রেলওয়ে স্টেশনে বিশেষ তদন্ত অভিযানও চালানো হচ্ছে। স্পর্শকাতর এলাকায় প্রচুর সংখ্যায় নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। কর্মকর্তারা নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে গতকাল সোমবার বিশেষ বৈঠকে বসেন।
আজ বিশ্ব হিন্দু পরিষদের পক্ষ থেকে করসেবকপুরমে শৌর্য দিবস পালন করার কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। অন্যদিকে, টেডিবাজারে মুসলিম সংগঠনের পক্ষ থেকে কালা দিবস পালনের কর্মসূচি নেয়া হয়েছে।
হিন্দু জাগরণ মঞ্চের প্রদেশ সভাপতি আজ্জু চৌহান বলেন, ‘হিন্দুদের জন্য ৬ ডিসেম্বর গর্বের দিন। কোঠি মীনাবাজারের কাছে দুপুর ২ টায় পুজো, যজ্ঞ, আতশবাজি এবং মিষ্টি বিতরণ করা হবে।’
বজরং দলের মহানগর আহ্বায়ক বান্টি ঠাকুর বলেন, মহানগরে মোটর সাইকেল মিছিলসহ আতশবাজি পোড়ানো হবে।
রাষ্ট্রীয় সর্বদলীয় মুসলিম অ্যাকশন কমিটির আদনান কুরেশি বলেন, কালো দিবস পালন করে সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো হবে। মসজিদ পুনর্নির্মাণের দাবিতে প্রেসিডেন্টের উদ্দেশ্যে দেয়া স্মারকলিপি জেলা প্রশাসকের হাতে তুলে দেয়া হবে।
ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লিগের পক্ষ থেকে গান্ধী পার্কে ধর্না-বিক্ষোভ প্রদর্শন করে পুনরায় বাবরী মসজিদ নির্মাণের দাবি জানানোসহ রাষ্ট্রপতির উদ্দেশ্যে স্মারকলিপি দেয়া হবে।
পশ্চিমবঙ্গে সারা বাংলা সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, বাবরী মসজিদ ধ্বংসের দিনটি ‘সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী দিবস’ হিসেবে পালন করা হচ্ছে। আজ বিকেলে পশ্চিমবঙ্গের দেগঙ্গার বেলিয়াঘাটাতে এ উপলক্ষে এক সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন ৬ ডিসেম্বরের দিনটি ‘সংহতি দিবস’ হিসেবে পালন করা হচ্ছে। তিনি ভারতে বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য রক্ষার ওপর জোর দিয়েছেন।
সিপিআইএম নেতা ও সংসদ সদস্য সীতারাম ইয়েচুরি এক বার্তায় বলেছেন, বাবরী মসজিদ ধ্বংসের ঘটনা ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক কাঠামোর ওপর সবচেয়ে বড় আঘাত। আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে যাতে এ ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়।#
পার্সটুডে/এমএএইচ/এআর/৬