অযোধ্যায় ইস্যুতে আপোশ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান, 'তৈরি করতে হবে মসজিদই'
ভারতের উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় বাবরী মসজিদ-রাম মন্দির বিতর্ক ইস্যুতে আপোশ-মীমাংসা প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন মুসলিম নেতারা। বিতর্কিত স্থানে কেবল মসজিদই নির্মাণ করতে হবে বলে মুসলিম নেতাদের এক বৈঠকে গতকাল (শনিবার) এক প্রস্তাব পাস করা হয়েছে।
বাবরী মসজিদ ইস্যুতে প্রধান বাদী হাজী মাহবুবের বাসভবনে হওয়া ওই বৈঠকে অযোধ্যা এলাকার বিভিন্ন মসজিদের ইমাম ও বিশিষ্ট মুসলিম নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে পাস হওয়া প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বিতর্কিত স্থানে কেবল মসজিদই ছিল যা মন্দির ভেঙে তৈরি করা হয়নি। মসজিদ আল্লাহর আমানত। কাউকে তা দেয়া যায় না। সুতরাং মসজিদ ওই স্থানেই তৈরি হবে।
মুসলিম নেতাদের বৈঠক শেষে বাবরী মসজিদ মামলার বাদী মরহুম হাশিম আনসারির ছেলে ইকবাল আনসারি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘অযোধ্যার মুসলিমদের দাবি, যেখানে বাবরী মসজিদ ছিল, সেখানেই তা তৈরি করা হোক। এই ইস্যুতে মুসলিম সমাজের সকলকে ডাকা হয়েছিল।’
তিনি বলেন, বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, ওই ইস্যুতে কোনো সমঝোতা মানা হবে না। মসজিদ ওই স্থান ছাড়া অন্য কোনো স্থানে নির্মাণ হতে পারে না। এ ব্যাপারে আদালতে যে রায় দেয়া হবে তা মেনে নেয়া হবে।
'অপপ্রচারের জবাব খুব সুন্দরভাবে দেয়া হয়েছে'
এ প্রসঙ্গে আজ (রোববার) অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ডের সিনিয়র সদস্য ডা. রইসউদ্দিন রেডিও তেহরানকে বলেন, ‘অযোধ্যায় ওই প্রস্তাব পাসের গুরুত্ব এজন্য রয়েছে যে গণমাধ্যমের একাংশে প্রচার করা হচ্ছিল, সুন্নী ওয়াকফ বোর্ড ও অন্যরা আদালতের বাইরে মীমাংসার পক্ষে আছে। সেই দৃষ্টিতে তাদের সেই অপপ্রচারের জবাব খুব সুন্দরভাবে দেয়া হয়েছে।’
আদালতের বাইরে আলোচনার প্রস্তাব সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমরা বরাবরই আদালতের ওপরে আস্থা রেখেছি। অন্যদের কাছে যদি এ ব্যাপারে কোনো রেকর্ড থাকে, ঐতিহাসিক বা প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ থাকলে আদালতের বিচারের জন্য তাদের অপেক্ষায় থাকা উচিত। আদালত যে রায় দেবে তা তারা মেনে নিক। কিন্তু আদালতের বাইরে মীমাংসার চেষ্টা কেন? এটা আমরা কোনো দিনই চাইনি।’
ভারতে 'আধ্যাত্মিক গুরু' নামে পরিচিত শ্রী শ্রী রবিশঙ্কর বাবরী মসজিদ-রাম মন্দির বিতর্ক নিষ্পত্তির লক্ষ্যে সম্প্রতি মুসলিম ও হিন্দু নেতাদের একাংশের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। মুসলিমরা যাতে ওই স্থানের দাবি থেকে সরে আসে এবং সেখানে যাতে রাম মন্দির নির্মাণ সহজ হয় সেজন্য বিভিন্ন মহল থেকে চেষ্টাও চালানো হচ্ছে।
কিন্তু হায়দ্রাবাদে অনুষ্ঠিত হওয়া সম্প্রতি মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ডের বৈঠকে সাফ বলা হয়েছে, কোনো মসজিদকে গায়রুল্লাহ'র এবাদতের জন্য দেয়া নিষিদ্ধ। শরীয়ায় এ ধরণের কোনো সুযোগ নেই। মসজিদের জমি কাউকে দেয়া যায় না, উপহার দেয়ারও নিয়ম নেই। একবার কোনো জমিতে মসজিদ নির্মিত হলে তা আল্লাহর হয়ে যায়। ১৯৯০ সালের ডিসেম্বর ও ১৯৯৩-এর জানুয়ারিতেও ল’ বোর্ডের অবস্থান একইরকম ছিল। তারা আগেকার ওই সিদ্ধান্তেই অটল রয়েছেন।#
পার্সটুডে/এমএএইচ/এআর/১৮