তাজমহল মন্দির নয়, সমাধিসৌধ: ভারতের প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগ
-
আগ্রার ঐতিহাসিক তাজমহল
ভারত সরকার ও কেন্দ্রীয় প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ বিভাগের পক্ষ থেকে আগ্রার ঐতিহাসিক তাজমহলকে ‘সমাধিসৌধ’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তাজমহল নিয়ে বিতর্ককে কেন্দ্র করে আদালতে জবাব দাখিল করে বলা হয়েছে, তাজমহল মন্দির নয় বরং এটি সম্রাট শাহজাহান কর্তৃক তার স্ত্রী বেগম মমতাজ মহলের স্মৃতিতে গড়া সমাধিসৌধ।
গত ২০১৫ সালে আগ্রা সিটি সিভিল কোর্টে তাজমহলকে ‘শিব মন্দির’ বলে দাবি করে আরএসএসপন্থি ছয় আইনজীবী মামলা দায়ের করেন। তাদের দাবি, তাজমহলকে হিন্দু মন্দির ঘোষণা করতে হবে এবং সেখানে হিন্দুদের পুজো করার অনুমতি দিতে হবে।
আগ্রার শিবসেনা প্রধান বিনু লাওয়ানিয়ার দাবি, তাজমহল আসলে তেজোমহালয়া মন্দির।
আগ্রার জেলা আদালতে আবেদনকারীদের আবেদন গৃহীত হয়। নিম্ন আদালত এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে নোটিস পাঠিয়েছিল। এছাড়া কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্রসচিব এবং আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়াকে (এএসআই) নোটিশ পাঠানো হয়। এ ব্যাপারে তারা কী বলতে চায় তা জানতে চাওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার আদালতকে এ নিয়ে কেন্দ্রীয় সংস্থা এএসআই তাদের জবাব দেয়।

এর আগে ২০১৫ সালের নভেম্বরে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতিমন্ত্রী মহেশ শর্মা সংসদে জানিয়েছিলেন, তাজমহলে কোনও মন্দিরের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কিন্তু হিন্দুত্ববাদীদের একাংশ তাজমহলকে ‘তেজোমহালয়া মন্দির’ বলে প্রচারণা চালিয়ে বিশ্ববিখ্যাত স্মৃতিসৌধটিকে বিতর্কিত করে তুলতে চান। এভাবে ঐতিহাসিক বাবরী মসজিদ নিয়ে প্রচারণা চালিয়ে তাকে বিতর্কিত করে তোলা হয়।
ভারতের মুঘল বাদশাহ শাহজাহান তার স্ত্রী আরজুমান্দ বানুর (যিনি ‘মমতাজ মহল’ নামে পরিচিত ছিলেন) মৃত্যুর পর স্মৃতির উদ্দেশ্যে এটি তৈরি করেন। বিশ্বখ্যাত স্মৃতি সৌধটি ১৬৩২ খ্রিস্টাব্দে নির্মাণ শুরু হয় এবং ১৬৪৮ খ্রিস্টাব্দে তা শেষ হয়। জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা ইউনেসকোর পক্ষ থেকে ১৯৮৩ সালে তাজমহলকে ‘বিশ্ব ঐতিহ্য’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করে।#
পার্সটুডে/এমএএইচ/এআর/২৫